জমি নিয়ে বিরোধ থাকায় ধান কাটতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন নেত্রকোনার মদনের নায়েকপুর এলাকার শ্রমিক খায়রুল মিয়া (২৯)।
তবু অন্য শ্রমিকদের নিয়ে ধান কেটে দিতে খায়রুল মিয়াকে জোর করা হয়। দেয়া হয় হুমকিও। তাতেও নিজের সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন দিনমজুর খায়রুল।
এই ধান না কাটার সিদ্ধান্তই কাল হয়ে দাঁড়ায় তার জীবনে। পেটানোর পর কাস্তে দিয়ে গলা কেটে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় তাকে।
এ ঘটনায় জড়িত ঘাতক দুই ভাই শফিকুল ইসলাম ও মোস্তাকিন ইসলামকে গ্রেপ্তারের পর এ তথ্য জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
বৃহস্পতিবার (১২মে) রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) মুক্তা ধর বলেন,
গত বুধবার গাজীপুরের গাছা থানার শরীফপুর এলাকা থেকে ঘাতক দুই ভাইকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক জ্ঞিাসাবাদে তারা জানিয়েছে, তাদের দুলাভাই হক মিয়া একই এলাকায় ৪০ শতাংশ জমি কিনে ধান চাষ করেন।
জমি বিক্রেতা এখলাছ মিয়ার ভাই এলাই মিয়া ওই জমির অর্ধেক অংশের মালিকানা দাবি করে তাদের দুলাভাইকে ধান কাটতে নিষেধ করেন।
তখন তাদের দুলাভাই লোকজনসহ ভিকটিম খাইরুল মিয়ার কাছে গিয়ে অন্যান্য শ্রমিক নিয়ে জমির ধান কেটে দেয়ার জন্য বলেন।
কিন্তু বিরোধপূর্ণ জমিতে ধান কাটতে গেলে দাঙ্গা-হাঙ্গামার শঙ্কা থাকায় খাইরুল মিয়া ধান কাটতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
মুক্তা ধর বলেন, ধান কেটে না দিলে তাকে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়ে হক মিয়া চলে যান। গত ৫ মে সকালে খাইরুল মিয়া তার গরুর ঘাস কাটছিলেন।
এ সময় আসামিরা এসে দেখেন ধান না কেটে খাইরুল মিয়া ঘাস কাটছেন।
ঘাস কাটা বন্ধ করে জমির ধান কাটতে বললে খাইরুল আবার অপারগতা প্রকাশ করে।
এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে খাইরুলকে মারপিট করতে থাকেন।
এক পর্যায়ে খাইরুলের হাতের ঘাস কাটার কাস্তে ছিনিয়ে নিয়ে তা দিয়ে তার গলায় আঘাত করেন শফিকুল।
তখন অন্য আসামিরা তার মৃত্যু নিশ্চিত করতে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
চিৎকারে শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে গিয়ে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেন।
পরবর্তীতে মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।