logo
আপডেট : ২০ এপ্রিল, ২০২২ ১২:২৫
ধমকা হাওয়া-শিলাবৃষ্টিতে কপাল পুড়ল কৃষকের
শাকিল মুরাদ, শেরপুর

ধমকা হাওয়া-শিলাবৃষ্টিতে কপাল পুড়ল কৃষকের

শেরপুরে দমকা হাওয়া ও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত একজন কৃষক তার ক্ষেতে বসে আছেন

শেরপুরে শিলাবৃষ্টিতে বোরো আবাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জেলা সদরসহ ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলায় ক্ষতির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কয়েক হাজার কৃষক। গতকাল মঙ্গলবার ভোররাতে ধমকা হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টি শুরু হয়।

এতে বোরো আবাদ, শাকসবজি ও গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, জেলায় প্রায় ১০০ হেক্টর জমির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, ধান কাটা ও ঘরে তোলার মৌসুমের শুরুর দিকে ধমকা হাওয়া ও শিলাবৃষ্টিতে সহস্রাধিক কৃষক বেকায়দায় পড়েছেন। নিচু এলাকায় বৃষ্টিতে ধানগাছ নুয়ে পড়ে তলিয়ে গেছে; শিলার আঘাতে ঝরে গেছে ধান।

সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে সদর, শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতী উপজেলার উপজেলায়। বিশেষ কওে শ্রীবরদী উপজেলার মাটিয়াকুড়া, গিলাগাছা, কুরুয়া, ধাতুয়া, শেখদি ও কুড়িকাহনিয়াসহ কয়েকটি এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানান, করোনার কারণে এমনিতেই কয়েক বছর ধরে নানা কারণে ধান আবাদে লোকসান লেগেই আছে। এর মধ্যে শিলাবৃষ্টিতে যে ক্ষতি হয়েছে তা পোষানো সম্ভব নয়।

সদর উপজেলার চরশেরপুরের কৃষক আব্দুল জলিল বলেন, আমার এক একর জমির ধান ভোরে শিলা পড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। খুব দুশ্চিন্তায় আছি।

শ্রীবরদী উপজেলার খড়িয়া কাজিরচর ইউনিয়নের ঝিনিয়া গ্রামের কৃষক মফিল উদ্দিন বলেন, ‘ঋণ করে চার একর জমিতে বোরো আবাদ করেছি। এক রাতেই সব শেষ আমার। সব ধান পড়ে গেছে, এখন বউ পুলাপাইন নিয়ে কী খামু, চিন্তাই আছি।’

একই গ্রামের কৃষক জুলহাস আলী বলেন, আমি ১০ কাঠা জমিতে আবাদ করি। এতে আমার পুরো বছরের খাওন চলে। আজ ভোরে সব ধান শিলায় নষ্ট হয়ে গেছে।

ওই ইউনিয়নের লংগরপাড়া গ্রামের কৃষক চাঁন মিয়া বলেন, সাহরির পরপরই হিল (শিলা) পড়ে আমার এক কুর (একর) জমির সব ধান পইড়া (নষ্ট) গেছে। এহন (এখন) বউ বাচ্চা নিয়ে কী খামু।

খড়িয়ার উলুকান্দা গ্রামের কৃষক সেলিম মিয়ার ১০ কাঠা, জয়নাল আবেদীনের দেড় একর, মোশাররফ হোসেনের ১৫ কাঠা, সাগর আলীর দুই একর, মুহাম্মদ আলীর এক একর জমির ধান নষ্ট হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা সরকারের সহযোগিতার দাবি করে বলেন, ‘আমাদের জন্য সরকার কিছু একটা ব্যবস্থা না করলে চলা মুশকিল হয়ে পড়বে। তাই আমরা সরকারের সহযোগিতা চাচ্ছি।’

জেলা কৃষি বিভাগের উপপরিচালক ড. মোহিত কুমার দে বলেন, ভোররাতের শিলাবৃষ্টিতে শেরপুরে বোরো আবাদের ক্ষতি হয়েছে। এতে প্রায় ১০০ হেক্টর জমির ধান নষ্ট হয়ে গেছে।