বিনা টিকিটে ট্রেনে ভ্রমণ করা যাত্রীরা রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনের আত্মীয় নন। শনিবার (৭ মে) গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এমনটা দাবি করেছেন।
প্রসঙ্গত, রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনের আত্মীয় পরিচয়ে বিনা টিকিটে ভ্রমণকারী তিন ট্রেনযাত্রীকে জরিমানা করায় ওই ট্রেনের ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরীক্ষককে (টিটিই) সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
গত বুধবার (৪ মে) দিবাগত রাতে খুলনা থেকে ঢাকাগামী আন্তঃনগর সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনে জরিমানার ঘটনা ঘটে।
পরে বৃহস্পতিবার (৫ মে) বিকেলে ঈশ্বরদীর পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (ডিসিও) নাসির উদ্দিনের নির্দেশে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
বরখাস্ত হওয়া টিটিই মো. শফিকুল ইসলাম রেলওয়ে জংশন ঈশ্বরদীর টিটিই হেডকোয়ার্টারের সঙ্গে যুক্ত।
তিনি জানান, বরখাস্ত করার পর থেকে তিনি দায়িত্ব পালন করছেন না। বিষয়টি রেল কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
শনিবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত খবর ফলাও করে প্রচার হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রেলমন্ত্রীকে নিয়ে ট্রল হতে থাকে।
অনেকে ঘটনার জন্য রেল মন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক দুঃখ প্রকাশ এমনকি পদত্যাগেরও দাবি করেছেন। যার প্রেক্ষিতে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন রেলমন্ত্রী।
সুজন বলেন, ট্রেনে বিনা টিকিটে আমার আত্মীয় পরিচয়ে ভ্রমণ করা ব্যক্তিদের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। নাম ভাঙিয়ে কেউ হয়তো সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করেছে। ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।
তিনি বলেন, ঘটনাটি শনিবার সকালেই শুনেছি। রেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছ থেকে জানতে পেরেছি, ওই টিটিই বিনা টিকিটের যাত্রীদের সঙ্গে অত্যন্ত খারাপ আচরণ করেছেন। সে কারণেই তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
রেলের দাপ্তরিক কার্যক্রমের সঙ্গে মন্ত্রীর কোনো সংযোগ নেই জানিয়ে নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো আত্মীয় জড়িত নন।
রেল কর্মকর্তারা ওই টিটিইর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে আমি কিছুই জানতাম না।’
সরকার রেলসেবা বাড়াতে কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিনা টিকিটের যাত্রী যদি মন্ত্রীর আত্মীয়ও হয় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।
একইভাবে কোনো রেল কর্মকর্তা যদি যাত্রীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন, তাকেও শাস্তি পেতে হবে। যাত্রীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করার কারণে টিটিইর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
রেলমন্ত্রী আরো বলেন, মাঝেমধ্যেই টিটিইরা বিভিন্নভাবে যাত্রীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন, বিভিন্নভাবে হেনস্তা করেন। এমন অভিযোগ আমরা প্রায়ই পাচ্ছি।
তবে লোকবল সংকটের কারণে আমরা এসবের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারি না। তবে একেবারেই ছাড় দিলে রেলের দুর্নাম হয়ে যায়। তাই টিটিইদের বিরুদ্ধে এমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়।