logo
আপডেট : ১১ মে, ২০২২ ১৩:২৭
হাওরাঞ্চলে ধান শুকাতে বাগড়া দিচ্ছে বৃষ্টি
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি


হাওরাঞ্চলে ধান শুকাতে বাগড়া দিচ্ছে বৃষ্টি

সদর উপজেলার কাওয়াদীঘি হাওরের কাদিপুর এলাকার তোলা ছবি

প্রথমে পানির ঢল, এরপর শ্রমিক সংকট, পরিশেষে বৃষ্টির বাগড়া। সব কিছুই মাথা পেতে নিতে হচ্ছে হাওরের কৃষকদের। সবশেষ দুই দিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে অনবরত। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির কারণে বিশেষ করে মৌলবাজারের হাওরাঞ্চলের কৃষকেরা বিপাকে পড়েছেন। কাঁচাধান ঘরে তুললেও শুকাতে পারছেন বৃষ্টির জন্য।

জেলার কাওয়াদীঘি হাওর এলাকার কাদিপুর গ্রামের কৃষকরা জানান, বেশি ও আগাম ফসল পাবার আশায় বোরো মৌসুমে বিভিন্ন জাতের ধান চাষাবাদ করেন তারা। ফলন ভালো হলে ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন এমন আশায় অধিকাংশ কৃষক ধারদেনা করে চাষাবাদ করেছিলেন। তাদের মাথায় এখনো ঋণের বোঝা। ধার পরিশোধে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।

চলতি মৌসুমে আগাম জাতের ধানে এবার খানিকটা ধাক্কা খেয়েছেন তারা। আর বাকিগুলোর কী হবে সে শঙ্কায় আছেন হাওর পাড়ের কৃষকেরা। এর মধ্যে টানা বৃষ্টিপাতের ফলে ধান মাড়াই, সেদ্ধ ও শুকানো নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়ছেন তারা।

কাদিপুর গ্রামের কৃষক মুকুন্দ নমঃশূূদ্র বলেন, ‘এ বছর খরায় ও চিটায় ধান কম পেয়েছি, যা পেয়েছি তা ঘরে তুলছি। ধান বাড়ির পাশে মাঠে শুকাতে দিয়েছিলাম। তবে দুই দিনের বৃষ্টিতে ধান শুকাতে পারছি না।’

কৃষানি সরলা সরকার বলেন, ‘আমরা কাজের মানুষ, কাজ ছাড়া বসে থাকলে লস হয়। এমনিতে ধান কম এখন বৃষ্টির কারণে ধান সেদ্ধ ও শুকাতে পারছি না।’

জানা গেছে, হাওরাঞ্চলের কৃষক পরিবারগুলো মূলত বোরো ফসলের ওপর নির্ভরশীল। ভালো ফলন হলে মৌলিক চাহিদা মিটিয়ে তাদের জীবনযাপন সুখকর হয়। ফলন খারাপ হলে সারা বছর ধারদেনা করে চলতে হয়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজার এ বছর ৫৬ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। তবে চাষাবাদ হয়েছে ৫৭ হাজার ৫৭০ হেক্টর জমিতে।

হাওর ঘুরে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ধানকাটা প্রায় শেষের পথে। আগাম জাতের ধান ‘ব্রি-২৮’ পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ব্রি-২৯ ও প্রত্যাশা অনুযায়ী হয়নি। তবে হাইব্রিড ধান ভালো হয়েছে। তবে শঙ্কা ছিল অতিবৃষ্টি ও বন্যার। এ শঙ্কা এখন আর নেই। কিন্তু গেল দুই দিন গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির জন্য কাটা ধান শুকাতে পারছে না অনেক কৃষক পরিবার।

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কাজী লুৎফুল বারী বলেন, ‘মূল হাওরের ধানকাটা শেষ। এখন হাওরের ওপর অংশে ধানকাটা হচ্ছে। বৃষ্টির সময় বৃষ্টিপাত কিছু হবে। তবে এ অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ধান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা আর নেই।’