যুক্তরাষ্ট্রের কাছে জিএসপি (জেনারেলাইজড সিস্টেম অফ প্রিফারেন্সেস) সুবিধা চায় না বাংলাদেশ। স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পথে থাকা বাংলাদেশ দেশটির কাছে এখন মুক্ত বাণিজ্যে (এফটিএ) সুবিধা চায়।
সোমবার (৯ মে) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল এর প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জিএসপি নিয়ে রাজনৈতিকভাবে খুবই কথা বলি। ইন্ট্যান্স অব টোটাল মানি ইজ নট এ বিগ ডিল। আমাদের গার্মেন্টস পণ্য তারা প্রায় সাড়ে ১৫ শতাংশ ট্যারিফ চার্জ করে। আর টিকফার আওতার দেশগুলোকে ৫ শতাংশ শুল্ক চার্জ করে থাকে। আমরা শুল্ক কমানোর জন্য বলেছি। আমরা এখন এলডিসি উত্তরণের পথে, আমরা চাই মুক্ত বাণিজ্য সুবিধা।’
‘বাংলাদেশকে মার্কিন প্রতিনিধিদলের কাছে রাইজিং স্টার হিসেবে অবহিত করেছেন বলে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মালয়েশিয়া ও মিয়ানমারসহ অন্যান্য দেশগুলোতে মার্কিন বিনিয়োগ অনেক বেশি। সে হিসেবে বাংলাদেশে তাদের তুলনামূলক বিনিয়োগ অনেক কম। আমাদের এখানে দেশটির প্রায় ৫ ট্রিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের মধ্যে ৯০ ভাগ বিনিয়োগই জ্বালানি খাতে রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আইটি খাত, নবায়ণযোগ্য জ্বালানি ও ব্লু-ইকোনোমিসহ আমাদের এখানে বিনিয়োগের অনেক ক্ষেত্র ও সুযোগ রয়েছে। সেগুলোতে বিনিয়োগ করতে বলেছি, এতে তারাই লাভবান হবে। বিশেষ করে আমাদের নবায়ণযোগ্য জ্বালানী খুবই কম। এ খাতে টেকনোলজিসহ অন্যান্য সুবিধা চেয়েছি। এছাড়া প্রায় সাড়ে ৬ লাখ আইটি ফ্রিল্যান্স আমাদের রয়েছে, এ খাতেও টেকনোলজির সুবিধা আমাদের দরকার।'
ড. মোমেন বলেন, ‘বিজনেস কাউন্সিলে ২৭ জন ডেলিগেশন এসেছে। বাংলাদেশ নিয়ে আগে তাদের খুব একটা আগ্রহ না থাকলেও এখন একটু আগ্রহ তৈরি হয়েছে। আমরা এটি জিইয়ে রাখতে চাই।’
তিনি বলেন, ’তারা এমন এক সময়ে এসেছে যে, আগামী জুনের ২ তারিখে ’জয়েন্ট কনসালটিটিভ’ বৈঠক রয়েছে। আমেরিকার ব্যবসায়ীরা অনেক ক্ষমতাধর, তারাই অনেক কিছু 'রান' করে। তাদের সঙ্গে বহু দেশের সম্পর্ক শুধু বাণিজ্যকেন্দ্রিক। আমাদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো হলে এগুলোও আস্তে-ধীরে আসবে।’
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের বিজনেস কাউন্সিল বৈঠক সূত্র ও কূটনৈতিক সূত্র ভোরের আকাশকে জানিয়েছে, দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক সম্পর্কে পরবর্তী ৫০ বছরের জন্য ভিত্তি স্থাপন করবে। কারণ বাংলাদেশ ‘সহায়তা-নির্ভর’ অর্থনীতি থেকে ‘বিনিয়োগ-চালিত’ অর্থনীতিতে রূপান্তরিত হবে।
ইউএস-বাংলাদেশ সম্পর্কের গুরুত্ব উল্লেখ করে তারা বলেন, প্রবৃদ্ধির মূল ক্ষেত্র রয়েছে যেখানে মার্কিন কোম্পানিগুলো বাংলাদেশকে সহায়তা করতে পারে। বিশেষ করে টেলিকম অবকাঠামো, ডিজিটাল অর্থনীতি, ওষুধ, ব্লু-অর্থনীতি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, আর্থিক প্রযুক্তি এবং ডিজিটাল পেমেন্ট খাতেও তারা এগিয়ে আসতে পারে।
তারা জানান, দেশটির বিনিয়োগকারীদের কাছে বাংলাদেশের ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং ২৭টি হাই-টেক পার্কে বিনিয়োগের বিষয়ও জোড়ালোভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ইনভেস্টমেন্ট পোর্টফোলিও ডাইভারসিফিকেশন করারও চেস্টা চলছে।