স্ত্রী-সন্তানদের জমি লিখে না দেওয়ায় আব্দুর রাজ্জাক নামে এক বৃদ্ধকে দেড় মাস ধরে শিকলবন্দি করে রাখা হয়। এ ঘটনার সংবাদ পেয়ে স্থানীয় মানবাধিকারকর্মীদের সহযোগিতায় শনিবার বিকেলে ওই বৃদ্ধকে উদ্ধার করা হয়।
নেত্রকোনার কেন্দুয়া থানা পুলিশ উপজেলার চিরাং ইউনিয়নের মনাটিয়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই বৃদ্ধের স্ত্রী হামিদা আক্তার ও বড় ছেলে সেলিমকে আটক করা হয়েছে।
কেন্দুয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলী হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে তিনি জানান।
নির্যাতনের শিকার ওই বৃদ্ধ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বসতবাড়িসহ এক একরের মতো (১০ কাঠা) জমিজমা রয়েছে আব্দুর রাজ্জাকের। দীর্ঘদিন স্ত্রী হামিদা আক্তার ও তার তিন ছেলে মিলে ওই জমিজমা তাদের নামে লিখে দেওয়ার জন্য আব্দুর রাজ্জাককে চাপ দিচ্ছিলেন।
কিন্তু আব্দুর রাজ্জাক জমিজমা লিখে দিতে রাজি হননি। এ অবস্থায় গত ৫ এপ্রিল বৃদ্ধকে পায়ে লোহার শিকল পরিয়ে বসতঘরের এককোণায় চৌকির সঙ্গে বন্দি করে রাখেন সন্তানরা।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘তাদের কথা মতো স্ত্রী ও সন্তানদের জমি লিখে না দেওয়ায় তারা আমার ওপর নানাভাবে নির্যাতন শুরু করে। একপর্যায়ে গত ৫ এপ্রিল থেকে আমাকে শিকল দিয়ে ঘরের কোণে বেঁধে রাখে।’
তিনি আরো বলেন, ‘শিকলবন্দি করার পরও তারা আমাকে মারধর করতো। এমনকি ঈদের দিনও তারা আমাকে এভাবে বেঁধে রেখেছিল।’
স্থানীয় মানবাধিকারকর্মী ও কল্যাণী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান কল্যাণী হাসান বলেন, ‘স্থানীয়দের মাধ্যমে আমরা আব্দুর রাজ্জাককে শিকলবন্দি করে রাখার সংবাদ পাই। পরে শনিবার বিকেলে ওই গ্রামে গিয়ে নিজ হাতে তাকে শিকলমুক্ত করি।’
মানবাধিকারকর্মী শাহ আলী তৌফিক রিপন বলেন, ‘এ রকম অমানবিক ঘটনা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা বিষয়টি জানার পরপরই ওই বৃদ্ধের বাড়িতে যাই। এ সময় পুলিশের উপস্থিতিতে তাকে শিকলমুক্ত করা হয়।’ এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন তিনি।