ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে বিএনপির ইফতার মাহফিল পণ্ড করতে গিয়ে পুলিশের পিটুনির শিকার হন আওয়ামী লীগ ও এর সব সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এতে পুলিশের ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছেন জেলা-উপজেলার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। দলীয় নেতাকর্মীদের লাঠিপেটা করা ওইসব পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন তারা।
এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে।
উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি একেএম ফরিদ উল্লাহ দৈনিক ভোরের আকাশকে বলেন, ‘বিএনপির অনুষ্ঠানে সরকারবিরোধী মন্তব্য করায় আমরা এগিয়ে গেলে পুলিশের আক্রমণের শিকার হই। বিএনপির পক্ষ হয়ে পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীদের লাঠিপেটা ও মারধর করে। এতে কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন। আমরা থানার ওসি ও পরিদর্শক তদন্তসহ মারধর করা পুলিশ সদস্যদের প্রত্যাহার চাই।’
এদিকে পুলিশের হাতে নেতাকর্মীরা মারধরের শিকার হওয়ার ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রতিবাদের ঝড় বইছে। রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ময়মনসিংহ সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান শাহীন ফেসবুকে পোস্ট করে লিখেন, ‘সারা বাংলাদেশ আজ বিস্মিত। এই জঘন্য ঘটনার বিচারটা করবে কে জানি না। এত সাহস পেলেন কোথায় পুলিশ মিয়া? এত উজাইয়া গেলেন কেরে? আওয়ামী লীগ আপনার কাছে এতটাই ঘৃণার?’
আল আমিন বিদ্যুৎ নামে একজন এই পোস্টে কমেন্ট করে লিখেছেন, ‘সরকার আমলাদের এত বেশি সাহস দিয়েছে, এখন সরকারকেই মূল্য দিচ্ছে না। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’
রোববার সন্ধ্যায় আরেকটি পোস্ট দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল। তিনি লেখেন, ‘জনাব আহমার উজ্জামান পুলিশ সুপার মহোদয়, ময়মনসিংহ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিএনপি প্রকাশ্যে মাইকে অকথ্য ভাষায় গালাগালও করবে। আর এমন সময় আওয়ামী লীগ কর্মীরা প্রতিবাদী হবে এটাই স্বাভাবিক। প্রতিবাদী আওয়ামী লীগ কর্মীদের ওপর পুলিশ হামলা চালাবে এটা অস্বাভাবিক। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখার দাবি জানাচ্ছি।’
এছাড়া রোববার দুপুরে ঈশ্বরগঞ্জ পৌর সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ সময় হামলায় জড়িত পুলিশের প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা পুলিশের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দেয়।
এর আগে শনিবার উপজেলার চরনিখলা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ইফতারের আয়োজন করে উপজেলা বিএনপি। বিকেলে যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাসহ সহযোগী ও অংগসংগঠনের নেতাকর্মীরা ইফতার পণ্ড করতে চাইলে সংঘর্ষ বাধে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ইটপাটকেল ও ভাঙচুর করতে থাকে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হামলাকারীদের পিটুনি দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সামি উসমান গণি দৈনিক ভোরের আকাশকে বলেন, ‘বিএনপির নেতারা সরকারবিরোধী বক্তব্য দিচ্ছিল। এজন্য স্থানীয় নেতাকর্মীরা এলে পুলিশ আমাদের ওপর হামলা করে। এতে ছাত্রলীগ নেতা আবু রায়হান, মৎস্যজীবী লীগ শামীম মিয়া, ছাত্রলীগের তুষার, শফিকুল ইসলাম ও আবু সাঈদসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।’
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি মো. আবদুল কাদের মিয়া বলেন, ‘ইফতার মাহফিলে ভাঙচুরের খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় কেউ আহত হওয়ার খবর আমার জানা নেই।’