logo
আপডেট : ২৯ এপ্রিল, ২০২২ ১৬:১৪
তৃতীয় দিনের মতো কয়লাখনি শ্রমিকদের অবস্থান কর্মসূচি
ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি

তৃতীয় দিনের মতো কয়লাখনি শ্রমিকদের অবস্থান কর্মসূচি

তৃতীয় দিনের মতো শুক্রবারও দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর পার্শ্ববর্তী বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির শ্রমিকরা তাদের পরিবার পরিজনকে সঙ্গে নিয়ে দুইদফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন।

আন্দোলনকারি শ্রমিকদের সঙ্গে খনির অভ্যন্তরে কর্মরত পাঁচ শতাধিক শ্রমিকও সংহতি জানিয়ে অভ্যন্তরে বিক্ষোভ-সমাবেশ শুরু করায় গত বৃহস্পতিবার থেকে খনির ভূগর্ভ থেকে কয়লা উত্তোনের কাজ পুরোপরি বন্ধ হয়ে গেছে।

এদিকে আসন্ন ঈদ উপলক্ষে এবারো গত বৃহস্পতিবার এক হাজার ১০০ জন শ্রমিককে পাঁচ হাজার টাকা করে অর্থ সহায়তা দিয়েছে খনি কর্তৃপক্ষ। এতে শ্রমিকদের ৫৫ লাখ টাকা দিতে হয়েছে খনি কর্তৃপক্ষকে।

বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিনের ব্যানারে দুই দফা দাবিতে আন্দোলনকারী শ্রমিকরা শুক্রবার সকাল থেকেই কর্মসূচি পালন করেন খনি গেটে অবস্থান নেয়। মাঝেমধ্যেই শ্রমিকরা দাবি আদায়ে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে খনির কোল ইয়ার্ড, আবাসিক এবং প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি রবিউল ইসলাম রবি, সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নূর ইসলাম, শ্রমিক নেতা এহসানুল হক সোহাগ, এরশাদ আলী, আবু তাহেরসহ অনেকে।

একই সময়ে আন্দোলনরত বাইরে অবস্থানকারী শ্রমিকদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে খনির অভ্যন্তরে থাকা (কর্মরত) শ্রমিকরাও তাদের কাজ বন্ধ করে খনির ভেতরের অংশে দুই দফা দাবির সমর্থনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। খনির গেটগুলোর বাইরের অংশে আন্দোলনকারীরা আর ভেতর অংশে আন্দোলনের সমর্থনকারী শ্রমিকরা বিক্ষোভ-সমাবেশ করেন।

বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি রবিউল ইসলাম রবি, সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক নূর ইসলাম বলেন, ‘পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী গত বুধবার (২৬ এপ্রিল) সকাল ১১টা থেকে খনি গেটে শ্রমিকরা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে দুই দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছে যা এখনো অব্যাহত। বেকার শ্রমিকদের কাজে যোগদানসহ তাদের বকেয়া বেতন-ভাতা প্রদান এই দুই দফা দাবির বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ কথা বলেননি। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত শ্রমিকরা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে খনি গেটে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।’

এদিকে দুইদফা দাবিতে শ্রমিকদের আন্দোলন এখন খনির বাইরে থেকে ভেতরে চলে যাওয়ায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠেছে। যা যেকোনো সময় অপ্রীতিকর ঘটনার রূপ দিতে পারে বলে অনেকেই আশঙ্কা করছে।

ভূগর্ভ থেকে কয়লা উত্তোলন বন্ধ হওয়ার কথা স্বীকার করে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানী লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান খন বলেন, ‘চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অধীনে কর্মরত বর্তমানে খনির অভ্যন্তরে অবস্থানরত পাঁচ শতাধিক শ্রমিক খনি গেটের বাইরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে ভেতরে আন্দোলন শুরু করায় গত বৃহস্পতিবার থেকে কয়লা উত্তোলন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দু-চারদিন পরই ওই কোল ফেইসের কয়লা উত্তোলন এমনিতেই বন্ধ হয়ে যেত।’

তিনি আরো বলেন, ‘মানবিক কারণে পবিত্র ঈদের অর্থ সহায়তা হিসেবে জনপ্রতি পাঁচ হাজার টাকা করে ৫৫ লাখ টাকা গত বৃহস্পতিবার শ্রমিকদের দেওয়া হয়েছে।

কয়লাখনির সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সকাল থেকেই কয়লাখনি এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।