logo
আপডেট : ২৫ এপ্রিল, ২০২২ ১০:১৫
এক্স-রে মেশিনের তার উধাও, রোগীদের ভোগান্তি
শরিফুল ইসলাম, নীলফামারী

এক্স-রে মেশিনের তার উধাও, রোগীদের ভোগান্তি

নীলফামারীর সৈয়দপুরে ১০০ শয্যা হাসপাতাল

হঠাৎ এক্স-রে মেশিনের এসি তার উধাও ও প্রিন্টার নষ্টের অজুহাতে নীলফামারীর সৈয়দপুরে ১০০ শয্যা হাসপাতালে এক্স-রে সেবা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগীরা।

বাধ্য হয়ে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে থেকে কয়েক গুণ বেশি টাকা দিয়ে এক্স-রে করাচ্ছেন তাদের। ফলে দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এটি চুরি না অন্য কিছু এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রোগীরা।

তাদের অভিযোগ, হাসপাতালে এক্স-রে করাতে ৬০ থেকে ৭০ টাকা লাগে। আর বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে লাগে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আরো বেশি নেওয়া হয়।

তাছাড়া হাসপাতালে উন্নত মানের ৩০০ এমএ এক্স-রে মেশিন থাকলেও বাইরে ১০০ বা ২০০ এমএ মেশিনে এক্স-রে করাতে হচ্ছে। অনেক সময় মান খারাপের অজুহাত দেখিয়ে বাইরে থেকে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা খরচে ডিজিটাল মেশিনে এক্স-রে করানো হয়।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১০০ শয্যা হাসপাতালটিতে সৈয়দপুর উপজেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী দিনাজপুর জেলার রানীর বন্দর, রংপুরের তারাগঞ্জের রোগীরাও চিকিৎসাসেবা নিতে আসেন। প্রতিদিন গড়ে ৪০ থেকে ৫০ জন এক্স-রে করান। গত ১৬ এপ্রিল এক্স-রে মেশিনের এসি তার চুরি হয়ে যায়। এরপর থেকে সেবা বন্ধ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক্স-রে রুমে তালা ঝোলানো। রোগীরা এক্স-রে রুমের সামনে গেলে টেকনিশিয়ান তাদের নির্দিষ্ট কয়েকটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন।

উপজেলার খাতামধুপুর ডাঙ্গাপাড়া এলাকার মাসুদ রানার বাবা হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগে চিকিৎসাধীন। তিনি বলেন, ‘আমার বাবা রিকশাচালক। সড়ক দুর্ঘটনায় ডান পা ভেঙে গেছে। বাবার আয় দিয়েই আমাদের সংসার চলে। হাসপাতালে না হওয়ায় বাইরে এক্স-রে করতে বলেছেন ডাক্তার। কিন্তু বাইরে অনেক বেশি টাকা লাগবে। তাছাড়া অসুস্থ বাবাকে নিয়ে যাওয়াটাও কষ্টসাধ্য।’

জানতে চাইলে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. মোহায়মিনুল ইসলাম বলেন, ‘মেশিনের এসি তার চুরি ও প্রিন্টার নষ্ট হওয়ায় এক সপ্তাহ ধরে এক্স-রে কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এই এসি তার দেশের বাজারে পাওয়া যায় না। আর এক্স-রে ফিল্ম প্রিন্টার সারাতেও সময় লাগবে। সব মিলিয়ে অন্তত সাত দিন সময় লাগবে।’

তিনি বলেন, ‘চুরির বিষয়টি স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে অবহিত করেছেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক। আশা করা হচ্ছে, চলতি সপ্তাহেই এটি সচল হবে। এটি সচল হলে রোগীদের ভোগান্তি কমবে।’

তবে সৈয়দপুর থানার ওসি আবুল হাসনাত খান বলেন, ‘হাসপাতালে এক্স-রে মেশিনের তার চুরির বিষয়টি আমার জানা নেই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’