logo
আপডেট : ২১ এপ্রিল, ২০২২ ১৮:৩৭
যশোর-খুলনার ৭ জুট মিল চালুর উদ্যোগ
এইচ আর তুহিন, যশোর ব্যুরো

যশোর-খুলনার ৭ জুট মিল চালুর উদ্যোগ

ফাইল ছবি

বন্ধ হয়ে যাওয়া যশোর-খুলনার সরকারি সাতটি জুট মিল ইজারার মাধ্যমে চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ইজারা নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে দুটি ভারতীয় ও দুবাইভিত্তিক এশিয়াটিক ট্রেডিং এলএলসিও নামে একটি প্রতিষ্ঠান।

ভারতীয় দুই প্রতিষ্ঠান হচ্ছে- প্যাসিফিক জুট লিমিটেড ও মোহন জুট লিমিটেড। এরা যশোর-খুলনার ছয়টি ইজারা নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। জুটমিলগুলো হলো- যশোর জুট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ও কার্পেটিং জুট মিলস লিমিটেড, খুলনার দৌলতপুর জুট মিলস লিমিটেড, খালিশপুর জুট মিলস লিমিটেড, প্লাটিনাম জুবিলী জুট মিলস এবং স্টার জুট মিলস লিমিটেড। আর খুলনার ইস্টার্ন জুট মিলস লিমিটেড ইজারা নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে দুবাইভিত্তিক এশিয়াটিক ট্রেডিং এলএলসিও। প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয় ভারতের কলকাতায়ও রয়েছে।

২০২০ সালের ৩০ জুন গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের আওতায় দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ২৫টি পাটকল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর বেসরকারি খাতে ইজারা দেয়ার মাধ্যমে ১৭টি চালুর ঘোষণাও দেয়া হয়। এরই মধ্যে দুটি জুট মিল ব্যক্তি খাতের উদ্যোক্তাদের হাতে ইজারা দেয়া হয়েছে। আর যশোর-খুলনার সাতটি বন্ধ হয়ে যাওয়া জুট মিল চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশে সরকারি মিল ইজারায় পরিচালনার পূর্বাভিজ্ঞতা খুব একটা ভালো না জানিয়ে বেসরকারি উদ্যোক্তারা বলছেন, এসব মিলের প্রচুর জমি। স্থাপনাও অনেক বড়। কিন্তু উৎপাদনশীলতা অনেক কম। যন্ত্রপাতিও অনেক পুরনো। শ্রমিক যারা আছেন, তারাও অনেক পুরনো। তাদের দিয়ে নতুন আধুনিক মেশিন পরিচালনাও কষ্টকর হতে পারে। ব্যক্তি খাতের উদ্যোক্তারা নিজ ইচ্ছা ও পরিকল্পনা অনুযায়ী মিল পরিচালনা করতে পারবেন না। অনেক শর্ত পূরণ করে এসব মিল পরিচালনা করতে হবে। এছাড়া উৎপাদন ক্ষেত্রে প্রডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করতে চাইলেও নানা জবাবদিহিতার বিষয় রয়েছে।

সরকারি পাটকলগুলো বন্ধ ঘোষণার পর শুরুতে প্রায় ৮০ হাজার স্থায়ী ও অস্থায়ী শ্রমিকের পাওনা পরিশোধে কার্যক্রম শুরু করে বিজেএমসি। প্রায় ২৫ হাজার স্থায়ী শ্রমিকের ৯০ শতাংশ পাওনা পরিশোধও করে দেওয়া হয়েছে। এরপর বিজেএমসির বন্ধ মিলগুলো বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ইজারার ভিত্তিতে পুনরায় চালুর বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়।

বিজেএমসির ইজারা নীতিমালা সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশের বন্ধ হয়ে যাওয়া ২৫টি পাটকলের মোট জমির পরিমাণ এক হাজার একরেরও বেশি। মিলগুলোর শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের আবাসন, বাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ অব্যবহৃত অনেক জমি ছিল। বেসরকারি মিলমালিকদের বিপুল এ জমির প্রয়োজন হবে না। তাদের শুধু চাহিদামতো জমি ও ভবন ছেড়ে দেয়া হবে। পাশাপাশি মিলের অফিস ভবনও ইজারাগ্রহীতা প্রতিষ্ঠানকে ছেড়ে দেয়া হবে। বিজেএমসি মিলের অভ্যন্তরে নতুন স্থাপনা নির্মাণের মাধ্যমে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য তদারককারী অফিস স্থানান্তর করবে।

বিজেএমসির মহাব্যবস্থাপক নাসিমুল ইসলাম জানিয়েছেন, ইজারা দেয়ার ঘোষণার পর এরই মধ্যে দুটি মিল নিয়েছে ব্যক্তি খাতের দুই প্রতিষ্ঠান। সেগুলোয় উৎপাদনও শুরু হয়েছে। এছাড়া আরো দুটি মিল ক্রিসেন্ট ও হাফিজ জুট মিল ইজারা দেয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

‘জামানত জমা পড়লে এ দুটি মিলও উৎপাদনের বিষয়ে অগ্রসর হতে পারবে। বাকি ১৩টি মিলের বিষয়ে আগ্রহপত্র চাওয়া হলে ১৮টি প্রতিষ্ঠান সাড়া দিয়েছে। এখন এ প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে আবার আর্থিক ও কারিগরি প্রস্তাব চাওয়া হয়েছে। যা আগামী ২৫ মের মধ্যে জমা দিতে হবে’, বলেন নাসিমুল ইসলাম।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে মোট পাটকল ইউনিটের সংখ্যা প্রায় ৩০০। এর মধ্যে ব্যক্তি বা বেসরকারি খাতে বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএসএ) ও বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিজেএমএ) সদস্য সক্রিয় পাটকল ইউনিট আছে প্রায় ২৪০টি।