logo
আপডেট : ২৪ মে, ২০২২ ১২:০১
গন্ধবিহীন ভেড়ার মাংস উৎপাদনে সফলতা
কামরুজ্জামান মিন্টু, ময়মনসিংহ ব্যুরো

গন্ধবিহীন ভেড়ার মাংস উৎপাদনে সফলতা

গন্ধবিহীন ভেড়ার মাংস উৎপাদনে সফলতা পেয়েছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) একজন গবেষক। দুই দশক গবেষণার মাধ্যমে এ সফলতা পাওয়া যায়।

ওই গবেষকের নাম ড. মোহাম্মদ আল মামুন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুপুষ্টি বিভাগের অধ্যাপক। তিনি ২০০৪ সালে জাপানের ইয়াতো ইউনিভার্সিটিতে প্লানটেইন ঘাসের উপর গবেষণা শুরু করেন। গবেষণায় সাফল্যের জন্য তিনি সেখানে প্রেসিডেন্ট ও ডিন আওয়ার্ডে ভূষিত হয়েছেন।

বাকৃবি সূত্রে জানা যায়, বিশ্বে শতকরা ২২ ভাগ প্রোটিনের চাহিদা মেটায় ভেড়ার মাংস। কিন্তু অস্বাভাবিক গন্ধ ছাড়াও ঘন শক্তপেশি ও অধিক চর্বিযুক্ত হওয়ায় এদেশের বেশিরভাগ মানুষই পছন্দ করেন না ভেড়ার মাংস। তাই ভেড়ার খাদ্যতালিকায় ঔষধিগুণ সম্পন্ন প্লানটেইন ঘাস ও রসুনের পাতার ব্যবহার করে ভেড়ার উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির পাশাপাশি মাংসের গুণগত মান উন্নত করা হয়েছে।

অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আল মামুন দৈনিক ভোরের আকাশকে বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী ভেড়ার মাংসের জনপ্রিয়তা থাকলেও এক ধরনের অস্বাভাবিক গন্ধের কারণে বাংলাদেশে ভেড়ার মাংসের প্রতি মানুষের অরুচি রয়েছে। এ কারণে গবেষণা শুরু করি।’

‘সম্প্রতি গবেষণায় দেখা গেছে, ঔষধি ঘাসের উপাদান মাংসের স্বাদ ও গন্ধের পরিবর্তন এনেছে। এছাড়া প্লানটেইন ও রসুন পাতায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভেড়ার বৃদ্ধি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং মাংসের গুণগত মানের উপর যথেষ্ট প্রভাব ফেলেছে।’

তিনি বলেন, ‘গবেষণা চলাকালে খাবারে অধিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ প্লানটেইন ঘাস ও রসুনের পাতা ব্যবহার করার ফলে ভেড়ার ২০ থেকে ২৬ শতাংশ শারীরিক বৃদ্ধি, পাঁচ থেকে সাত শতাংশ মাংস উৎপাদন বৃদ্ধি এবং সাত শতাংশ রক্তের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও এর ফলে শরীরের অভ্যন্তরীণ চর্বি এবং পেলভিক চর্বি যথাক্রমে ২৪ শতাংশ এবং ৫৬ শতাংশ কমিয়ে গিয়েছে।’

‘উপাদান দুটি ব্যবহারের ফলে ভেড়ার মাংসে ১৫ শতাংশ কোলেস্টরল কমিয়ে দিয়েছে এবং ৩০ শতাংশ ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড বাড়িয়ে দিয়েছে। এই ঘাসগুলো ব্যবহারে ভেড়া থেকে ১১ থেকে ১৪ শতাংশ কম মিথেন নির্গত হয় যা পরিবেশে খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে’ বলেন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আল মামুন।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুপুষ্টি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. রাখী চৌধুরী দৈনিক ভোরের আকাশকে বলেন, ‘মূলত ভেড়ার উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও গুণগত মান উন্নয়নের লক্ষ্যে গবেষণা করে এ সাফল্য পাওয়া যায়। এর ফলে ভেড়ার মাংসের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়বে। ফলে ধীরে ধীরে খামারির সংখ্যাও বাড়বে। এতে সবচেয়ে লাভবান হবে খামারিরা।’