logo
আপডেট : ২৬ এপ্রিল, ২০২২ ১২:০৫
ঈদযাত্রায় শঙ্কা-দুর্ভোগ-বিড়ম্বনা
ভোগান্তি প্রশমনে চাই ‘র‌্যাপিড স্টেপ’
নিজস্ব প্রতিবেদক

ভোগান্তি প্রশমনে চাই ‘র‌্যাপিড স্টেপ’

দৈনিক ভোরের আকাশ-সবার কথা বলে

সপ্তাহখানেক বাদে ঈদ। স্বভাবতই তাই বাড়ি ফেরার তাড়া পরিলক্ষিত হচ্ছে নগর-মহানগরগুলোতে অবস্থানরতদের মধ্যে। দিন যত ঘনিয়ে আসবে ঘরমুখী মানুষের তোড়জোড় বাড়বে, শুরু হবে ঘরে ফেরার তীব্র প্রতিযোগিতা। প্রতিবারের মত এবারও বাস-ট্রেন-লঞ্চের অগ্রিম টিকিট প্রাপ্তিতে হুড়োহুড়ি শুরু হয়েছে, টিকিটবঞ্চিতদের কপালে পড়ছে চিন্তার ভাঁজ। সবচেয়ে বেশি দুশ্চিন্তায় আছে রাজধানীতে অবস্থানরত মানুষজন; কেননা, প্রতি বছর ঘরে ফিরতে নাকাল হতে হয় ঢাকাবাসীদের।


এবার ঈদে এক কোটির বেশি মানুষ রাজধানী ছাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, এবারও বাড়ি ফেরার ক্ষেত্রে দুর্ভোগ-ভোগান্তি পোহাতে হবে যাত্রীদের। মূলত মহাসড়কগুলোতে সড়ক প্রশস্তকরণ ও সড়ক সংস্কার কাজ, অবৈধ যানবাহনের দাপট, তিনচাকার ধীরগতির যানবাহন, ফেরিঘাটে নাব্য সংকট ও বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে চাঁদাবাজি, দীর্ঘ যানজট ও ভোগান্তির আশঙ্কা রয়েছে। তবে, ঘরে ফেরার এ মহাযুদ্ধে এবারও আশার প্রদীপ জ্বলছে সরকারি আশ্বাসে! বিগত সময়ের পরিস্থিতি বিবেচনায় এবার সড়ক পরিবহণ, সেতু মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং নৌ পরিবহণ মন্ত্রণালয় মানুষের যাতায়াতের দুর্ভোগ কমাতে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।


ঈদে মানুষের বাড়ি ফেরার ক্ষেত্রে দুর্ভোগ লাঘবে সরকারের আন্তরিক চেষ্টার ঘোষণা এসেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হচ্ছে। সড়কে চাঁদাবাজি ও অবৈধ দখলের বিষয়ে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণে সংশ্লিষ্টরা একমত-এককাট্টা হয়েছেন।
অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহণ ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে কঠোরতর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের তরফ থেকে ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এসব বিষয়ে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি সভা-সেমনিারও করা হয়েছে। সর্বক্ষেত্রে অতিরিক্ত যাত্রী বহন বন্ধ, যাত্রীসেবা নিশ্চিত করার পাশাপাশি অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।


মানুষের ঈদযাত্রা নির্বিঘœ করতে দেশের বিভিন্ন মহাসড়কে বেশ কিছু উড়ালসড়ক ও ওভারপাস নির্মাণ এবং মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানের গর্ত ও খানাখন্দ মেরামতের কাজ চলছে। ঈদের আগে-পরে কিছু নির্দিষ্ট ক্যাটাগরির যান চলাচল বন্ধ কিংবা সীমিত রাখা হবে। মোটর সাইকেল, তিন-চাকার বাহন বন্ধ রাখার বিষয়টিও প্রক্রিয়াধীন আছে। নৌপথে চলাচল নির্বিঘ্ন করতে নানামুখী উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। নতুন ফেরিঘাট নির্মাণের পাশাপাশি নৌরুটে দুর্ভোগ লাঘবে নাইট শিফটেও ফেরি চলাচলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, বহরে অতিরিক্ত ফেরি সংযোজন করা হচ্ছে। এসব উদ্যোগের আশানুরূপ বাস্তবায়ন দুর্ভোগ কমাবে- বলাই যায়।


ঈদে মানুষের নিরাপদ ঘরে ফেরা নিশ্চিত করতে প্রতি বছর সরকারের পক্ষ থেকে নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এক্ষেত্রে সরকারের আন্তরিকতা-সদিচ্ছাকে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। তবে, চিরাচরিত সমস্যা হচ্ছে- উদ্যোগ শুরু হয় ব্যাপক উৎসাহ-তোড়জোড় সহযোগে, যার শেষটা বয়ে আনে চরম অস্বস্তি-অসন্তোষ। বিগত সময়ে এমনটাই ঘটেছে- এ দাবিকে পাশ কাটানোর সুযোগ নেই।


মহানগরগুলো থেকে ঘরে ফিরতে প্রায় সব বাসিন্দার একযোগে রাস্তায় নেমে পড়াহেতু সড়ক-মহসড়কে চাপ বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। অন্যক্ষেত্রে পরিস্থিতির সামাল দেওয়া গেলেও এক কোটি রাজধানীবাসীর নিরাপদ ঈদযাত্রা নিশ্চিতে হিমশিম খেতে হবে- চিত্র এখন পর্যন্ত এরকমই। তবে, সরকারের গৃহীত পদক্ষেপসমূহের সুষম বাস্তবায়নে দৃশ্যপট পাল্টাতে পারে। এক্ষেত্রে কাক্সিক্ষত ফলাফল আনয়নে চাই ‘তড়িৎ পদক্ষেপ’। উৎসব উপলক্ষে ঘরমুখী মানুষের ভোগান্তি প্রশমনে চাই ‘র‌্যাপিড স্টেপ’।