রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা ও ব্যবসায়ী-কর্মচারীদের সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে দুটি মামলা করেছে। এর মধ্যে একটি মামলা বিস্ফোরক আইনে এবং অন্যটি পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে করা হয়েছে। দুই মামলায় নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ী-কর্মচারী ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীসহ মোট ১২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে করা মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় দেড়শ থেকে দুইশজনকে আসামি করা হয়েছে। দুটি মামলার বাদি- নিউমার্কেট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মেহেদী হাসান ও পরিদর্শক (তদন্ত) ইয়ামিন কবির।
বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) সকালে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ ম কাইয়ুম। তিনি জানান, গতকাল বুধবার রাতে দুটি মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।
ওসি কাইয়ুম বলেন, ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ী-কর্মচারীদের সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে করা মামলায় ২৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ মামলায় ৩০০ জন ব্যবসায়ী-কর্মচারী অজ্ঞাতপরিচয় আসামি। একই মামলা অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে ঢাকা কলেজের ৭০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
গত সোমবার (১৭ এপ্রিল) রাত ১২টার দিকে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী ও দোকান কর্মীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা চলে এ সংঘর্ষ। এরপর রাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) সকাল ১০টার পর দফায় দফায় শুরু হয় সংঘর্ষ, যা চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এতে উভয়পক্ষের অর্ধশতাধিক আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।
মঙ্গলবারের সংঘর্ষে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেদিনই মারা যান নাহিদ হাসান মানে এক কুরিয়ার সার্ভিসকর্মী। মঙ্গলবারের সংঘর্ষে আহত নিউমার্কেটের এক দোকানের কর্মচারী মোরসালিনকেও বাাঁচানো যায়নি। ২৬ বছর বয়সী এই যুবক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ বৃহস্পতিবার ভোররাত ৪টা ৩৬ মিনিটে মারা গেছেন। এ নিয়ে নিউমার্কেট এলাকার সংঘর্ষে দুজনের প্রাণ গেল।
এদিকে, সংঘর্ষের ঘটনায় উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে টানা দুদিন বন্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার সকালে বেশিরভাগ দোকানপাট খুলেছে রাজধানীর নিউমার্কেটের। এর আগে গতকাল বুধবার গভীররাতে সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে (বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ-বিসিএসআইআর) স্বরাষ্ট্র ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ব্যবসায়ী মালিক সমিতি, ঢাকা কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে মার্কেট খোলার সিদ্ধান্ত হয়।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, দোকান খোলায় স্বস্তি থাকলেও নতুন করে কোনো উত্তেজনা তৈরি হয় কিনা, তা নিয়ে তাদের মধ্যে শঙ্কা রয়েই গেছে।