logo
আপডেট : ১৯ মে, ২০২২ ০৮:৪৩
৪২ বছর পর ফ্রাঙ্কফুর্টের ইউরোপিয়ান শিরোপা জয়
ক্রীড়া ডেস্ক

৪২ বছর পর ফ্রাঙ্কফুর্টের ইউরোপিয়ান শিরোপা জয়

কোয়ার্টার ফাইনালে বার্সেলোনাকে বিদায় করা আইনট্রাখট ফ্রাঙ্কফুর্ট জয় করেছে ইউরোপা লিগ। বুধবার রাতে সেভিয়াতে অনুষ্ঠিত ফাইনাল ম্যাচে তারা রেঞ্জার্সকে হারিয়ে শিরোপা জয় করেছে। নির্ধারিত সময়ের খেলা ১-১ গোলে অমীমাংসিত থাকা ম্যাচে তারা ৫-৪ গোলে জয় পেয়েছে। এ জয়ের মাধ্যমে ৪২ বছর পর প্রথমবারের মতো তারা ইউরোপিয়ান শিরোপা জয়ের কৃতিত্ব দেখালো।

টাইব্রেকারে সমানতালে এগিয়ে চলেছিল দুই দল। কিন্তু চতুর্থ শটে এসে রেঞ্জার্সের সব এলোমেলো হয়ে যায়। ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় ফ্রাঙ্কফুটের হাতে। এ সময় রেঞ্জার্সের অ্যারন রামসির শট রুখে দেন ফ্রাঙ্কফুর্টের গোলরক্ষক কেভিন ট্রাপ। এরপর আর রেঞ্জার্সের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফেরা হয়নি। ফ্রাঙ্কফুর্ট তাদের সবগুলো শটে গোল করে শিরোপা জয় নিশ্চিত করে।

শিরোপা জয়ের পথে বার্সেলোনার মতো দলকে বিদায় করে বিদায় করেছে। অথচ ঘরোয়া লিগে দলটার অবস্থা বেশ নাজুক। ইউরোপা লিগে অপরাজিত থাকলে ঘরোয়া লিগে একাধিকবার হারের তিক্ত স্বাদ হজম করতে হয়েছে। তাই তো মৌসুমে শেষে প্রথম দশ দলেও জায়গা পায়নি ক্লাবটি।

শিরোপা জয়ের ফলে আগামী মৌসুমে ফ্রাঙ্কফুর্ট চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলবে। ১৯৬০ সালের পর এই প্রথম তারা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার সুযোগ পেলো। সে সময় তারা ফাইনালে পৌঁছেছিল কিন্তু রিয়াল মাদ্রিদের কাছে হেরে হতাশ হতে হয়েছিল। এই একবারই তারা ইউরোপের ক্লাব প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে অংশ নিয়েছে। ফলে ৬২ বছর পর তারা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ফিরলো। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো ক্লাব এত বিরতি দিয়ে আবার প্রতিযোগিতায় ফেরার সুযোগ পেয়েছে।

খেলার শুরু থেকেই ফ্রাঙ্কফুর্টের আধিপত্য ছিল। কিন্তু কাজের কাজটি করেছিল রেঞ্জার্স। ম্যাচের ধারার বিপরীতে তারা গোল করে এগিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বেশি সময় তারা ব্যবধান ধরে রাখতে পারেনি। ফ্রাঙ্কফুর্টের রক্ষণভাগের ভুলে জো আরিবো ৫৭ মিনিটে গোল করে রেঞ্জার্সকে এগিয়ে নিয়েছিল। কিন্তু ৭০ মিনিটের সময় ফিলিপ কস্টিক ফ্রাঙ্কফুর্টকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন।

টাইব্রেকারে হারলেও রেঞ্জার্স নির্ধারিত সময়ে জয়ের দারুণ সুযোগ পেয়েছিল। বিশেষ করে অতিরিক্ত সময়ের শেষ দিকে ফ্রাঙ্কফুর্টের গোলরক্ষক ট্রাপের দক্ষতায় রেঞ্জার্স গোল থেকে বঞ্চিত হয় এবং খেলা ট্রাইব্রেকারে গড়ায়।

ম্যাচে শেষে ফ্রাঙ্কফুর্ট কোচ ওলিভার গ্লাসনের বলেন, ‘আমরা এ প্রতিযোগিতায় ১৩ ম্যাচ খেলেছি। কোনো ম্যাচেই হারিনি। আমরা অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। আমরা এক এক করে এগিয়েছি। সর্বশেষ আমরা পুরস্কৃত হয়েছি। এ আনন্দ প্রকাশের ভাষা আমার নেই। আমি খেলোয়াড়দের নিয়ে গর্বিত। ফাইনাল ম্যাচটা ছিল মৌসুমের শেষ ম্যাচ। সবাই নিজেকে উজাড় করে দিয়েছে। খেলোয়াড়দের জন্য কোনো প্রশংসাই যথেষ্ঠ নয়।’

ফ্রাঙ্কফুর্ট অধিনায়ক সেবাস্তিয়েন রোড সতীর্থদের প্রশংসা করে বলেন, পথটা ছিল বেশ কঠিন। তবে আমরা ভালোভাবেই সে পথ পাড়ি দিয়েছি। যোগ্য দল হিসেবে আমরা শিরোপা জয় করেছি।’

ম্যাচের আগে দুই দলের সমর্থকদের মধ্যে সংঘাত তৈরি হয়েছিল। সমর্থকরা একে অপরের দিকে চেয়ার-টেবিলও ছুঁড়েছে। পুলিশের সঙ্গে সংঘাতের কারণে পাঁচজন জার্মান সমর্থককে আটক করে পুলিশ। স্পেনের দক্ষিণাঞ্চলের শহরে রামোন সানচেজ পিজুয়ান স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এ ম্যাচে গ্যালারির দর্শক ধারণ ক্ষমতা ছিল ৪৩ হাজার। কিন্তু ম্যাচ দেখার জন্য হাজির হয়েছিল এক লাখ পঞ্চাশ হাজার সমর্থক। আর তাদের বেশির ভাগই ছিল টিকেটহীন।