logo
আপডেট : ২৩ এপ্রিল, ২০২২ ১০:৫৫
জমজমাট ঈদবাজার
মার্কেট-শপিংমলে ক্রেতার ভিড়
জুনায়েদ হোসাইন

মার্কেট-শপিংমলে ক্রেতার ভিড়

রাজধানীর ফুটপাতে জমে উঠেছে ঈদবাজার

ঈদের বাকি আর মাত্র কয়েক দিন। এরই মধ্যে পছন্দের পণ্য কিনতে এক মার্কেট থেকে অন্য মার্কেটে ছুটছেন ক্রেতা সাধারণ। দোকান থেকে দোকান ঘুরে কিনছেন পোশাক, সেন্ডেল, সু-জুতা, গহনা, প্রসাধনীসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর অভিজাত শপিংমলগুলো ছিল ক্রেতায় ভরপুর। তবে বিকেলের বৃষ্টিতে অনেকেই মার্কেটে আসতে পারেননি। আবার অনেকে ইফতার সেরে সন্ধ্যায় এসেছেন।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, এ বছর করোনাকালের তুলনায় বিক্রি বেশ ভালো হলেও করোনার আগের তুলনায় কম। আবার অনেকে গ্রামে ঈদ করবেন বলে স্থায়ী বাজারে কেনাকাটার প্রস্তুতি নিয়েছে। যার প্রভাব মহানগরীগুলোতে পড়েছে।

এদিকে সম্প্রতি রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ছাত্র ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ক্রেতাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে।

এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে সব ধরনের সহায়তা করবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ী নেতারা। তবে এই তদন্ত যাতে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত না হয় সেই অনুরোধ করেছেন ব্যবসায়ী নেতারা।

অভিজাত বিপণিবিতানের পাশাপাশি রাজধানীর ফুটপাতের ব্যবসাও জমে উঠেছে। এসব দোকানে সব বয়সি নারী-পুরুষ ও শিশুদের পোশাক বিক্রি হচ্ছে। শাড়ি, পঞ্জাবি থেকে শুরু করে সালোয়ার-কামিজ, থ্রিপিস, টপস, বোরকা, ব্যাগ, নেইলপলিশ, লিপস্টিক, কাজল, চুড়ি, ফিতা, ক্লিপ, শার্ট, টি-শার্টসহ সব ধরনের পোশাক মিলছে ফুটপাতে। ঈদ উপলক্ষে ফুটপাতের এই কেনাবেচা চলে গভীর রাত পর্যন্ত।

অন্যদিকে ঈদে নগরবাসীর গ্রামে যাত্রা উপলক্ষে বাস ও লঞ্চ টার্মিনাল এলাকায় ফুটপাতের ব্যবসাও জমে উঠেছে। রাজধানীর সদরঘাট, মহাখালী, গাবতলী ও সায়দাবাদ এলাকায় হকাররা হাঁকডাক দিয়ে গ্রাহক ডাকছেন। আবার গুলিস্তান ও নিউমার্কেট এলাকায় গানে, গানে বা স্লোগানে স্লোগানে পণ্যের মূল্য ও মানের প্রচার করতে দেখা গেছে।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর নিউমার্কেটের দোকান ইঞ্জোর মালিক সাজ্জাদ ভোরের আকাশকে জানান, ছাত্র-ব্যবসায়ীদের সমস্যার কারণে কাস্টমার উপস্থিতি একটু কম। এরই মধ্যে আজ (গতকাল) শুক্রবার ঈদের বেচাবিক্রি বাড়ার কথা থাকলেও হঠাৎ বৃষ্টির কারণে অনেকটা থমকে গেছে।

আগে এই সময়ে ৬০ বা ৭০ হাজার টাকা বিক্রি হতো এখন ৪০ হাজার হয়েছে। অনেকে গেঞ্জামের আশঙ্কায় এবং বৃষ্টির কারণে আসতে চাচ্ছেন না। তবে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ঈদের বাজারে জমে উঠেছে বলে তিনি ভোরের আকাশকে জানিয়েছেন।

এদিকে আবহাওয়া দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, চলতি মাসে (এপ্রিলে) এই রোদ এই বৃষ্টি অবস্থা বিরাজ করবে। তবে চলতি সময়ে রোদ ঝলমলে আকাশ সূর্যের প্রখরতায় ভ্যাপসা গরম বিরাজ করবে। একই সঙ্গে বৃষ্টির সঙ্গে দমকা হাওয়া এবং কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টিসহ কালবৈশাখীও হতে পারে। বৃষ্টিতে গরম থেকে স্বস্তি মিললেও ঈদের কেনাকাটায় ভোগান্তি বেড়েছে।

বাজারের সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়ে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন ভোরের আকাশকে বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের আশানুরূপ বিক্রি শুরু হয়েছে। গত কয়েক দিনে ঢাকার মার্কেটে ক্রেতার উপস্থিতি ভালো। কোথাও কোনো সমস্যার তথ্য আপাতত আমাদের কাছে নেই। সবাই (ব্যবসায়ী ও ক্রেতা) স্বাভাবিকভাবে ক্রয়-বিক্রয় করছেন।’

নিউমার্কেট এলাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যে সমস্যা হয়েছে, তার সমাধান ইতোমধ্যে হয়েছে। ব্যবসায়ীরা প্রতিষ্ঠান খুলেছেন, আমাদের কাছে খবর হচ্ছে, বাজার জমে উঠেছে। ক্রেতার উপস্থিতিও বাড়ছে। প্রত্যাশা অনুযায়ী বিক্রি হচ্ছে। নিউমার্কেট এলাকায় কোনো সমস্যা নেই। ছাত্র-ব্যবসায়ীরা শান্তিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে।’

সাম্প্রতিক ঘটনায় যে মামলা হয়েছে, সে প্রসঙ্গে হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘মামলা হয়েছে, তদন্ত হবে। এতে আমাদের কাছে যেসব বিষয় সহায়তা চাওয়া হবে, সব ধরনের সহায়তা করা হবে। তবে একটা অনুরোধ থাকবে। এই তদন্ত যাতে নিরপেক্ষ হয়। এতে কোনোভাবেই যাতে রাজনৈতিক বিষয় গুরুত্ব না পায়।’