logo
আপডেট : ১৫ মে, ২০২২ ০৬:৪৩
এফএ কাপ
চেলসিকে আবার টাইব্রেকারে হারিয়ে লিভারপুলের শিরোপা জয়
ক্রীড়া ডেস্ক

চেলসিকে আবার টাইব্রেকারে হারিয়ে লিভারপুলের শিরোপা জয়

আরো একবার নাটকীয়তা। তারই ধারাবাহিকতায় লিভারপুলের শো কেসে আরো একটা শিরোপা যোগ হলো। শনিবার রাতে ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এফএ কাপের ফাইনালে লিভারপুল ট্রাইবেক্রার ৬-৫ গোলে চেলসিকে হারিয়ে শিরোপা জয় করেছে। নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ের খেলা গোলশূন্য ড্র হয়েছিল। এ জয়ের ফলে মৌসুমে চার শিরোপা সম্ভাবনা টিকিয়ে রাখলো ইয়ুর্গেন ক্লপের লিভারপুল।

গত ফেব্রুয়ারিতে লিভারপুল লিগ কাপ জয় করেছিল। তার সঙ্গে এবার যোগ হলো এফএ কাপ। তাদের সামনে এখন প্রিমিয়ার লিগ ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে উঠেছে তারা। শিরোপা জয়ে রিয়াল মাদ্রিদের মুখোমুখি হবে ক্লপের দল। অর্থাৎ একটা ম্যাচ জিতলেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগ হবে লিভারপুলের। সে সঙ্গে শিরোপার সংখ্যা হবে তিন। তবে প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা জয়টা তাদের জন্য বেশ কঠিন। কেননা লিগের নিয়ন্ত্রণ আর তাদের হাতে নেই। বাকি থাকা দুই ম্যাচ তো তাদের জিততেই হবে। সে সঙ্গে ম্যানচেস্টার সিটির রেজাল্টের অপেক্ষায় থাকতে হবে। দুই পয়েন্ট পিছিয়ে থাকায় লিভারপুলের জন্য প্রিমিয়ার লিগ জয়টা কঠিনই হবে।

শনিবার ১২০ মিনিটের খেলায় কোনো দলই গোল করতে পারেনি। ফলে খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। আর এটা ছিল সেই লিগ কাপের যেনো কার্বন কপি। ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত লিগ কাপের ফাইনালেও কোনো দল নির্ধারিত সময় গোল করতে না পারায় খেলা টাইব্রেকারে নিষ্পত্তি হয়েছিল। তবে সেখানে ছিল নাটকীয়তায় ভরপুর। মোট ২২ শটে নিষ্পত্তি হয়েছিল ফল। এবার নিতে হয়েছে ১৪টি শট। সাফল্য ও ব্যর্থতার পর লিভারপুল ৬-৫ গোলে জয় পায়।

চেলসির জন্য এ হার বড়ই বিব্রতকর। কেননা টানা তিন ফাইনালে তাদেরকে রানার্স আপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হলো। ২০২০ সালে আর্সেনালের কাছে ফাইনালে হারে তারা। আর গত বছর তাদেরকে হতাশ করে শিরোপা জয়োৎসবক করে লিচেস্টার সিটি।

টাইব্রেকারে ভাগ্যের জোরো লিভারপুল জয় পেয়েছে তা বলাটা সমীচীন হবে না। ম্যাচেও তাদের আধিপত্য ছিল। লুইস ডিয়াজ শুরুতেই দলকে এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। ট্রেন্ট আর্নল্ডের কাছ থেকে বল পেয়ে যে শট নিয়েছিলেন তা এডুয়ার্ড মেন্ডি ফিরিয়ে দেন। লিভারপুলের এই চাপ দারুণভাবে ফিরিয়ে দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিল চেলসি। কিন্তু সে সুযোগটা তারা কাজে লাগাতে পারেনি। তবে ৩৩ মিনিটে লিভারপুলকে বড় ধাক্কা সামলাতে হয়। দলের প্রাণ ভোমরা মোহাম্মদ সালাহ ইনজুরিতে পড়ে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন। দিয়াগো জোতা তার পরিবর্তে মাঠে এসে বিরতির আগেই দলকে এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন।

ম্যাচের সবচেয়ে সহজ সুযোগটি পেয়েছিলেন জেমস মিলনার। অ্যান্ডি রবার্টসনের কাছ থেকে বল পেয়ে তিনি যে শটটি নেন তা পোস্টে লেগে ফিরে আসে। একের পর এক সুযোগ নষ্ট করা লিভারপুলকে অতিরিক্ত সময়ের খেলা গড়ানোর আগে আরো একটা বড় ধাক্কা হজম করতে হয়। ইনজুরির কারণে এবার ভির্জিল ভ্যান ডিক মাঠ ছেড়ে যান। তার পরিবর্তে আসেন জোয়েল মাতিপ।

নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ে খেলায় কোনো গোল না হওয়ায় টাইব্রেকারের পথে হাঁটতে হয়। প্রথম পাঁচ শটের লড়াইয়ে লিভারপুলের সামনে শিরোপা উৎসব করার সুযোগ চলে এসেছিল। কিন্তু দলের হয়ে পঞ্চম শট নেওয়া সাদিও মানে গোল করতে ব্যর্থ হওয়ায় লিভারপুলকে যেমন হতাশ হতে হয় তেমনি চেলসির সামনে জয়ের সম্ভাবনা তৈরি হয়। কিন্তু সে সুযোগ তারা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়। সপ্তম শটে গোল করতে ব্যর্থ হন ম্যাসন মাউন্ট। তার ব্যর্থতার সুযোগে কনস্টানটিনস টিমিকাস গোল করে লিভারপুল সমর্থকদের আবার উৎসব করার সুযোগ করে দেন।

এমন কীর্তিতে স্বাভাবিকভাবেই খুশি লিভারপুল কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপ। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, ‘ ছেলেদের সাফল্যে আমি গর্বিত। চেলসি দারুণ খেলেছে। কিন্তু দিন শেষে একটা মাত্র দল জয়োৎসব করতে পারে। আজকের দিনে আমরাই সেই জয়ী দল।’