logo
আপডেট : ২৮ এপ্রিল, ২০২২ ১০:৩৮
শতাধিক আক্রান্ত, একজনের মৃত্যু
লামা দুর্গম ম্রো পাড়ায় ডায়রিয়ার প্রকোপ
রিজভী রাহাত, বান্দরবান

লামা দুর্গম ম্রো পাড়ায় ডায়রিয়ার প্রকোপ

লামার দুর্গম অঞ্চলে পাহাড়িদের চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন সেনাবাহিনী

বান্দরবানের লামা উপজেলার রূপসীপাড়া ইউনিয়নের দুর্গম মিনতুই ও পমপং নামে দুটি ম্রো পাড়ায় ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।

রূপসীপাড়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার লংক্রাত ম্রো (৫০) ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এছাড়াও এলাকায় শতাধিক মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

সোমবার স্থানীয়দের মাধ্যমে রূপসীপাড়া আর্মি ক্যাম্প বিষয়টি অবহিত হয়ে আলীকদম সেনা জোনকে জানায়। পরে আলীকদম সেনা জোনের একটি মেডিকেল টিম সোমবার দুপুরে রূপসীপাড়া ইউনিয়নের বড় কলারঝিরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অস্থায়ী মেডিকেল ক্যাম্প করে স্বাস্থ্যসেবা দেয়।

মেডিকেল ক্যাম্পে মিনতুই ও পমপং ম্রো পাড়াসহ আশপাশের মোট ১২৫ জন রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয় এবং বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ করা হয়। আলীকদম জোনের ক্যাপ্টেন নুরুজ্জামান তুর্যের নেতৃত্বে মেডিকেল টিম এই স্বাস্থ্যসেবা দেয়। এ সময় দুটি ম্রো পাড়ার ৩৩ জন শিশু, ৪৬ জন নারী, ৩৬ জন পুরুষকে চিকিৎসা দেয়া হয়। যাদের ৬০ শতাংশ ডায়রিয়ার রোগী। পাশাপাশি ১০ জন বাঙালি নারী-পুরুষ মেডিকেল ক্যাম্প থেকে চিকিৎসা নেয়।

রুপসী পাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাচিং প্রু মারমা বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আলীকদম জোন এবং লামা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসারের নেতৃত্বে যৌথ মেডিকেল টিম ডায়রিয়ায় আক্রান্তদের চিকিৎসা দিচ্ছে। এদিকে অবস্থার অবনতি হওয়ায় দুটি ম্রো পাড়ার ৩৩ জনকে লামা সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। যার মধ্যে ২০ জনই ডায়রিয়ার রোগী বলে জানান লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মাইনুদ্দিন মাজেদ চৌধুরী।

তিনি বলেন, হাসপাতালের আন্তঃবিভাগে ভর্তি রোগীদের নিবিড় চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা অধিকাংশ রোগী ডায়রিয়া আক্রান্ত। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু ও বয়স্ক।

তিনি আরো জানান, ওই এলাকার লোক হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসতে চায় না। তবে এলাকার লোকজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসতে কাজ করছে ইউনিয়ন পরিষদ।

৬নং রুপাসি পাড়ার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছাচিং মার্মা বলেন, এলাকার লোকজনকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।

হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রোবিন বলেন, হাসপাতালের ইনডোর ও আউটডোরে প্রতিদিন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসাসেবা নিতে ভিড় করছেন। গত এক সপ্তাহ ধরে ডায়রিয়া রোগীর চাপ বেড়েছে। এই মুহূর্তে হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগের ওষুধের কোনো সংকট নেই। হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা ৫০ হলেও অতিরিক্ত রোগী ভর্তি হওয়ায় মেঝেতেও চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।