আইনের খসড়াটি ঢেলে সাজাতে হবে। উপাত্ত সুরক্ষা আইনে খসড়াটিতে সরকারি প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। একই সঙ্গে এটি সংবিধানের সঙ্গেও সাংঘর্ষিক। বলে মন্তব্য করেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
সোমবার (৭ মে) টিআইবি আয়োজন ‘উপাত্ত সুরক্ষা আইন, ২০২২ (খসড়া) পর্যালোচনা ও সুপারিশ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানটি তিনিে এ কথা বলেন।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, উপাত্ত সুরক্ষার নামে সরকারি প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এতে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ক্ষেত্রে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। আইনের শিরোনামটিও বিভ্রান্ত। প্রায়োগিক দুর্বলতা রয়েছে।
তিনি বলেন, এই আইনে পুলিশকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমি পুলিশের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছি না। তবে এটি সরকারের অন্য কর্তৃপক্ষের কাছে দেওয়া উচিত। এছাড়া ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সিকে সীমাহীন ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। ফলে এই ক্ষমতা অপব্যবহারের সুযোগ থাকবে। ফলে এই আইনটি কালো আইনে রুপান্তর হবে। এটি সংবিধানের সঙ্গেও এটি সাংঘর্ষিক। তাই এই আইনের খসড়াটি ঢেলে সাজানো উচিত।
তিনি আরও বলেন, দেশের কোনো কমিশন স্বাধীন হিসেবে কার্যকর নয়। তাই বলে মাথা ব্যথার জন্য মাথা কেটে ফেলে দিতে পারি না। সব কমিশন অকার্যকর হতে পারে, কিন্তু ডাটা সুরক্ষার জন্য স্বাধীন কর্তৃপক্ষের হাতে কর্তৃত্ব দিতে হবে। ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সির হাতে রাখা যাবে না।
বর্তমানে ইন্টারনেট প্রতিবেশ ব্যবস্থায় যেখানে সবক্ষেত্রে ব্যক্তিগত তথ্যের যথেচ্ছ ব্যবহার ব্যবহার হচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষাবিষয়ক একটি মাত্র আইন দিয়ে সব ধরনের অবস্থা মোকাবেলা করা সহজ নয় বা চিন্তা করা উচিতও নয়। বরং এটি যথেষ্ট ঝামেলাপূর্ণ কাজ। তারপরও ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে এ বিষয়ে একটি আইন করার উদ্যোগ গ্রহণকে আমরা অবশ্যই সাধুবাদ জানাই।
তবে দেখা যাচ্ছে যে, কেবল একটি আইন করার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়েছে বলেই এই আইনটিএ একটি খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। কিন্তু, এর বাস্তবায়নের বিভিন্ন দিকগুলো যথাযথভাবে বিবেচনা করা হয়নি। ধারণা করতে অসুবিধা হয় না যে, এর ফলে এটি মূল উদ্দেশ্য অর্জনে ব্যর্থ হবে এবং তড়িঘড়ি করে প্রণয়ন করা অন্যান্য আইন, বিশেষ করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ এর অপপ্রয়োগের মতোই মারাত্মক সমালোচনার জন্ম দিবে।