অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে, বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিদেশ সফরে যেতে পারবেন না।
বুধবার(১১ মে) দুপুরে ভার্চুয়ালি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, আমরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখন যারা বিদেশ যাচ্ছেন, তাদের এগুলোর অ্যাপ্রুভাল আগে নেওয়া ছিল। সেসব ক্ষেত্রে আমরা অনুমোদন দিয়েছি। পরিষ্কারভাবে প্রধানমন্ত্রী বলে দিয়েছেন, প্রয়োজন না থাকলে বিদেশ সফর আর নয়। যদি কোনো বিশেষ প্রয়োজন হয়, তাহলে তারা যাবেন। অন্যথায় কেউ যাবেন না। এটা কমানো হবে।
প্রকল্প বিষয়ে তিনি বলেন, অনেক প্রকল্প আছে যেগুলো এখন না করে ছয় মাস পর করলে কোনো সমস্যা বা ক্ষতি হবে না। আমরা সেগুলোকে বাতিল না করে সময় পিছিয়েছি।
জিডিপির হিসাব নিয়ে অর্থনীতিবিদদের সংশয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা সব সময় যেভাবে জিডিপির হিসাব করি একইভাবে এবারেরটিও করছি। আমরা কোনো কোম্পানিও যুক্ত করিনি। আমরা যেভাবে হিসাব করতাম, সেখানেও পরিবর্তন আনিনি। আমি মনে করি আমরা ঠিক আছি। আমরা যে তথ্য দিয়েছি সেগুলো দেশের মানুষের জন্য।
অর্থনীতিবিদদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমরা তো ভয় পাই না। আমরা চাই আপনারা পরামর্শ দেবেন। এ পর্যন্ত আমরা যা বলেছি, আইএমএফ-ওয়ার্ল্ড ব্যাংকসহ অন্যান্য কেউ তো আপত্তি করেনি। তারা আমাদের সঙ্গে একমত, সেটা দেখলেই বোঝা যায়। চারদিকে তাকালেই বুঝতে পারবেন দেশের অর্থনীতি কতটা শক্তিশালী ও বেগবান।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সময় যখন কঠিন তখন আপনাকে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমরা যেভাবে চলছি সারাবিশ্বের অবস্থাও একই রকম। বিশ্বের সঙ্গে আমাদের একীভূত হয়ে কাজ করতে হয়। বিশ্বের যে সার্বিক অবস্থা সেটি বিবেচনায় নিয়ে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সুসময়ের জন্য এক্সটারনাল ভার্নাবিলিটি সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত অনেক কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে।
তিনি বলেন, কঠিন সিদ্ধান্ত বলতে আমাদের দেশের অর্থনীতির চাকা বন্ধ হয়ে যাবে, আমাদের উন্নয়ন বন্ধ হয়ে যাবে, আমাদের স্বাভাবিক অবস্থায় কোনো রকম ঘাটতি আসবে সেরকম কিছু নয়। যেমন রাসায়নিক আইটেম এখন না কিনে দুই মাস বা ছয়মাস পর কিনতে পারি। যেসব প্রকল্প আমরা করতে চেয়েছিলাম, আমরা যদি মনে করি সেগুলো এখন না করলেও সমস্যা নাই সেগুলোকে আমরা পরবর্তী সময়ের জন্য রেখে দেবো, এভাবে আমরা সমন্বয় করছি। এখানে কোনো কিছু কম না, শুধু সময় কার্যকরভাবে সমন্বয় করতে চাই। আমাদের ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে আশা করি অর্থনীতির গতিশীলতা হারাবে না।
কতদিন এভাবে সমন্বয় করতে হবে জানতে চাইলে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আপনি বলতে পারবেন না রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ কবে থামবে। মূল কারণ তো একটাই, এ মুহূর্তে কোভিড নাই। কোভিড মহামারি সারাবিশ্বে কমে গেছে সেজন্য শুকরিয়া আদায় করি। এটির প্রভাব আর নেগেটিভলি পড়ছে না। এখন শুধুমাত্র যুদ্ধের প্রভাব সারাবিশ্বে ছড়িয়ে গেছে। সবাই এটা নিয়ে কষ্ট পাচ্ছে।
তিনি বলেন, আজকের অনুমোদিত প্রস্তাবের মধ্যে একটি প্রকল্প খুব অসাধারণ। সেটি হলো আমাদের ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে সারাদেশে জায়গা-জমি নিয়ে যেগুলোর কাগজপত্র নেই সেগুলো নিয়ে অনেক মামলা মোকাদ্দমায় যেতে হয়। সেই মামলা মোকাদ্দমা সহজে শেষ হয় না। আমরা বিশ্বাস করি সেটি থেকে দেশের মানুষ মুক্তি পাবে। কারণ এই প্রকল্পের মাধ্যমে ভূমির কাজগুলো সব ডিজিটালাইজড হবে। দেখা যাবে সবকিছুই এর আওতায় চলে আসবে। এটি খুব ভালো কাজ, দেশের মানুষের জন্য এটি কল্যাণকর। তাই এটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।