দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলায় ধানের ক্ষেত থেকে মাছ চুরির অভিযোগে সুমন মিয়া (২৫) নামে এক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী যুবককে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। তাকে গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করা হয়। গত শুক্রবার বিকেলে উপজেলার ২নং পালশা ইউনিয়নের ভাতছালা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় গত শনিবার রাতে নির্যাতনের শিকার সুমনের বড় ভাই সাইফুল ইসলাম তিনজনের নাম উল্লেখ করে ঘোড়াঘাট থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

সুমন মিয়া উপজেলার ছয়ঘট্টি বেলওয়া গ্রামের লতিফ মিয়ার ছেলে। তিনি বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

নির্যাতনের শিকার সুমনের পারিবারিক সূত্র এবং ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, উপজেলার ভাতছালা গ্রামের হামিদ মিয়ার ছেলে শাহারুল ইসলাম (৪৫) ও একই গ্রামের ইজ্জত আলীর ছেলে মোস্তাফিজুর (৩২) এবং তাঁতিপাড়া-বেলওয়া গ্রামের মৃত নুরু মিয়ার ছেলে ফারাজ আলী (৫৫) বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী সুমনকে একটি গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে দুই হাত বেঁধে লাঠি ও হাত দিয়ে পর্যায়ক্রমে নির্যাতন করছে।

এ বিষয়ে সুমনের বড় ভাই সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা গরিব, দিন এনে দিন খাই। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ছোট মাছ ধরার জাল নিয়ে জমিতে বসিয়ে দিয়ে আসি। সেই জাল থেকে শুক্রবার ভোরে মোবাইলের আলো জ্বালিয়ে মাছ আনতে যায়। সে সময় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা জমি থেকে তাদের মাছ ধরার খোলসানী (বাঁশ দিয়ে তৈরি মাছ ধরার বিশেষ ফাঁদ) থেকে মাছ চুরির মিথ্যা অভিযোগ আনে।

তিনি আরো বলেন, চুরির অপবাদে আমার ভাইকে গাছের সঙ্গে বেঁধে অমানসিক নির্যাতন করে। আমার ছোট ভাই বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী এবং ছোটবেলায় প্যারালাইসিস হওয়ায় বর্তমানে সে বাম পায়ে শক্তি পায় না। পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে নির্যাতন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু হাসান কবির বলেন, ‘শনিবার রাতে স্থানীয় ইউপিসহ সুমনের পরিবারের পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। পালশা ইউনিয়ন বিটের বিট কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) দুলু মিয়াকে অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’