রাজশাহীর পবা উপজেলায় কোল্ডস্টোরেজে কৃষকের রাখা ১ লাখ ৬৫ হাজার বস্তা আলু পচে গেছে। যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ২০ কোটি টাকা। এতে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন শত শত কৃষক। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের অভিযোগ, কোল্ডস্টোরেজ কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনায় এত আলু পচেছে।
উপজেলার নওহাটার বায়া এলাকার ‘আমান কোল্ডস্টোরে’ এমটি ঘটেছে। এতে নষ্ট হয়ে গেছে শত শত কৃষক পরিবারের স্বপ্ন।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, সকালে স্টোরেজের ভেতরে আলু রক্ষণাবেক্ষণ করতে গেলে কৃষকদের চোখে পড়ে আলুর পচনের বিষয়টি নজরে আসে। ব্যাংক লোন ও বিভিন্ন এনজিও প্রতিষ্ঠান থেকে কিস্তি নিয়ে আলুর চাষাবাদ করেছিলেন তারা। স্টোরেজের তাপমাত্রা যেমন থাকার কথা ছিল সেটি ছিল না।
এ ছাড়া ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি আলু রাখায় আলু পচে নষ্ট হয়েছে। এ ঘটনায় উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
তারা আরো জানান, স্টোরের গ্যাস মেশিন খারাপ থাকার পরও লাখ লাখ বস্তা আলু লোড করা হয়েছে। ফলে স্বল্প গ্যাসের কারণে আলুগুলো এখন পচে গেছে। এতে প্রায় নব্বই ভাগ আলু পচে গেছে। যেগুলো পচতে বাকি আছে সেগুলোও বাজারমূল্য পাওয়া যাবে না।
সরেজমিনে ওই কোল্ডস্টোরেজে গিয়ে দেখা যায়, পচে দুর্গন্ধ ছড়িয়েছে শত শত কৃষকের কষ্টের ফসল আলু। এ নিয়ে বুধবার সকাল থেকে কয়েকশ আলু চাষি স্টোরের সামনে অবস্থান নিয়ে আছেন। তারা ক্ষতিপূরণের দাবি করছেন। অন্যদিকে পচা আলুগুলো বাইরে ফেলে দিচ্ছে স্টোর কর্তৃপক্ষ।
আলু ব্যবসায়ী কামরুল হাসান বলেন, ‘কয়েকদিন আগে আমি ৭ হাজার বস্তা আলু রেখেছিলাম। এখন জানতে পারছি আমার সব আলু পচে গেছে। এতে আমার অনেক টাকার লোকসান হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘এক বস্তা আলুর খরচ পড়েছে এবার ১২০০ টাকা করে। সেই হিসেবে সাত হাজার বস্তা আলুর দাম পড়েছে ৮৪ লাখ টাকা। আলু বিক্রি করে অন্তত এক কোটি টাকা দাম পাওয়া যেত।’
এ বিষয়ে স্টোরেজ কর্তৃপক্ষ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে চাননি। তবে স্টোরেজের অংশীদার মো. তৌফিকুল ইসলাম বিপ্লব কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিয়েছেন। ঈদের পর এ নিয়ে আবারো মুখোমুখি আলোচনায় বসা হবে বলে স্টোরেজের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।