উচ্ছ্বাসের ঢেউ বাধভাঙা হলে কখনও কখনও তা প্রকাশের ভাষা খুঁজে পাওয়া যায় না। কার্লো আনচেলত্তিরও সেই দশা। শুরুর দিকে লিভারপুলের আক্রমণের তোড়ে ভেসে যাওয়ার শঙ্কা উঁকি দিয়েছিল প্রবলভাবে। প্রতিকূল স্রোত পেরিয়ে বিজয়ী হয়েছেন তিনিই, তার দল। দুর্গম গিরি কান্তার মেরু পেরুনোর পর তাই সবকিছু অবিশ্বাস্য লাগছে তার!
প্যারিসে শনিবার রাতে লিভারপুলকে ১-০ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আরও একবার বিজয় কেতন উড়িয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। ব্যবধান গড়ে দেওয়া গোলটি ভিনিসিউস জুনিয়র করেন দ্বিতীয়ার্ধে। এই গোলের আগে-পরে ডাগআউটে বসে সারাক্ষণ স্নায়ুর চাপে চুইংগাম চিবোতে থাকা আনচেলত্তি স্বস্তির শ্বাস ফেলেছেন শেষের বাঁশি বাজার পর। এরপর প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে শব্দ খুঁজে পাচ্ছিলেন না এই ইতালিয়ান কোচ।
তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করতে পারছি না। কঠিন একটা ম্যাচ ছিল। প্রথমার্ধে আমরা ভুগেছিলাম, কিন্তু শেষ পর্যন্ত (আমরা জিতেছি) এবারে যে ম্যাচগুলো আমরা খেলেছি, আমি মনে করি, এই প্রতিযোগিতায় জয়ী হওয়ার যোগ্য। আমরা খুব খুশি। আর কীই-বা বলতে পারি। এর বেশি কিছু বলতে পারব না।
পেছন ফিরেও তাকালেন আনচেলত্তি। লিওনেল মেসি-নেইমার-এমবাপেতে গড়া প্রতাপশালী পিএসজি, গতবারের চ্যাম্পিয়ন চেলসি এবং এবারের ফেভারিটদের একটি ম্যানচেস্টার সিটিকে ছিটকে দিয়ে প্রতিশোধের নেশায় ফুটতে থাকা লিভারপুলের সামনে এসে পড়ে রিয়াল। সেখানেও সেরা তার দলই। তিনি আরও বলেন, আমি মনে করি, আসলেই কঠিন সব ম্যাচ পার করে এসেছি আমরা। আগের ম্যাচে সমর্থকরা আমাদের খুবই সাহায্য করেছিল; আজ রাতেও তারা সাহায্য করেছে। আমরা খুশি এবং তারাও খুশি।’
প্রথম কোচ হিসাবে চারটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জিতলেন আনচেলত্তি। প্রথম কোচ হিসেবে একাধিক ক্লাবের হয়ে দুটি করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের কীর্তি গড়লেন ৬২ বছর বয়সী এই কোচ। এর আগে এসি মিলানের কোচ হিসেবে দুইবারে এই ট্রফি জিতেছিলেন তিনি। এমন কীর্তিতে রাশভারী প্রকৃতির আনচেলত্তিও নিজের প্রশংসায় মাতলেন!
“আমি একজন রেকর্ড গড়া মানুষ। গত বছর এই দলে আসার সৌভাগ্য হয়েছিল আমার এবং দারুণ একটা মৌসুম কাটালাম। রিয়াল চমৎকার একটি ক্লাব এবং আসলেই অনেক মানসম্পন্ন এবং শক্ত মানসিকতার খেলোয়াড় দিয়ে গড়া একটি দল।”
ম্যাচ জুড়ে রিয়ালের পোস্টের সামনে বিশ্বস্ত দেয়াল হয়ে থাকা থিবো কোর্তোয়ার প্রশংসায়ও পঞ্চমুখ তিনি। প্রিয় শিষ্যের চোখ ধাঁধানো পারফরম্যান্সও অবিশ্বাস্য ঠেকছে তার কাছে। তিনি বলেন, ‘ওয়াও, অবিশ্বাস্য, এটা আমি বিশ্বাসই করতে পারছি না।’