logo
আপডেট : ২৮ এপ্রিল, ২০২২ ১৯:০৬
হেরেও জামালের শিরোপা উৎসব
ক্রীড়া প্রতিবেদক

হেরেও জামালের শিরোপা উৎসব

ম্যাচে বাজেভাবেই হারল শেখ জামাল। তারপরও ম্যাচ শেষে খেলোয়াড়দের মধ্যে খুশির আমেজ। অনেকে স্টাম্প সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। সব মিলিয়ে উৎসবের আমেজ। এমনটিই হওয়ার কথা। কারণ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা দুদিন আগেই নিশ্চিত হয়ে গেছে শেখ জামালের। শেষ ম্যাচটি ছিল নিতান্ত আনুষ্ঠানিকতার। লিজেন্ডস অব রূপ গঞ্জের সঙ্গে হেরেও তাই চওড়া হাসি শেখ জামাল শিবিরে। অন্যদের চেয়ে আল আমিনের হাসিটা আরো একটু বেশি। একাই ৬ উইকেট নিয়ে ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেন যে তিনিই।

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ দুই দলের এ লড়াই হতে পারত শিরোপা জয়ের মঞ্চ। তবে শেষ ম্যাচের জন্য কিছু ফেলে রাখেনি শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। আগের ম্যাচ জিতেই তারা নিশ্চিত করেছে ঢাকার শীর্ষ ক্রিকেটে নিজেদের প্রথম শিরোপা। বুধবারের এ ম্যাচে প্রাপ্তির সমীকরণ তাই ছিল শুধু লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের। চ্যাম্পিয়নদের ৮ উইকেটে উড়িয়ে সেই চাওয়া পূরণ করেছে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। শেখ জামালকে মাত্র ১১৬ রানে গুটিয়ে দিয়ে রূপগঞ্জ রানার্সআপ হয় ২৫.১ ওভারেই। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা শেখ জামালের ব্যাটিং লাইনআপ গুঁড়িয়ে দেন আল আমিন। ৩১ রানে নেন ৬ উইকেট। লিস্ট-এ ক্রিকেটে ৩২ বছর বয়সি পেসারের এটি পঞ্চম ৫ উইকেট। আল আমিনের উইকেট শিকারের অভিযান শুরু হয় এ ম্যাচে প্রথম ওভার থেকেই। ম্যাচের দ্বিতীয় ডেলিভারিতে অফ-স্টাম্পের বাইরের বল ড্রাইভ করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন সৈকত আলী। পরের বলটি বাতাসে সুইং করে পিচ করে আরো অনেকটা ভেতরে ঢুকে লাগে জহুরুল ইসলামের প্যাডে। তিনে নামা ব্যাটসম্যান এলবিডব্লিউ প্রথম বলেই।

শূন্য রানে ২ উইকেট হারানো দলকে টেনে নেন ইমরুল কায়েস। তাকে ওই সময়টায় সঙ্গ দেন মুশফিকুর রহিম। সেটি আক্ষরিক অর্থেই ‘সঙ্গ’ দেওয়া, কারণ রান করতেই যে ভুলে যান অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান! অবিশ^াস্য হলেও সত্যি, ২৮ বল খেলেও তার রান ছিল শূন্য। এরপর অবশ্য পুষিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন মুশফিক। সাকিব আল হাসানকে মাথার ওপর দিয়ে ছক্কা মারার পরের বলেই আরেকটি ছক্কা মারেন প্রিয় সøগ সুইপে। তবে তার প্রচেষ্টা শেষ পর্যন্ত সফল হতে দেননি মাশরাফি। রূপগঞ্জ অধিনায়কের অফ কাটারে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন মুশফিক ৪৮ বলে ২৫ রান করে। এ উইকেট নিয়ে লিগে মাশরাফির উইকেট হলো ২০টি। এ ৩৮ বছর বয়সেও লিগে ২০ উইকেট হয়ে গেল তার। এরপর নুরুল হাসান সোহানকে নিয়ে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন ইমরুল। সাকিবকে ছক্কায় ওড়ান তিনিও। শেখ জামাল অধিনায়ক ফিফটি করেন ৭০ বলে। ফিফটির পর অবশ্য আর এগোতে পারেননি তিনি। রানআউট হয়ে যান ৫০ রানেই। আল আমিন বোলিংয়ে ফিরেই পান আরেকটি উইকেটের দেখা। দ্বিতীয় স্পেলের প্রথম ওভারে বিদায় করেন ভারতীয় পারভেজ রাসুলকে। একটু পর দারুণ এক বাউন্সারে ফিরিয়ে দেন নুরুল হাসান সোহানকে।

এরপর আর দাঁড়াতে পারেনি শেখ জামালের কোনো ব্যাটসম্যান। ভারতীয় অলরাউন্ডার চিরাগ জানি নেন দুটি উইকেট। আল আমিন শেষ দুটি উইকেট ১ ওভারেই নিয়ে দেখা পান তার পঞ্চম ও ষষ্ঠ শিকারের। ৩২ রানের মধ্যে শেখ জামাল হারায় শেষ ৭ উইকেট। শেষ ৬ ব্যাটসম্যানের কেউ ছুঁতে পারেননি দুই অঙ্ক। সহজ রান তাড়ায় রূপগঞ্জ এগিয়ে যায় অনায়াসেই। ওপেনিংয়ে ইরফান শুক্কুর (১৪) যদিও ব্যর্থ হন আবারো। তবে রকিবুল হাসান এক প্রান্তে থেকে এগিয়ে নেন দলকে। তিনে নেমে ৩৩ বলে ৩৬ রানে ক্যামিও খেলেন সাব্বির রহমান। নাঈম ইসলাম ও রকিবুল শেষ করেন কাজ। ৭৯ বলে ৪০ রানে অপরাজিত থাকেন রকিবুল, ১৪ বলে ২৩ রানে নাঈম। শেষ ৫ ম্যাচে ফিফটি করতে না পারলেও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮৫৯ রান নিয়ে লিগ শেষ করলেন অভিজ্ঞ নাঈম, ঢাকা লিগে তার সেরা মৌসুম। শেখ জামালের পরাজয়ের দিনেও ২ উইকেট নিয়ে পারভেজ রাসুল শেষ করলেন লিগের সর্বোচ্চ ২৮ উইকেট নিয়ে। সঙ্গে ব্যাট হাতে ২৯০ রান করে শেখ জামালের শিরোপা জয়ে সবচেয়ে বড় অবদান এ ভারতীয় ক্রিকেটার। আরেক ভারতীয় অলরাউন্ডার রূপগঞ্জের চিরাগ জানি টুর্নামেন্ট শেষ করলেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৭ উইকেট নিয়ে। ব্যাট হাতে প্রায় ৫০ গড়ে রান করেন তিনি ৫৯৭।