চাঁদপুরের মেঘনা নদী থেকে সেলিম খানকে বালি উত্তোলনের অনুমতি দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বাতিল করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
ফলে ওই নদী থেকে আর বালি উত্তোলন করতে পারবেন না ব্যাপক আলোচিত-সমালোচিত ওই জেলার লক্ষীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামলীগ সভাপতি মো. সেলিম খান।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বিভাগ গতকাল রোববার হাইকোর্টের রায় বাতিল করে আদেশ দিয়েছেন।
হাইকোর্টের রায় বাতিল চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেন আপিল বিভাগ।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার কাজী মাঈনুল হাসান।
সেলিম খানের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি।
চাঁদপুরের মেঘনা নদী থেকে সেলিম খানকে বালি উত্তোলনের অনুমতি দিয়ে ২০১৮ সালের ৫ এপ্রিল রায় দেন হাইকোর্ট।
রায়ে সেখানকার ২১টি মৌজায় অবস্থিত মেঘনার ডুবোচর থেকে ৮৬ দশমিক ৩০ কিউবিক মিটার (৩০ কোটি ৪৮ লাখ ঘনফুট) বালি উত্তোলনের অনুমতি দেওয়া হয়।
কার্যত চাঁদপুর সদর ও হাইমচরে অবস্থিত ২১টি মৌজা এলাকায় জনস্বার্থে নিজ খরচে হাইড্রোগ্রাফিক জরিপ করতে নির্দেশনা চেয়ে সেলিম খানের করা এক রিট মামলায় এ রায় দেন হাইকোর্ট।
নৌপথ সচল করার কথা বলে ২০১৫ সালে এই রিট আবেদন করেছিলেন সেলিম খান। ওই রিট আবেদন করার পর থেকে বালি উত্তোলন করে আসছিলেন সেলিম খান।
অভিযোগ রয়েছে, এই আট বছরে সরকারকে এক টাকাও রাজস্ব দেননি তিনি।
এ অবস্থায় গত ২ মার্চ একটি জাতীয় দৈনিকে ‘পদ্মা-মেঘনার সর্বনাশ: ‘বালুখেকো’ চেয়ারম্যান তিনি’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
এ ছাড়া চাঁদপুরে প্রস্তাবিত বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (সিএসটিইউ) প্রকল্পে সাড়ে ৬২ একর জমি অধিগ্রহণ নিয়ে প্রায় সাড়ে ৩শ কোটি টাকা দুর্নীতির সেলিম খানের সম্পৃক্তা সামনে আসার পর রাষ্ট্রপক্ষ নড়েচড়ে বসে।
এ নিয়ে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশের পর ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
এমন প্রেক্ষাপটে বালি উত্তোলনের অনুমতি সংক্রান্ত রায়ের বিরুদ্ধে গত ১৫ মার্চ আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালতে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
চেম্বার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম গত ৪ এপ্রিল এক আদেশে হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেন এবং রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনটির ওপর শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন।
এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বাতিল করে দেন।