logo
আপডেট : ২১ এপ্রিল, ২০২২ ১১:৪৬
কমছে না ডায়রিয়ার প্রকোপ
পুলক পুরকায়স্থ, মৌলভীবাজার

কমছে না ডায়রিয়ার প্রকোপ

মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের সেবা দিচ্ছেন নার্স

মৌলভীবাজারে কমছে না ডায়রিয়ার প্রকোপ। প্রতিদিনই বাড়ছে ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলাটিতে নতুন করে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪৬ জন।

গতকাল বুধবার জেলা সিভিল সার্জন অফিসের দৈনিক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ৪৬ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ১০ জন, রাজনগরে একজন, কুলাউড়ায় ১১ জন, বড়লেখায় চারজন, কমলগঞ্জে ১২ জন, শ্রীমঙ্গলে ছয়জন ও জুড়ি উপজেলায় দুজন। এ সময়ের মধ্যে জেলায় সুস্থ হয়েছেন ৩০ জন।

গত ১৩ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত এই আট দিনে মৌলভীবাজারে ২৬৯ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। আর সবশেষ সাড়ে তিন মাসে জেলায় ৫ হাজার ৪২ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন।

চিকিৎসকরা বলছেন, হঠাৎ করে গরম পড়ায় শিশুসহ সব বয়সিরা নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। গরমে পানির স্তর নিচে নামা, নদীনালার দূষিত পানি পান করাসহ নানাবিধ সমস্যার কারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ছে। এ সময়ে পানি ফুটিয়ে খাওয়ানো, স্যালাইন অথবা বেশি করে তরল জাতীয় খাবার খাওয়ানো এবং সহজে হজম হয় সেই খাবারই খাওয়ানোর জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।

ডায়রিয়া আক্রান্ত একমাত্র ছেলেকে নিয়ে সদর হাসপাতালে এসেছেন রাজনগরের সম্পা দেব। তিনি উদ্বিগ্ন কণ্ঠে বলেন, ‘আমার বাচ্চার তিনদিন থেকে পাতলা পায়খানা। স্থানীয় ডাক্তার দেখিয়েছি, কোনো কাজ হয়নি। পরে হাসপাতালে আসি, এখন বাচ্চাটি ভালো আছে।’

শ্রীমঙ্গল থেকে আসা রিতা বেগম বলেন, ‘বাচ্চার ডায়রিয়া হওয়ার পর ফার্মেসি থেকে কিনে ওষুধ খাইয়েছি। এরপর অবিরত বমি হতে থাকলে হাসপাতালে আসি। এখন বাচ্চা ভালো আছে।’

কমলগঞ্জের মৃত্তিঙ্গা চা বাগান থেকে আসা অনিল গড় বলেন, ‘চার দিন আগে থেকে আমার ছয় বছরের শিশুর বমি শুরু হয়। এরপর দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসি। এসে জানলাম ডায়রিয়া। এখন চিকিৎসা চলছে।’

সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স কল্পনা দত্ত বলেন, ‘হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও শিশু রোগ বিশেষজ্ঞরা ডায়রিয়া ওয়ার্ডে এসে পরিদর্শন করে গেছেন। গরমের কারণে পুরুষ, নারী ও শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছেন। আমরা সব ধরনের সেবা তাদের দিচ্ছি।’

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ড. কেএম হুমায়ুন কবির বলেন, ‘সারাদেশের ন্যায় মৌলভীবাজারে ডায়রিয়া প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাইরের খাবার খাওয়া ও দূষিত পানি পানের কারণে ডায়রিয়া বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ বিষয় নিয়ে সিভিল সার্জনের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের পর্যাপ্ত ওষুধ ও স্যালাইন মজুদ রয়েছে। আমরা সব ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় সক্ষম।’

জেলা সিভিল সার্জন ডা. চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ বলেন, ‘পুকুর নদীনালার দূষিত পানি পান করায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ সময় সব ধরনের পানি ফুটিয়ে পান করা উচিত। তবে পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত স্বাভাবিক আছে।’