logo
আপডেট : ২ মে, ২০২২ ১৫:১৭
বোতলজাত সয়াবিন তেল উধাও!
কামরুজ্জামান মিন্টু, ময়মনসিংহ ব্যুরো

বোতলজাত সয়াবিন তেল উধাও!

ঈদের আগের দিন ময়মনসিংহের বাজারগুলোতে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ২০০ টাকায় বিক্রি হলেও বোতলজাত সয়াবিন উধাও হয়ে গেছে। ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটি কিনতে ক্রেতাদের আবারো ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। অসাধু ব্যবসায়ীরা তেলের সরবরাহ কমিয়ে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে বলে মনে করছেন ক্রেতারা।

সোমবার দুপুরে নগরীর মেছুয়া বাজার, নতুন বাজার, সানকিপাড়া, চরপাড়া, শম্ভুগঞ্জসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, দোকানগুলোতে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। সয়াবিন তেলের এক লিটারের বোতল পাওয়া গেলেও চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। ফলে ক্রেতারা তেল না পেয়ে এক দোকান থেকে অন্য দোকানে ছুটছেন। তবে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

নতুন বাজার এলাকার ব্যবসায়ী আরফান মিয়া দৈনিক ভোরের আকাশকে বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে কোম্পানিগুলো বোতলজাত সয়াবিন তেল সরবরাহ করছে না। আগের কেনা বোতলজাত তেল দুইদিন আগেই শেষ হয়েছে। সরবরাহ কম থাকায় বোতলজাত তেল চাহিদা অনুযায়ী ক্রেতারা পাচ্ছে না। এতে আমাদের কারসাজি নেই।’

খোলা সয়াবিন তেল ২০০ টাকা লিটারে বিক্রি করার কারণ কী? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সবাই এই দামে বিক্রি করছে, এজন্য আমিও কয়েক লিটার এমন দামে বিক্রি করলেও এখন ১৮০ টাকায় বিক্রি করছি। সবাই কম দামে বিক্রি করলে আমিও কম দামেই বিক্রি করবো।’

শম্ভুগঞ্জ বাজারের দোকানদার আহসান উল্লাহ জানান, হাতেগোনা কয়েকটি কোম্পানি তেল সরবরাহ করছে। ২০ কার্টন অর্ডার করলে ৫ কার্টন তেল সরবরাহ করছে। পাঁচ লিটার ও দুই লিটার তেল দিচ্ছে না। জিজ্ঞাস করলে বলছে, কোম্পানিতে নেই। ফলে বোতলজাত সয়াবিন তেলের ব্যাপক সংকট দেখা দিয়েছে।

তবে বিক্রেতাদের এসব যুক্তি মানতে নারাজ ক্রেতারা। ঈদের আগ মুহূর্তে বোতলজাত তেলের সংকট তৈরি করে খোলা সয়াবিন তেলের দাম বাড়িয়ে দেওয়ায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।

মোরশেদ মিয়া নামে এক ক্রেতা জানান, শম্ভুগঞ্জ বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ঠিকঠাক দরে কিনতে পারলেও তেল কিনতে গিয়ে মাথা গরম হয়েছে। কী আশ্চর্য বিষয়, এক লিটার খোলা তেলের দাম ২০০ টাকা। এমন দাম বলার পরই তার সঙ্গে দোকানদারের বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। পরে ১৯০ টাকায় কিনতে পেরেছেন তিনি।

ফজলুল হক নামে আরেকজন বলেন, সরবরাহ কমিয়ে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হয়েছে। বাড়ানো হচ্ছে দাম। যে কারণে আবারো তেলের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। অনেকে বোতলজাত তেল না পেয়ে বাড়তি দরে খোলা তেল নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত নিয়মিত বাজার মনিটরিং করলে বিক্রেতাদের কারসাজি বন্ধ হবে।

এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ময়মনসিংহের সহকারী পরিচালক নিশাত মেহের দৈনিক ভোরের আকাশকে বলেন, ‘আমরা নিয়মিত বাজার মনিটরিং করছি। বিভিন্ন পণ্যের দাম বেশি রাখায় ব্যবসায়ীদের জরিমানার আওতায় আনা হয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘হঠাৎ করে কেন ব্যবসায়ীরা বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি করছে না তা তদারকি করা হবে। যদি ইচ্ছে করে বোতলজাত তেলের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে খোলা সয়াবিন তেল বেশি দামে বিক্রি করা হয়, তাহলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’