সিরি ‘এ’তে শুক্রবার রাতে দারুণ এক জয় পেয়েছে ইন্টার মিলান। নিজেদের মাঠে খেলার বাড়তি সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এম্পোলিকে তারা ৪-২ গোলে হারিয়েছে। জোড়া গোল করেছেন আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার লাউতারো মার্টিনেজ।
শুক্রবার রাতে পাওয়া জয়ের ফলে ইন্টার মিলান পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে এসেছে। তবে তা স্থায়ী হতে পারে আবার ক্ষণস্থায়ী। কেননা চির প্রতিদ্বন্দ্বী দল এসি মিলানও শিরোপার জন্য দৌড়াচ্ছে। শুধু তাই নয়, ইন্টারের তুলনায় তারা এখন পর্যন্ত কিছুটা হলেও সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে। একটা ম্যাচ কম খেলেছে তারা। ৩৬ ম্যাচ থেকে ইন্টারের সংগ্রহ ৭৮ পয়েন্ট। অন্যদিকে ৩৫ ম্যাচ থেকে ৭৭ পয়েন্ট নিয়ে এসি মিলান হারানো শীর্ষস্থান পুনরুদ্ধারের অপেক্ষায় রয়েছে। তারা রোববার রাতে পয়েন্ট টেবিলের নবম স্থানে থাকা ভেরোনার বিপক্ষে খেলবে। এ ম্যাচে জয় পেলে এসি মিলান আবার শীর্ষে উঠে আসবে। শুধু তাই নয়, ২০১১ সালের পর আবার লিগ শিরোপা জয়ের সম্ভাবনা উজ্জ্বল করে তুলবে।
বড় জয় পেলেও ম্যাচে ইন্টার মিলানের পা হড়কানোর শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। ম্যাচের শুরুতেই সফরকারী এম্পোলি তাদের চমকে দিয়েছিল। শুধু তাই নয়, রীতিমতো তারা স্বাগতিক দলের জন্য আতঙ্ক হয়ে দেখা দিয়েছিল। ম্যাচের পঞ্চম মিনিটেই ইন্টার মিলানকে চমকে দিয়ে এম্পোলি এগিয়ে গিয়েছিল। গোলটি করেছিলেন আন্দ্রে পিনামন্তি। মৌসুমে এটা ছিল তার ১৩তম গোল। এ গোলে এম্পোলি গোল উৎসবে মেতে উঠলেও ২২ বছর বয়সী পিনামন্তি তাতে যোগ দেননি। কেননা ইন্টার থেকে ধারে এম্পোলির হয়ে খেলছেন তিনি।
এখানেই শেষ নয়, ইন্টারের দুর্গতি। ম্যাচের বয়স আধাঘন্টা হওয়ার আগে শিরোপা প্রত্যাশী দলটা দুই গোলে পিছিয়ে পড়ে। ২৮ মিনিটে ক্রিস্টইয়ান আসলানি গোল করে ব্যবধান ২-০ করেন। এর আগেও একবার এম্পোলি ইন্টারের জালে বল ফেলেছিল। কিন্তু ভিএআর দেখে রেফারির অফসাইডের কারণে তা বাতিল করে দেন।
এ অবস্থায় ইন্টারের ম্যাচে ফেরা কঠিন হয়ে পড়েছিল। কিন্তু তাদের উদ্ধারে এগিয়ে আসে এম্পোলি। বিরতির বাঁশি বাজার আগেই ওন গোলে ইন্টার ব্যবধান কমায়। সেই সঙ্গে ম্যাচে ফিরে আসার একটা আলোও তারা দেখতে পায়। ৪০ মিনিটে ইন্টারের প্রাণ স্পন্দন ফিরিয়ে আনা গোলটি করেন সিমোন রোমাগনোলি। আর বিরতির আগেই লাউতারো মার্টিনেজের গোলে সমতা ফেরান ইন্টার। একের পর এক আক্রমণে এ সময় তারা এম্পোলিকে ব্যতিব্যস্ত করে তুলেছিল। ৪৫ মিনিটে তারই সুফল ঘরে তোলেন মার্টিনেজ। লিগে এটা ছিল মার্টিনেজের ১৮তম গোল।
লাউতারো মার্টিনেজ ৬৪ মিনিটের সময় তার দ্বিতীয় গোলটি করেন। এ গোলেই ইন্টার মিলান ৩-২ ব্যবধানে এগিয়ে যায়। আর ইনজুরি সময়ে ইন্টারের পুরো তিন পয়েন্ট নিশ্চিত করেন অ্যালেক্সিস সানচেজ।
এ জয়ে ইন্টার মিলান আবার শীর্ষে ফিরেছে। সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে শিরোপা জয়ের। তবে ভাগ্যটা তাদের হাতে নেই, আছে এসি মিলানের হাতে। রোববার এসি মিলান জয় পেলে ইন্টার আবার দ্বিতীয় স্থানে নেমে আসবে। তবে আগামী বুধবার ইন্টার মিলান শিরোপা উৎসবে মেতে উঠতে পারে। লিগ শিরোপা নয়, ইতালিয়ান কাজ জয়ের উৎসব করতে পারবে। এদিন ইতালিয়ান কাপের ফাইনালে তারা জুভেন্টাসের মুখোমুখি হবে।
এদিকে জুভেন্টাস তৃতীয় স্থানে উঠে আসার সুযোগ হারিয়েছে। শুক্রবার রাতে তারা পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে থাকা জেনোয়ার কাছে ১-২ গোলে হেরে গেছে। ম্যাচের তিনটি গোলই হয় দ্বিতীয়ার্ধে। এ অর্ধের শুরুতে পাউলো দিবালার গোলে জুভেন্টাস এগিয়ে গেলেও তা ধরে রাখতে পারেনি। ৮৭ মিনিট ও ইনজুরি সময়ে দুই গোল হজম করে হার নিয়ে মাঠ ছাড়ে তারা। এ গোলের মাঝ দিয়ে দিবালা গোল সংখ্যা জুভেন্টাসের সাবেক খেলোয়াড় রবার্তো ব্যাজিওর পাশে দাঁড়ালেন। উভয়ের গোলসংখ্যা এখন ১১৫।