নরসিংদীতে পোশাক নিয়ে তরুণী লাঞ্ছনার বিচারের দাবি জানিয়েছেন নারী নেত্রীরা।
আজ সোমবার (২৩ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে নরসিংদীতে পোশাক পরা নিয়ে তরুণী লাঞ্ছনার বিচারের দাবিতে 'প্রগতিশীল নারী সংগঠনসমূহ' আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন নারী নেত্রীরা।
বিপ্লবী নারী ফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমেনা আক্তার বলন, নরসিংদীর ঘটনায় আমরা লজ্জিত।
আমাদের সমাজে লিঙ্গ বৈষম্য এবং ধর্মীয় বিদ্বেষ দূর করতে না পারলে মানুষ হিসেবে আমরা বাঁচতে পারব না।
বর্তমানে দেশের গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে নারীরা ভালো অবস্থানে আছে। এ রাষ্ট্রে নারী এবং শিশুরা কুসংস্কারের শিকার হচ্ছে সেটিও রুখে দিতে হবে।
এমন ঘটনা গুলোতে প্রশাসন নির্বিকার থাকে। গণমাধ্যম এবং মানুষ যখন ক্ষুব্ধ হয় তখন সরকারের টনক নড়ে।
৫৪ ধারার মামলা দিয়ে কোর্টে উঠেছে। এটাও একটা ঘৃণ্য কাজ হয়েছে।
গার্মেন্টস শ্রমিক মুক্তি আন্দোলনের সভাপতি শবনম হাফিজ বলেন 'পারিবারিক সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে সব জায়গাতেই নারীরা হেনস্তার শিকার হতে হয়।
সমাজের কিছু পুরুষ নারীদের সন্মান ও শ্রদ্ধা করতে জানে না। পুরুষদের একটা অংশের মাঝে কর্তৃত্বপরায়ণ ভাবনা আছে, এটা দূর করতে হবে।
নারীদের একটা ঝাটা হাতে রাখতে হবে এ ভাবনা দূর করতে।'
সমাজতান্ত্রিক মহিলা পরিষদের দপ্তর সম্পাদক রোখসানা আফরোজা বলেন, 'লাঞ্ছিত তরুণী শারীরিক নিপীড়নের পাশাপাশি মানসিকভাবেও নিপীড়নের শিকার হয়েছে।
সেই তরুণী বেড়াতে গিয়েছিলেন। তার পোশাক খুলে ফেলার চেষ্টা করেছে। নিজের ইচ্ছা এবং পছন্দের জীবন যাপন করা সাংবিধানিক অধিকার।
সবার রুচি এবং সংস্কৃতি এক নয়। তিনি বলেন, 'পছন্দের পোশাক পরা অপরাধ নয়, পোশাক নিয়ে কটুক্তি বা হেনস্তা করা অপরাধ।
রাষ্ট্রে পরিকল্পিতভাবে নারীকে ২য় শ্রেণির নাগরিক করে রাখা হয়েছে। কোথাও বলা হয়নি নারী পুরুষ সমান।
সম্পত্তিতে নারীর অধিকার দেওয়া হয়নি। ওয়াজ মাহফিলের নামে নারীবিদ্বেষী মনোভাব ছড়ানো হয়। এটা প্রতিহত করতে সরকারের কোন কাজ নেই।'
'নাটক সিনেমা বিজ্ঞাপনে পণ্য নারী, পাঠ্যবইয়ে নারীর সংগ্রাম নেই, প্রীতিলতা, জাহানারা ইমাম, বেগম রোকেয়ার লড়াই পাঠ্যবইয়ে নাই।
নরসিংদির ঘটনা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, 'পোশাকে সমস্যা হলে তনুর কি অপরাধ ছিল। চিন্তার সংকট এ সমাজ ও রাষ্ট্রের। সমাজে কোথাও বিজ্ঞান শিক্ষার চর্চা নেই, ক্রমাগত কূপমন্ডুকতা শিক্ষাকে উৎসাহী করা হচ্ছে।
গণতন্ত্র চর্চা বন্ধ। স্বাভাবিক কাজ ও চিন্তা বন্ধ হলেই এ ধরনের কাজ হয়।' যারা নারীর পোশাক নিয়ে কথা বলে তারা দ্রব্যমূল্যের বাড়তি দাম নিয়ে কথা বলেন না।
যখন মানুষ ৩ বেলার জায়গায় ১ বেলা খায় তখন আপনার অনুভূতি কোথায় যায়। কৃষকদের ধানের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।
সমাবেশের সভাপতি এডভোকেট মাকসুদা আক্তার লাইলী বলেন, ‘একজন নারী পরিবারের সকলকে ভালো রাখতে সারাদিন কাজ করে। কিন্তু সে নারী নিগ্রহ ও বৈষম্যের শিকার হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন ‘যে পরিবারে নারী সন্মান পায় সে পরিবারের সন্তান নিপীড়ন করে না।