logo
আপডেট : ১৯ এপ্রিল, ২০২২ ২১:৫৬
দু-একদিনের মধ্যে যানজট নিয়ন্ত্রণে আসবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক

দু-একদিনের মধ্যে যানজট নিয়ন্ত্রণে আসবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা কমিটির বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, রাজধানীর অসহনীয় যানজট নিরসনে আগামী দিনগুলোর জন্য বিশেষ কর্মপদ্ধতি নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী দু-একদিনের মধ্যে ঢাকার যানজট কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ৬০ লাখ শ্রমিক ঢাকা ছাড়বে।

মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা কমিটির বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন তিনি।

বৈঠকে আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থতি পর্যালোচনা, গার্মেন্ট শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ, সড়ক-মহাসড়ক নিরাপদ ও যানজটমুক্ত রাখাসহ প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ঢাকার যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী, পুলিশ বিভাগ যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। আগামী সাত দিনে তারা কী করবে, এর একটি কর্মপদ্ধতিও বের করেছে। আশা করি, দু-একদিনের মধ্যে যানজট কিছুটা নিয়ন্ত্রণ হবে।

তিনি বলেন, ঢাকা শহরের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ হচ্ছে। এসব উন্নয়নকাজের কারণে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। অন্যদিকে করোনার প্রাদুর্ভাব কমে যাওয়ায় মানুষের যাতায়াত বহুলাংশে বেড়েছে। অনেকে মার্কেটে শপিং করতে যাচ্ছে। এ কারণে ঢাকা শহরের যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বিপুলসংখ্যক লোক ঢাকা ছাড়বে। এতে বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে যানজট লাগার সম্ভাবনা রয়েছে। বাস-লঞ্চ ট্রেন স্টিমারে যেন অতিরিক্ত যাত্রী না নেওয়া হয় সে ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পদক্ষেপ নিচ্ছে।

এসব যানবাহনে যাতে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় না হয়, সে ব্যাপারেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নজরদারি করবে।

তিনি বলেন, অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি এড়াতে আমাদের বড় বড় শিল্পগুলো একসঙ্গে শ্রমিকদের ছুটি না দিয়ে পর্যায়ক্রমে কীভাবে দেওয়া যায়, সে বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অনুরোধ করছি। ছুটি একসঙ্গে দেওয়া হলে প্রায় ৬০ লাখ মানুষ ঢাকা ত্যাগ করবে। এরা শুধু শ্রমিক, এর সঙ্গে অন্য মানুষ তো আছেই। কাজেই বড়োসড়ো যানজট সৃষ্টির আশঙ্কা আছে। পর্যায়ক্রমে ছুটিগুলো দিলে যানজট কিছু নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গার্মেন্ট শিল্প-কারখানা কবে ছুটি হবে, তা শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, বিজিএমইএ বিকেএমইএ এবং শিল্প পুলিশের সমন্বয় একটি সভা করে সিদ্ধান্ত নেবে। বেতন-ভাতাদি পরিশোধ, বিদেশি অর্ডার সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে গার্মেন্টশিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, ঈদের সময় দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রোধে পোশাকধারী পুলিশ সদস্যসহ গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও কাজ করছে। বিশেষ বিশেষ রাস্তা ও মোড়ে চেকপোস্ট স্থাপন এবং জাল টাকার বিস্তার রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, সড়ক-মহাসড়কে যাতে যানজট সৃষ্টি না হয়, সেজন্য ২৫ এপ্রিলের মধ্যে সব ধরনের রাস্তা যান চলাচলের উপযোগী করার জন্য সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

তিনি বলেন, বাস ট্রেন লঞ্চ স্টিমার যাত্রীরা যাতে কোনো ছিনতাই, ডাকাতি, রাহাজানি বা মলম পার্টির খপ্পরে না পড়ে, সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ বিষয়ে তৎপর থাকবে। সড়ক-মহাসড়কে নসিমন, করিমন এবং ব্যাটারিচালিত কোনো যানবাহন চলাচল করতে দেওয়া হবে না। এছাড়া ঈদুল ফিতরের ছুটিতে কূটনৈতিক পাড়াসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থান এবং দেশের সব বন্দরেও পুলিশের টহল জোরদার থাকবে।

রাজধানীর বিভিন্ন অলিগলিতে ব্যাটারি চালিত যানবাহন চলাচল করে এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, করোনার সময় কিছুটা শিথিল করা হয়েছিল, তবে এ ব্যাপারে পুলিশ কমিশনার পদক্ষেপ নেবেন।

রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ঢাকা কলেজের ছাত্র ও নিউমার্কেটে ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রথমে তর্কাতর্কি এবং পরে মারামারির বিষয়টি সহিংসতায় রূপ নেয়। পুলিশ চরম ধৈর্যের সঙ্গে বিষয়টি মোকাবিলা করে। সহিংস ঘটনায় সাংবাদিকসহ অনেকেই আহত হয়েছেন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।