logo
আপডেট : ২৭ এপ্রিল, ২০২২ ১০:৪৭
আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ৫
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ৫

আধিপত্য বিস্তার সংঘর্ষে আহত একজন ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি

ঝিনাইদহে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে হরিশংকরপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও তার সমর্থকদের হামলায় স্কুলশিক্ষক এবং ইউপি সদস্যসহ পাঁচজন আহত হয়েছেন। রোববার রাত ৮টার দিকে সদর উপজেলার হরিশংকরপুর ইউনিয়নের বাকড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

আহতদের মধ্যে ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য বদরুল হাসান লালু, স্কুলশিক্ষক মাহবুবুল আলম আজাদ, ফরিদুল, জামিরুলকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান খন্দকার ফারুকুজ্জামান ফরিদ তার বিরুদ্ধে আনীত হামলার অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বলেন, ‘বিরোধী একটি পক্ষ সম্মান হানির জন্য মিথ্যা কথা রটাচ্ছে।’

জানা যায়, গত ফেব্রুয়ারি মাসের অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসৃজন কর্মসূচি ৪০ দিন প্রকল্পের কাজ নিয়ে ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য বদরুল হাসান লালু ও হরিশংকরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খন্দকার ফারুকুজ্জামান ফরিদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এর আগেও এই দুইজনের মধ্যে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল।

এরই জেরে রোববার রাতে ইউনিয়নের বাকড়ি গ্রামে বদরুল হাসান লালু ও মাহবুবুল আলমসহ কয়েকজন কথা বলা অবস্থায় চেয়ারম্যানের সমর্থকরা তাদের ওপর হামলা চালায়। সে সময় তাদের ধারালো অস্ত্র ও লাঠির আঘাতে গুরুতর আহত হন স্কুলশিক্ষক মাহবুবুল আলম আজাদ, ইউপি সদস্য বদরুল হাসান লালুসহ পাঁচজন। পরে তাদের মধ্যে চারজনকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

আহত স্কুলশিক্ষক মাহবুবুল আলম আজাদ জানান, ইফতারের পর এক প্রতিবেশীর ছেলের সুন্নতে খাতনার অনুষ্ঠানের বিষয় নিয়ে আমরা কথা বলছিলাম। সে সময় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফরিদের লোকজন অতর্কিত আমাদের ওপর হামলা করে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করে। এতে আমার দুই পা ও হাত ভেঙে যায়। তারা কেন এই অতর্কিত হামলা করল বুঝতে পারছি না।

ইউপি সদস্য বদরুল হাসান জানান, আমার ওয়ার্ডে কর্মসৃজনের কাজ নিয়ে চেয়ারম্যান ফরিদ আমার অজান্তেই কাজ না করিয়ে টাকা তুলে নেওয়ার চেষ্টা করছিল। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেই বিল আটকে দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়েই চেয়ারম্যানের সমর্থকরা আমাদের ওপর হামলা চালায়।

এ বিষয়ে হরিশংকরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খন্দকার ফারুকুজ্জামান ফরিদ জানান, ঘটনার দিন বিকেল থেকেই আমি সংসদ সদস্য তাহজীব আলম সিদ্দিকী সমি’র বাসায় ছিলাম। সে সময় আমার মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল। আমি এই হামলার বা মারধরের ঘটনা কিছুই জানি না। অথচ তারা বিনা কারণে আমাকে দোষী করছে। এটা সঠিক নয়। রাতে আমার ছেলে আমাকে ফোন করে বলে যে, বাবা তোমার নামে মারধরের অভিযোগে লেখালেখি হচ্ছে। তখন আমি জানলাম।

তিনি আরো জানান, ৪০ দিনের কর্মসূচির কাজে ৫নং ওয়ার্ডের পিআইসি’র সভাপতি করা হয়েছে সদস্য বদরুল হাসানকে। তিনি আমার সমর্থক না হওয়া সত্ত্বেও এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে তাকে সভাপতি করা হয়েছে। আর বর্তমানে শ্রমিকদের টাকা তুলে নেওয়ার সুযোগ নেই। কারণ শ্রমিকরা তাদের মোবাইলেই টাকা পাবে এবং তা তুলতে পারবে। কিন্তু একটি বিরোধী পক্ষ তাকে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে এসব করাচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ সোহেল রানা জানান, এ ঘটনায় আহতদের পক্ষ থেকে সোমবার বিকেলে ১৭ জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা হয়েছে। আসামিরা সবাই পলাতক রয়েছে। তাদের ধরতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।