logo
আপডেট : ২৭ এপ্রিল, ২০২২ ০৯:১৮
সেতুর পাশে বাঁশের সাঁকো, তা-ই দিয়ে চলাচল
বরগুনা প্রতিনিধি

সেতুর পাশে বাঁশের সাঁকো, তা-ই দিয়ে চলাচল

এ্যাপ্রোচ সড়ক না থাকায় আড়াই কোটি টাকায় নির্মিত সেতু পড়ে রয়েছে। এর পাশ দিয়ে বাঁশের তৈরি সাঁকা দিয়ে স্থানীয়রা যাতায়াত করেন। ছবিটি সম্প্রতি তোলা

সংযোগ সড়কের জমি নিয়ে জটিলতা তৈরি হওয়ায় বরগুনার বামনা উপজেলায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতু কাজে আসছে না। সংযোগ সড়ক না থাকায় সেতুর পাশে তৈরি করা বাঁশের সাঁকো দিয়ে খালটি পার হচ্ছেন স্থানীয়রা। যদিও ঠিকাদার ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের দাবি, স্থানীয়রা সংযোগ সড়ক নির্মাণের জায়গা না দেওয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

বামনা উপজেলার রামনা ইউনিয়নের উত্তর রামনা খোলপটুয়া, গোলাঘাটা ও ডৌয়াতলা এই চার এলাকার বাসিন্দাদের জন্য সেতুটি গুরুত্বপূর্ণ। রামনা ইউনিয়নের বাসিন্দাদের বামনা উপজেলা সদরে যাতায়াতে খোলপটুয়া হয়ে বিকল্প সড়ক ব্যবহার করতে হয়।

ব্রিজের দক্ষিণপাড়ের গোলাঘাটা-ডৌয়াতলা সড়ক, উত্তরপাড়ে উত্তর রামনা থেকে খোলপটুয়া সড়ক। এই দুই সড়কের সংযোগে ব্রিজটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ব্রিজের উত্তরপাড়ে রামনা শেরেবাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থীর বসবাস।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর বরগুনা কার্যালয়ের তথ্যমতে, ২০১৮ সালের জুন মাসে দুই কোটি ৪৯ লাখ টাকা ব্যয় ধরে প্রাক্কলন অনুমোদন দেয় এলজিইডি। এমএম ট্রেডার্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ব্রিজ নির্মাণের কাজ পায়। ২০১৮ সালের শেষের দিকে ঠিকদারি প্রতিষ্ঠান পুরনো লোহার সেতু ভেঙে গার্ডার ব্রিজের কাজ শুরু করেন।

কিন্ত পিলার বসানো নিয়ে জটিলতা দেখা দেওয়ায় নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। পরে ২০১৯ সালের শেষের দিকে ফের কাজ শুরু করেন ঠিকাদার। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মূল সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করেন ঠিকাদার। সেতুর উভয়পাড়ের সড়ক অপ্রশস্ত হওয়ায় সংযোগ সড়ক নির্মাণের জমি নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এরপর কাজ ফেলে রেখে চলে যান ঠিকাদার।

পরে স্থানীয়রা সেতুর পশ্চিম পাশে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে খাল পার হচ্ছেন। বাঁশের সাঁকো দিয়ে মানুষ চলাচল করলেও যানবাহন চলতে পারছে না।

রামনা শেরেবাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন বলেন, ‘স্কুলের শিক্ষার্থীরা আগে পুরনো সেতু পারপার করতে পারত। ব্রিজ হওয়ার পরও এখনও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বাঁশের সেতু পার হতে হয়। শিক্ষার্থীদের অনেকে বাঁশের সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে আহত হয়েছে। এখানে এপ্রোচ সড়ক নির্মাণ খুব জরুরি।’

কলেজ শিক্ষার্থী সাদিয়া আক্তার বলেন, ‘প্রতিদিন এ রাস্তা দিয়ে কলেজে যেতে হয়। কিন্তু এখানে এসে যানবাহন থেকে নেমে ওপাড়ে গিয়ে আবার গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে হয়। এটি খুবই বিরম্বনা ও ভোগান্তির।’

ওই এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম জোমাদ্দার বলেন, ‘এপ্রোচ সড়ক নির্মাণে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার ভিটেমাটির জমি ছাড়তে হবে। এ নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হওয়ার কাজ বন্ধ হয়েছে। আমি ওই বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেছি। ক্ষতিপূরণ দিলে এ্যাপ্রোচ সড়কের জন্য জমি ছাড়বেন তারা।’

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের বরগুনা কার্যালের নির্বাহী প্রকৌশলী সুপ্রিয় মুখার্জি বলেন, ‘আমি যোগদানের পর সেতুটির বিষয়ে খোঁজ নিয়েছি। সেতুর এ্যাপ্রোচ সড়ক পুনঃনির্মাণের জন্য বিভাগীয় প্রকৌশলী ও প্রধান প্রকৌশলীর কাছে প্রাক্কলন করে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন হলেই কাজ শুরু করবে।’