logo
আপডেট : ১৫ মে, ২০২২ ১২:২১
কৃষ্ণচূড়ায় রঙিন মৌলভীবাজারের প্রাচীন বিদ্যাপীঠ
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

কৃষ্ণচূড়ায় রঙিন মৌলভীবাজারের প্রাচীন বিদ্যাপীঠ

মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ জেলার সর্বোচ্চ ও প্রাচীন বিদ্যাপীঠ। কলেজের এই ক্যাম্পাস এখন নয়নাভিরাম কৃষ্ণচূড়ার লাল রঙে রঙেছে। কৃষ্ণচূড়ার রক্তিম আভায় সৌন্দর্য বাড়িয়েছে বহুগুণ। শিক্ষক, শিক্ষার্থী আর কলেজ সম্মুখের সড়ক দিয়ে যাওয়ার পথে যে কোনো দর্শনার্থীরই হৃদয়কাড়ে নয়ন জুড়ানো কৃষ্ণচূড়া।

সূর্যের দেখা নেই, মেঘলা আকাশের সবটুকু উত্তাপ যেন কেড়ে নিয়েছে টুকটুকে লাল এ কৃষ্ণচূড়ায়।
গতকাল শনিবার মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, কলেজ বন্ধ হলেও অনেক শিক্ষার্থী কলেজে আসছেন। অফিস খোলা থাকায় অফিসিয়াল কাজে এসেছেন অনেকেই। তবে অধিকাংশই গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে এসেছেন কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্য অবলোকন করতে, সেই সঙ্গে ছবি তুলতে।

ক্যাম্পাসে দেখা মিলে গ্রীষ্মের রাজা বর্ণিল কৃষ্ণচূড়ার। এর চোখ ধাঁধানো সৌন্দর্য যেন হার মানায় ঋতুরাজকেও। কৃষ্ণচূড়ার লাল আবির গ্রীষ্মকে দিয়েছে এক অন্যমাত্রা। কৃষ্ণচূড়া গাছ লাল ফুলে ছেয়ে গেছে, যেন সবুজের মাঝে লালের মূর্ছনা।

শিক্ষার্থী রায়হান মোর্শেদ জানান, আজ কলেজে এসেছি কৃষ্ণচূড়ার ছবি তুলতে। এই কৃষ্ণচূড়া গাছটি কলেজ ক্যাম্পাসের ঠিক মধ্যেখানে হওয়ায় মনে হচ্ছে পুরো ক্যাম্পাস রঙিন হয়ে আছে।

শিক্ষার্থী অমৃতা শর্মী বলেন, ‘কৃষ্ণচূড়া আমার প্রিয় ফুল, এর লাল রং যেন মাতোয়ারা করে ফেলে। আমার নিজের ক্যাম্পাসে কৃষ্ণচূড়ার বাঁধনহারা ফোঁটা আমাকে অনেক আনন্দ দেয়।’

কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী মমসাদ সুমিত বলেন, ‘এই কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে বসে অনেক আড্ডা দিয়েছি, অনেক স্মৃতি এই কৃষ্ণচূড়া, এই ক্যাম্পাস ঘিরে।’

আরেক সাবেক শিক্ষার্থী ডোরা প্রেন্ট্রিস। যিনি শহরের পরিবেশে প্রকৃতি ও সৌন্দর্য বর্ধনে কাজ করছেন। তিনি জানান, ঋতু বৈচিত্র্যময় আমাদের দেশে এক এক ঋতু এক এক বার্তা ও সৌন্দর্য নিয়ে হাজির হয়। প্রত্যেক ঋতুকে গুরুত্ব দিয়ে আরো বেশি ফল ও ফুলের চারা বিভিন্ন ক্যাম্পাস ও শহরে লাগানো প্রয়োজন। তখন পরিবেশ প্রকৃতি সমৃদ্ধ হবে, বাড়বে সৌন্দর্য।

কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী পান্না দত্ত বলেন, ‘ক্যাম্পাসে ঢুকতেই দেখা মেলে কৃষ্ণচূড়া ফুলের। অনেক দিন হলো আসা হয়নি প্রিয় ক্যাম্পাসে। ফেসবুকে ক্যাম্পাসসহ কৃষ্ণচূড়ার ফুলের ছবি দেখে মনটা আনচান করছে। তাই দেখতে আসলাম।’

এদিকে মৌলভীবাজার শহর ও শহরতলি জুড়ে ঋতুচক্রের আবর্তনে কৃষ্ণচূড়া সোনালু আর জারুল তার মোহনীয় সৌন্দর্য নিয়ে হাজির হয়েছে প্রকৃতিতে। গ্রীষ্মের এই ফুলগুলো বর্ণিল করেছে চারপাশ। শহরের আনাচে-কানাচে, পিচঢালা পাকা সড়কের পাশে, গাঁয়ের মেঠো পথে কিংবা স্তব্ধ দীঘির ধারে সারি সারি গাছে এখন শোভা পাচ্ছে নানা রঙের বাহারি ফুল।

মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান, ‘ফুলের শহর মৌলভীবাজার’ গড়ার একজন উদ্যোক্তা শিক্ষাবিদ আব্দুল খালিক। তিনি জানান, এই সময়ে কৃষ্ণচূড়া কলেজ ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। মানুষকে সব সময় প্রকৃতির সৌন্দর্য মুগ্ধ করে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এর সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়। কৃষ্ণচূড়া গাছ ছাড়াও এই ক্যাম্পাসে রয়েছে নানা ধরনের ফল ও ফুলের গাছ। নতুন করে পরিকল্পনা অনুযায়ী এই ক্যাম্পাসে দেশি-বিদেশি ও সৌন্দর্য বর্ধক গাছের চারা লাগানো প্রয়োজন।