আসছে মধুমাস। তাই আমের রাজধানীখ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জে বৈশাখ মাসে সবুজ পাতার ফাঁকে দুলছে আমচাষিদের স্বপ্ন। চাষিরা আছেন আম পাকার অপেক্ষায়। বাজারে বিক্রি করে লাভের মুখ দেখতে চান তারা।
তবে এ আশায় না থেকে বারোমাসি আম চাষের প্রতি ঝুঁকছেন আমচাষিরা।
শিবগঞ্জ পৌর ধাইনগর ইউনিয়নের মদ্দানা এলাকায় এনামুল ইসলাম স্বপন নামে এক ব্যক্তি গত তিন মাসে ১৭ লাখ টাকার বারোমাসি আম বিক্রি করেছেন।
আর আশা করছেন সামনে ছয় থেকে আট মাসের মধ্যে প্রায় আরো এক কোটি টাকার আম বিক্রি করবেন তিনি। এখনো তার বাগানে মিলছে বিভিন্ন জাতের সুস্বাদু আম।
সরেজমিনে দেখা যায়, ৩৫ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে বারোমাসি আমের বাগান গড়ে তুলেছেন স্বপন। আর এলাকার বেকার যুবকরা এই বাগান দেখে উৎসাহিত হচ্ছেন। তা ছাড়া এই গ্রামের শ্রমিকরা এখানে নিয়মিত কাজ করছেন। এতে কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে।
এনামুল ইসলাম স্বপন বলেন, ‘গত চার বছর ধরে আমি বারোমাসি আমের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এর আগে ভালো লাভ না হলেও এবার আমের দাম ভালো হওয়ায় লাভ হয়েছে। গত তিন মাসে প্রায় ১৭ লাখ টাকার আম বিক্রি করেছি। আর আশা করছি সামনে ছয় থেকে আট মাসে প্রায় এক কোটি টাকার আম বিক্রি করব।’
তিনি আরো বলেন, ‘এখনো আমার বাগানে পাকা আম আছে। এগুলো ৪৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। আমার বাগানে কাটিমন, বারি-১১, ফিলিপাইন সুপার, ক্ষীরসাপাতসহ প্রায় ১০ ধরনের সুস্বাদু আম আছে।’
স্বপনের বাগানের হামিদ নামে এক শ্রমিক বলেন, ‘আমি গত তিন বছর থেকে এখানে কাজ করি। আমাকে দিনে ৩শ টাকা মজুরি দেওয়া হয়। তা দিয়েই চলে আমার সংসার। এ বাগানে সারা বছরই সুস্বাদু আম পাওয়া যায়। সেগুলো কার্টন করে দেশের বিভিন্নস্থানে পাঠিয়ে দেই।’
রিপন আলী নামে এক কলেজছাত্র বলেন, ‘রোজার প্রথম দিকে জানতে পারি স্বপন ভাইয়ের বাগানে সুস্বাদু আম পাওয়া যাচ্ছে। তাই ইফতারিতে খাওয়ার জন্য দুই কেজি পাকা আম কিনতে এসেছি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরে মৌসুমি আমে লোকসান হওয়ায় বারোমাসি আম চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা। এতে বেশ স্বাবলম্বী হয়েছেন অনেকে। এ জেলায় এখন পর্যন্ত প্রায় একশ হেক্টর জমিতে বারোমাসি আমবাগান রয়েছে। আর দিন দিন এ বারোমাসি আমের চাষ আরো বাড়ছে।’