logo
আপডেট : ২৬ মে, ২০২২ ০৭:৫০
ইউরোপা কনফারেন্স লিগ
৬০ বছর পর রোমার ইউরোপীয় শিরোপা জয়
ক্রীড়া ডেস্ক

৬০ বছর পর রোমার ইউরোপীয় শিরোপা জয়

অবশেষে শিরোপার দেখা পেয়েছে রোমা। বুধবার রাতে আলবানিয়াতে অনুষ্ঠিত ইউরোপা কনফারেন্স লিগের ফাইনালে ফেয়েনুর্ড রটারডামকে ১-০ গোলে হারিয়ে তারা চ্যাম্পিয়ন্স হয়েছে। রোমার গত ৬০ বছরের ইতিহাসে ইউরোপের বড় ধরণের কোনো প্রতিযোগিতায় এটা প্রথম শিরোপা।

রোমার গূরুত্বপূর্ণ এই সাফল্যে একমাত্র গোলটি করেন ২২ বছর বয়সী নিকোলো জানিওলো। ৩২ মিনিটে অসাধারণ এই গোলটি করেন। সতীর্থদের কাছ থেকে উড়ে আসা বলে প্রথমে বুক দিয়ে নামিয়ে যে ভলিটি করেন তা ফেয়েনুর্ড গোলরক্ষককে হতাশায় ডুবিয়ে জালে আশ্রয় নেয়। ইউরোপে তৃতীয় পর্যায়ের এই টুর্নামেন্ট ইউরোপা কনফারেন্স লিগ এবারই শুরু হয়েছে। আর প্রথম আসরেই রোমা শিরোপা জিতে ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছে। একই সঙ্গে ইতিহাসের পাতায় স্থান পেয়েছেন হোসে মরিনহো। রোমার এই কোচ প্রথম কোচ হিসেবে ইউরোপের চারটি ভিন্ন ক্লাবের হয়ে ইউরোপীয় শিরোপা জয়ের কৃতিত্ব দেখালেন। পাঁচটা ইউরোপীয় শিরোপা জয়ের কীর্তি এখন তার। পোর্তোর হয়ে তিনি ২০০৩ সালে উয়েফা কাপ এবং ২০০৪ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয় করেন। ২০১০ সালে ইন্টার মিলানের হয়ে জয় করেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। ২০১৭ সালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে ইউরোপা লিগ জয়ের কীর্তি গড়েন। মোট চার ক্লাবের হয়ে পাঁচ শিরোপা জয় করেছেন তিনি।

রোমা এর আগে একবারই ইউরোপীয় প্রতিযোগিতায় শিরোপা জয় করেছে। সে ঘটনা ১৯৬১ সালে। সে সময় তারা ফেয়ার্স কাপ জয় করেছিল। রোমার অবশ্য শিরোপা জয়ের প্রহর আরো দীর্ঘায়িত হতে পারতো। কিন্তু ভাগ্য তাদের সহায় ছিল। ডাচ ক্লাব ফেয়েনুর্ড ম্যাচ জয়ের দারুণ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি। বরং বলা যায় তারা জয় থেকে বঞ্চিত। তাদের দু দুটো শট বারে লেগে ফিরে আসে। ফলে রোমা গোল হজম থেকে রক্ষা পায়।

ম্যাচ শুরুর আগে দুই দলের সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছিল। স্টেডিয়ামে দর্শক ধারণ ক্ষমতা তুলনামূলক কম হওয়ায় স্টেডিয়ামের বাইরে জায়ান্ট স্ক্রিনে খেলা দেখার জন্য কমপক্ষে ৫০ হাজার দর্শক সমবেত হয়েছিল। দুই দলের সমর্থকরা পুলিশের সঙ্গে মারামারিতেও জড়িয়ে পড়েছিলেন। এতে ১৯ পুলিশ কর্মকর্তা ও পাঁচজন আলবেনিয়ান নাগরিক আহত হন। একজন পুলিশ কর্মকর্তা ছুরির আঘাত পেয়েছেন। একটা সূত্র জানায়, তিনজন ইতালিয়ান ও দুই জন ডাচ নাগরিকও এ ঘটনায় আহত হন।

তবে ম্যাচ শুরুর সঙ্গে সঙ্গে স্টেডিয়ামের অবস্থা স্বাভাবিক হয়ে আসে। আর সে সঙ্গেই স্তদ্ধ হয়ে যায় ডাচ সমর্থকরা। জানিওলোর গোলই তাদেরকে স্তদ্ধ করে দেয়। মূল্যবান এ গোল করতে পেওে জানিওলো দারুণ খুশি। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, ‘অসাধারণ এক মূহুর্ত। আসুন আমরা এ মূহুর্তটা উপভোগ করি। আমাদের সমর্থকরা দারুণভাবে উজ্জ্বীবিত করেছে। এটা বর্ণনা করার ভাষা আমার জানা নেই। যাহোক এই আনন্দ তাদের জন্য।’

জানিওলোকে ইতালির সবচেয়ে তরুণ মেধাবী তরুণ খেলোয়াড় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তবে দু দুটো হাঁটুর ইনজুরি তাকে আলোচনার বাইরে রেখেছে। একবার ইনজুরির কারণে গত মৌসুমের প্রায় পুরোটা সময় তাকে বাইরে থাকতে হয়। সে কারণে ইতালির ইউরো জয়ের মিশনে তিনি দলের সদস্য হতে পারেননি।

জানিওলোর বয়স মাত্র ২২ বছর। ফাইনালে গোল করার মাধ্যমে তিনি ইতালির দ্বিতীয় কনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে ইউরোপের কোনো ফাইনালে গোল করার কৃতিত্ব দেখালেন। সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা হিসেবে কীর্তিটা এখনো ধরে রেখেছেন আলেসান্দ্রো ডেল পিয়েরো। ১৯৯৭ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে তিনি বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে জুভেন্টাসের হয়ে গোল করেছিলেন। সে সময় তার বয়স ছিল ২২ বছর ২০০ দিন। আর এ ম্যাচে জানিওলো যখন গোল করেন তখন তার বয়স ২২ বছর ৩২৭ দিন। অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে খেলা জানিওলো টুর্নামেন্টে পাঁচটি গোল করেছেন। ১০ ম্যাচ খেলে তিনটি গোলের রূপকারও ছিলেন তিনি।

রোমা এর আগে দুইবার ইউরোপীয় প্রতিযোগিতায় ফাইনালে উঠেও শিরোপার দেখা পায়নি। ১৯৯১ সালে ইন্টার মিলানের কাছে হেরে তার উয়েফা কাপে রানার্স আপ হয়। আর ১৯৮৪ সালে নিজেদের মাঠের খেলায় লিভারপুলের কাছে হেরে গিয়েছিল তারা।