রাজধানীর উত্তরার জসিমউদ্দিন ও মিরপুর এলাকায় ঈদের আগে বকেয়া বেতন ও বোনাস না পেয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন পোশাক শ্রমিকরা।
সোমবার (২৫ এপ্রিল) বেলা ১২টার দিকে ইন্ট্রাকো ডিজাইন লিমিটেড ও ইন্ট্রাকো ফ্যাশন লিমিটেড নামে দুটি গার্মেন্টসের প্রায় ১২শ’ শ্রমিক বেতন-বোনাসের দাবিতে রাস্তায় নামেন। এতে প্রায় দুই ঘণ্টা উত্তরা এলাকায় যান চলাচল বন্ধ ছিল। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ ও বাসযাত্রীরা। ইন্ট্রাকো ডিজাইন লিমিটেড এবং ইন্ট্রাকো ফ্যাশন লিমিটেড নামে দুইটি গার্মেন্টসের মালিক একই ব্যক্তি।
শ্রমিক অবরোধের কারণে ঈদের কেনাকাটার জন্য বের হওয়া উত্তরা ও আশেপাশের এলাকার মানুষ যেমন দুর্ভোগে পড়েন তেমনই প্রধান সড়ক অবরুদ্ধ থাকায় উত্তরা দিয়ে যাতায়াতকারী অন্যান্য রুটের সব বাস আটকা পড়ে। ফলে পথের প্রতিটি স্টপেজেই ছিল বাসের জন্য যাত্রীদের দীর্ঘ অপেক্ষা। এসময় কোন একটা বাস মাঝপথে ঘুরে এলেই তাতে ওঠার জন্য যাত্রীদের হুমড়ি খেয়ে পড়তে দেখা গেছে।
এ সময় পুলিশ এসে অবরোধে নামা শ্রমিকদের শান্ত করার চেষ্টা করে রাস্তা থেকে সরিয়ে দিতে চাইলেও ব্যর্থ হয়। এক সময় গার্মেন্টস শ্রমিকরা থেমে থাকা গাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করলে দুপুর দেড়টার দিকে পুলিশ টিয়ার শেল নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
ইন্ট্রাকো ডিজাইন লিমিটেড ও ইন্ট্রাকো ফ্যাশন লিমিটেডের শ্রমিকরা বলেন, গার্মেন্টস দুটি একই মালিকের। তাদের কারও দুই মাসের বেতন বকেয়া, কারও তিন মাসের বেতন, ওভারটাইম ও বোনাস পাওনা। দাবি আদায়ের আগ পর্যন্ত সড়ক না ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছে তারা।
বিমানবন্দর জোনের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার তাপস কুমার দাস ভোরের আকাশকে বলেন, 'বেলা ১২টা থেকে গার্মেন্টসের শ্রমিকরা রাস্তা অবরোধ করে রাখে। তাদের অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় পুলিশ। এর মধ্যে গার্মেন্টস শ্রমিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা চলছে। হঠাৎ করেই দেড়টার দিকে অবস্থানরত গার্মেন্টস শ্রমিকরা যানবাহনে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। বাধ্য হয়ে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এখন যান চলাচল স্বাভাবিক আছে।
অন্যদিকে, সোমবার দুপুরের দিকে মিরপুর ১১ নম্বর সড়কে অবস্থান নেন কটন টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলস লিমিটেডের শ্রমিকরা। এদিকে সড়ক অবরোধের কারণে মিরপুর ১০ এবং এর আশপাশের সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে।
মিরপুরের শ্রমিকরা জানান, এ গার্মেন্টসে প্রায় ৩০০ শ্রমিক কাজ করেন। তাদের কেউই চলতি বছরের জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি এবং মার্চ মাসের বেতন পাননি। সব বকেয়া ও ঈদ বোনাস ২০ এপ্রিল দেওয়ার কথা ছিল। তবে মালিকপক্ষ টাকা দেয়নি। গার্মেন্টস মালিকও কারখানায় আসছেন না ২ সপ্তাহ ধরে। এ অবস্থায় রাস্তায় নামা ছাড়া তাদের কোনো উপায় ছিল না।
কটন টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলস লিমিটেডের শ্রমিক সাহাব উদ্দিন বলেন, গত ২৩ এপ্রিল একই দাবিতে সড়ক অবরোধ করা হয়েছিল। মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে বকেয়া বেতন পরিশোধের আশ্বাস দিয়েছিল পুলিশ। তবে দুই দিন ধরে তারা আর যোগাযোগ করেনি।