বিশ্ব ফুটবলে দুজনই পরিচিত মুখ। দুজনই ক্যারিয়ারের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর বয়স ৩৭। আর এডিনসন কাভানির ৩৫। ভিন্ন ভিন্ন ক্লাবে খেললেও বর্তমানে তারা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে সতীর্থ। গত বছর রোনালদো ম্যানইউতে এসেছেন। তার এক বছর আগে কাভানি ম্যানইউর নৌকায় চড়েছেন। একই নৌকার যাত্রী হলেও হঠাৎ করেই সম্পর্কেও দুই প্রান্তে চলে এসেছে তাদের অবস্থান। কাভানি বলেছেন, রোনালদো আসায় তাকে ম্যানইউ ছাড়ার কথা ভাবতে হচ্ছিল। কাভানির সময়টা মোটেও ভালো যাচ্ছে না। ইনজুরির কারণে বেশ নাজুক অবস্থা উরুগুয়ের এ স্ট্রাইকারের। এ মৌসুমে সব প্রতিযোগিতায় মিলে মাত্র ১৮ বার তিনি মাঠে নামতে পেরেছেন। আগের প্রায় প্রতিটি মৌসুমে কোনো না কোনো ট্রফির দেখা পেলেও এবার তাকে শূন্য হাতে থাকতে হচ্ছে। শুধু তাই নয়, আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও খেলার সুযোগ হারিয়েছেন। ব্যক্তিগতভাবে রোনালদো ভালো অবস্থানে থাকলেও স্বাভাবিকভাবেই দলগতভাবে তাদের ভাগ্য একই সূত্রে বাঁধা।
এক সাক্ষাৎকারে কাভানি বলেন, রোনালদো ম্যানইউতে আসায় ভালো হবেÑ একটা সময় আমি এমনটা ভেবেছিলাম। বর্তমান সময়ের বিশ্ব ফুটবলের অবস্থা সম্পর্কে জ্ঞাত থাকায় আমি প্রথমেই আমার ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলি। তাকে বলি, যদি এ ঘটনাটা এক সপ্তাহে আগে ঘটত, তাহলে আমি অন্য ক্লাবের সঙ্গে তোমাকে যোগাযোগের জন্য বলতাম।’ কাভানি আরো বলেন, আমি রোনালদোর সঙ্গে খেলতে চাই না; এ কারণে আমি ক্লাব পরিবর্তন করতে চাইনি। কেননা আমার সঙ্গে তখন তাকে জানার সুযোগ ছিল। সে দারুণ একজন খেলোয়াড়। এ সময়ে ফুটবল কীভাবে চলে অনেক দিন ফুটবলের সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে তা আমি জানি। এ কারণে আমি আমার ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলেছিলাম।’ কাভানি বলেন, ‘পরিস্থিতি সম্পর্কে আরো ভালোভাবে জানতে আমি ম্যানজোরের সঙ্গে কথা বলি। ম্যানইউতে আমি আমার স্বাভাবিক খেলা খেলতে পারা কঠিন হবে, সেই ভেবে আমি কথা বলিনি। কিন্তু কয়েক বছর আগে ফুটবল যেমন ছিল এখন তা আর তেমন নেই। যা হোক, হঠাৎ করে যখন ঘটনা ঘটে গেল, তখন আমি চিন্তা করলাম যতদূর সম্ভব আমরা ভালো করার চেষ্টা করব।’
কাভানি আরো বলেন, ‘ইনজুরির কারণে মৌসুমের বেশিরভাগ সময় আমি মাঠের বাইরে। এ সময়ে আমাকে কঠিন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছে। গত মৌসুম থেকে এ অভিজ্ঞতা ছিল ভিন্ন। ফলে কয়েক মাস পর আমি আবার ম্যনেজারের সঙ্গে কথা বলি। তিনি আমাকে ইতিবাচক থাকার পরামর্শ দেন। তার কথা শুনে আমি ভিন্ন চিন্তা করতে থাকি। একইসঙ্গে সবকিছু ঠিক হয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখতে থাকি। অন্য সব ক্লাবে যেমন সব সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে খেলেছি, এখানেও সেভাবে থাকতে চেয়েছি। প্রথম কয়েক মাস সব ঠিকই ছিল। কিন্তু পরে ইনজুরিতে সব তালগোল পাকিয়ে যায়। ইনজুরির কারণে দূরে থাকতে হচ্ছে।’ অবস্থার বিচারে কাভানি এখন ইংলিশ লিগ ছেড়ে স্প্যানিশ লিগে খেলার চেষ্টা করছেন। সেখানে সফল হলে ভালো, অন্যথায় পর্তুগিজ ক্লাবে ঠিকানার খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা করবেন তিনি।