ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর লালপোলে নির্মিত হবে ফ্লাইওভার। নিরাপদে ফেনী-সোনাগাজী আঞ্চলিক যোগাযোগে প্রতিবন্ধকতা নিরসনে ন্যূনতম ছয় লেন ফ্লাইওভার নির্মাণের সিদ্ধান্ত এরই মধ্যে গৃহীত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ফেনী সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বিনয় কুমার পাল।
তিনি জানান, এ ফ্লাইওভারটির দৈর্ঘ্য হবে ৬০০ মিটার। ঢাকা-চট্টগ্রামগামী যানবানহনগুলো সরাসরি ফ্লাইওভার ব্যবহার করে যাতায়াত করবে। ফেনী-সোনাগাজীতে চলাচলকারী পরিবহণগুলো ফ্লাইওভারের নিচ দিয়ে মহাসড়ক পারাপার করবে। সম্প্রতি এমন সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট দপ্তরে গৃহীত হয়েছে। শিগগিরই পরের কার্যক্রম শুরু করা হবে।
ফ্লাইওভার নির্মাণের এ সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে ফেনীর দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হতে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয়রা।
নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, ইকোনমিক জোনের চার লেন সড়ক ও ভবিষ্যৎ ছয় লেন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বিবেচনায় রেখে নকশা প্রণয়ন করা হচ্ছে। প্রাথমিক কাজগুলো সম্পন্নের পর দরপত্র আহ্বান করা হবে। প্রকল্প শেষ হতে সর্বোচ্চ তিন বছর সময় লাগতে পারে।
লালপোলে মহাসড়ক পারাপারে বিকল্প ব্যবস্থার দাবি বহু বছরের। এমপি ও মন্ত্রীর ঘোষণার পরও এতদিন কোনো অগ্রগতি পরিলক্ষিত না হওয়ায় যাত্রী অসন্তোষ বাড়ছিল।
১০ বছর আগে পিরোজপুর থেকে জীবিকার খোঁজে ফেনী এসেছিলেন সবুর। এক সময় নতুন বউকে নিয়ে এখানেই সংসার পাতেন। ২০১৮ সালে লালপোল ক্রসিংয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় স্ত্রীকে হারান সবুর। সবুরের মতো অনেকেই ফেনী-সোনাগাজী লালপোল মহাসড়ক ক্রসিংয়ে দুর্ঘটনায় আপনজন হারিয়েছেন। তবে কতজন এখানে হতাহত হয়েছেন এর সঠিক পরিসংখ্যান নেই।
ফেনীবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি, মহাসড়কে দুর্ঘটনা রোধে লালপোলে বিকল্প ব্যবস্থা জরুরি। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) নিজাম উদ্দিন হাজারী তাঁর ইশতেহারে লালপোলে ওভারপাস অথবা আন্ডারপাস নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিলেন।
নিজের প্রতিজ্ঞা পূরণ হতে যাচ্ছে জেনে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ফেনী-২ আসনের এমপি। তিনি বলেন, ফেনীবাসীর দীর্ঘদিনের একটি দাবি পূরণ হতে যাচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এটি সরকারের তরফ থেকে ফেনীবাসীর জন্য একটি উপহার।
নিজাম হাজারী আরো বলেন, জনদুর্ভোগ কমাতে লালপোলে ফ্লাইওভার নির্মাণ করতে আমার প্রচেষ্টা অব্যাহত ছিল। এ ব্যাপারে আমি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করেছি এবং ফেনীর মানুষের দাবি আদায় করতে পেরেছি। এটি নির্মিত হলে ফেনীর দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা নিরাপদ হবে, সড়ক দুর্ঘটনাও কমে যাবে।