বেতন ও বোনাসের দাবিতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করেছে মির্জাপুরের গোড়াইর নাহিদ কটনমিলের শ্রমিকরা। এসময় পুলিশের লাঠিচার্জ ও রাবার বুলেটে অর্ধশত শ্রমিক আহত হয়। এছাড়া শ্রমিকদের ইটপাটকেল নিক্ষেপে মির্জাপুর থানার ওসিসহ ১০ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে অবরোধ শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলে। এতে করে মহাসড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে সড়কের দুই পাশে প্রায় ১৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে ঈদে ঘরমুখো মানুষকে চরম ভোগান্তির শিকার হয়।
জানা যায়, নাহিদ কটন মিলের শ্রমিকদের ঈদ উপলক্ষে অর্ধেক বোনাস ও অর্ধেক বেতন দিতে চাচ্ছে মালিক। এ কারণে শ্রমিকরা ক্ষিপ্ত হয়ে আন্দোলন শুরু করে। একপর্যায়ে বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের গোড়াই এলাকায় অবস্থান নিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে।
খবর পেয়ে মির্জাপুর থানা পুলিশ ও গোড়াই হাইওয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তারা শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে লঠি চার্জ করলে শ্রমিকরা ক্ষিপ্ত হয়ে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এ সময় পুলিশ বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে।
এভাবে শ্রমিক- পুলিশের প্রায় এক ঘণ্টা ধরে সংঘর্ষ চলে। এত মির্জাপুর থানার ওসি মো. আলম চাঁদসহ ১০ পুলিশ এবং অর্ধশত শ্রমিক আহত হয়। আহত পুলিশ সদস্যদের বিভিন্ন হাসপাতালে এবং শ্রমিকদের কুমুদিনী হাসপতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
নাহিদ কটন মিলে কর্মরত শ্রমিক রেশমা বলেন, আমরা ন্যায় অধিকারের জন্য দাবি করলে কর্তৃপক্ষ পুলিশ দিয়ে আমাদের ওপর হামলা করে। এতে আমাদের অনেক শ্রমিক ভাই-বোন আহত হয়ে হাসপাতালে আছে।
নাহিদ কটন মিলের মহা-ব্যাবস্থাপক শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘শ্রমিকদের ঈদ বোনাস তিনদিন আগেই দেওয়া হয়েছে এবং শ্রমিকদের দাবি অনুযায়ী চলতি মাসের পুরো বেতন দেওয়া হবে।’ এছাড়া আগামী মাসে দুই হাজার শ্রমিক ছাটাই করা হবে বলে তিনি জানান।
টাঙ্গাইলের সহকারী পুলিশ সুপার মির্জাপুর সার্কেল এসএম মুসা বলেন, ‘শ্রমিক বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে শ্রমিকদের ইট-পাটকেল নিক্ষেপে মির্জাপুর থানার ওসিসহ ১০ পলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এ সময় পুলিশ ৪১ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে।’
স্থানীয় সংসদ সদস্য খান আহমেদ শুভ বলেন, ‘শ্রমিক বিক্ষোভের খবর পেয়ে সন্ধ্যা ৬টায় নাহিদ কটন মিলে যাই। সেখানে মিল কর্তৃপক্ষ এবং শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলি। মিল কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের দাবি মেনে নিতে সম্মত হয়েছে। এতে পরিস্থিতি শান্ত হয়েছে।’