বিপণিবিতানের পাশাপাশি এবার জমে উঠেছে এলিফ্যান্ট রোডের জুতার বাজার। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতাদের ভিড় বাড়তে থাকে দোকানগুলোতে। ঈদে পছন্দের পোশাকের সঙ্গে সবাই চায় মানানসই জুতা কিনতে। তাই মানানসই জুতা বাছাই করতে ক্রেতারা ছুটছেন এই দোকান থেকে সেই দোকানে।
রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের জুতা বিক্রি বেশ ভালো বলে জানান ব্যবসায়ীরা। ঈদের বাজারে মেয়েদের পছন্দ ছিমছাম অল্প হিল ও স্লিপার ধরনের স্যান্ডেল।
ফ্যালকন ফ্যাশনের ম্যানেজার মো. জুনায়েদ মিয়া বলেন, এবার বিক্রি ভালো হচ্ছে। দুপুরে তেমন কাস্টমার আসে না। মূলত সন্ধ্যার পরে ক্রেতা বাড়তে থাকে। সেই ভিড় রাত ১২টা পর্যন্ত থাকে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের এখানে লেডিস স্যান্ডেল সর্বনিম্ন মূল্য ৯৫০ টাকা আর সর্বোচ্চ মূল্য ২ হাজার ৫শ। আর ছেলেদের জুতার সর্বনিম্ন মূল্য আড়াই হাজার টাকা। সর্বোচ্চ মূল্য সাড়ে সাত হাজার টাকা।
অরেঞ্জ লাইফ স্টাইলের ম্যানেজার মো. মিলন বলেন, গত বছরের তুলনায় এবারের বিক্রি অনেকটা খারাপ। গত বছর ১৩ দিনে ৩০ লাখ টাকা বিক্রি হলেও এবার পুরো মাসে ৩০ লাখ টাকা বিক্রি হয়নি। ক্রেতা তেমন একটা আসে না। ইফতারের পর মোটামুটি লোক হয়; তা আবার আমাদের চাহিদার তুলনায় অনেক কম।
এলিফ্যান্ট রোড বাটার বিপণন কর্মকর্তা মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, এখন ক্রেতার ভিড় অনেক বেশি। তাই বিক্রিও ভালো হচ্ছে। এবারের ঈদের জুতায় ব্যবহার করা হয়েছে বর্ষা উপযোগী উপকরণ। তবে ডিজাইনে থাকছে আধুনিকতার ছাপ। বাটায় মেয়েদের জুতার সর্বনিম্ন মূল্য ৪৯৯ ,সর্বোচ্চ মূল্য ২ হাজার ৯৯৯ টাকা। শিশুদের বিভিন্ন মানের জুতার সর্বনিম্ন মূল্য ৩৯৯, সর্বোচ্চ মূল্য ২ হাজার ৬৯৯ টাকা। ছেলেদের জুতার সর্বনিম্ন মূল্য ১২৯ টাকা, সর্বোচ্চ মূল্য ১২ হাজার ৯৯৯।
তিনি বলেন, ছেলেদের জুতার মধ্যে এবার ঈদে স্লিপার, কনভার্স ও সুর চাহিদাই বেশি। এ ছাড়া কিছু স্পোর্টস সুও বিক্রি হচ্ছে। চামড়া, রেক্সিন ও কাপড়ের জুতার মধ্যে ডিজাইন ও স্থায়িত্বের ভিত্তিতে দামের হেরফের হয়। এবারো বাচ্চাদের জুতায় রয়েছে বাহারি ডিজাইন ও নতুনত্বের ছোঁয়া। ডোরেমন, মটু-পাতলু কার্টুনসংবলিত জুতাই বিক্রি হচ্ছে বেশি।
এদিকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ঈদে নগদ ছাড়সহ কিস্তিতে জুতা কেনার সুযোগ দিচ্ছে। সঙ্গে ক্যাশব্যাকের অফার তো আছেই। বাটার শোরুম থেকে বাংলা লিংক গ্রাহকরা সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ ছাড়ে জুতা কিনতে পারবেন। এ ছাড়া বিকাশে ১০ ও রকেটে ২০ শতাংশ ক্যাশব্যাক তো আছেই।
ভাইব্রেন্ট সুজের ম্যানেজার মো. সোহেল আরমান বলেন, ঢাকা কলেজ ও ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। তার প্রভাব ৪-৫ দিন ছিল। আমরাও আতঙ্কে ছিলাম, যারা ক্রেতা তারাও আতঙ্কে ছিল। ক্রেতারা তেমন আসেনি। তাই বিক্রিটা অনেক কম হয়েছে। তবে এখন যেভাবে বিক্রি হচ্ছে তাতে আমরা সন্তুষ্ট। মহিলাদের জুতা সর্বোচ্চ মূল্য ৩ হাজার টাকা, সর্বনিম্ন মূল্য ৯০০ টাকা, ছেলেদের সর্বোচ্চ মূল্য সাত হাজার টাকা, সর্বনিম্ন মূল্য ৯০০ টাকা।
ফেরদৌসী আকতার লিমা নামে এক ক্রেতা বলেন, বাটা, অ্যাপেক্সসহ বিভিন্ন শোরুমের মেয়েদের সিøপারের ডিজাইন এবার তেমন ভালো হয়নি। গত বছরের ডিজাইনগুলো অনেক ভালো ছিল। এ ছাড়া দামটাও এবার তুলনামূলকভাবে অনেক বেশী। কিছু কিছু দোকানে আবার আকাশচুম্বী দাম। যেমন- আমরা যে জুতা এক হাজার ৫০০ টাকার কিনেছি, তা এখন কিনতে হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ টাকা।