logo
আপডেট : ২৯ মে, ২০২২ ২০:২৫
ফাইনালে হারের পর লিভারপুল কোচ ক্লপ
‘রিয়াল পেরেছে, আমরা পারিনি’
ক্রীড়া ডেস্ক

‘রিয়াল পেরেছে, আমরা পারিনি’

প্যারিসে আক্রমণের ঝাঁপি তারা খুলে বসেছিল ম্যাচের প্রথম থেকেই। রিয়ালের রক্ষণভাগে সালাহ-মানেদের সংঘবদ্ধ আক্রমণ ছিল দেখার মতো। কিন্তু গোলের খেলা ফুটবল। সেই গোলই পায়নি লিভারপুল। ভিনিসিউস জুনিয়রের একমাত্র গোলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জিতেছে রিয়াল মাদ্রিদ। গোলপোস্টের নিচে অন্তত ৯টি শট ঠেকিয়ে ম্যাচের নায়ক রিয়াল গোলরক্ষক থাইবো কোর্তোয়া। এমন ম্যাচে হেরে স্বভাবতই হতাশ লিভারপুল শিবির। বিশেষ করে দলটির কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপ অনেকটা বিষাদে জর্জরিত। তারপরও মেনে নিলেন, এটাই ফুটবুল।

ব্যর্থতার কারণ হিসেবে ক্লপ বলেন, ‘এ ফল অস্বাভাবিক কিছু নয়। ফুটবলে এটা খুব স্বাভাবিক ফল। আমরা অনেক সুযোগ পেয়েছিলাম এবং লক্ষ্যে শটও রেখেছিলাম, কিন্তু সবচেয়ে নির্ণায়ক পরিসংখ্যানটি (গোল) মাদ্রিদের পক্ষে। তারা একটা গোল করেছে এবং আমরা করতে পারিনিÑ বিশ^ ফুটবলে এটাই সহজতম ব্যাখ্যা। (আমাদের জন্য) এটা কঠিন, কিন্তু অবশ্যই এ ফলকে আমাদের সম্মান জানাতে হবে।’ ম্যাচের শুরুতে প্রতিপক্ষের রক্ষণে চড়াও হয় লিভারপুল। রিয়াল নিচে নেমে রক্ষণ সামলানোর ফাঁকে পাল্টা আক্রমণে তুলে নেয় কাক্সিক্ষত গোল। নিজেদের খেলায় অনেক ইতিবাচক দিক খুঁজে পেলেও ক্লপ স্বীকার করে নিলেন, তাদের প্রচেষ্টা যথেষ্ট ছিল না। তিনি বলেন, ‘আমরা ভেতরে এবং দ্বিতীয়ার্ধে রিয়ালের ফরমেশনের আশপাশে আরো বেশি খেলতে চেয়েছিলাম। সমস্যা হচ্ছে, প্রতিপক্ষ যখন রিয়াল এবং তারা নিচে নেমে খেলে, তখন তাদের পাল্টা আক্রমণের হুমকি থাকে তীব্র। আমাদের খেলায় ভালো অনেক কিছু ছিল, কিন্তু এটা যথেষ্ট ছিল না। এ ফল আমাদের মেনে নিতে হবে।’

ম্যাচজুড়ে একের পর দারুণ সব সেভ করে রিয়ালের ত্রাতা কোর্তোয়া। বেলজিয়ান এ গোলরক্ষকই জিতেছেন ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার। শুরুতে কোর্তোয়াকে কঠিন পরীক্ষা নিলেও শেষ দিকে সালাহ-মানেরা তা পারেননি বলে মনে করেন ক্লপ। তিনি বলেন, ‘যখন একজন গোলরক্ষক ম্যাচসেরা খেলোয়াড় হয়, তখন বুঝতে হবে প্রতিপক্ষ দল কিছু ঠিকঠাক করতে পারেনি। কোর্তোয়া অবিশ^াস্য তিনটি সেভ করল, কিন্তু যেভাবে আমরা খেলেছি, তাতে এ ধরনের সুযোগ আরো বেশি সুযোগ পেলে আমার ভালো লাগত। শেষ তৃতীয়াংশে আমরা কোর্তোয়ার দিকে কিছু ক্রস বাড়িয়েছিলাম, যেগুলো খুব একটা অর্থপূর্ণ ছিল না।’ কিছুদিন আগেও লিভারপুলের স্বপ্ন ছিল ইতিহাসের প্রথম ক্লাব হিসেবে ‘কোয়াড্রপল’ জয়ের। ইংলিশ লিগ কাপ ও এফএ কাপ জিতে তারা ছিল স্বপ্ন পূরণের পথে। কিন্তু বড় দুটি শিরোপার পথে তাদের হতাশায় পুড়তে হয় শেষ ধাপে। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের শেষ দিনে তারা জিতলেও শেষ পর্যন্ত ম্যানচেস্টার সিটির চেয়ে ১ পয়েন্ট পেছনে পড়ে থাকে। এরপর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে এক গোলে হার।

শেষ সময়ের এ জোড়া আফসোস ভুলে ক্লপ তাকাচ্ছেন মৌসুমজুড়ে পাওয়া অর্জনগুলোয়। গর্বের ছবি এঁকে লিভারপুল কোচ তাকাচ্ছেন সামনে। তিনি বলেন, ‘ড্রেসিংরুমে আমি দলকে বলেছি, ওদের নিয়ে এখনই গর্ব অনুভব করছি। অসাধারণ এক মৌসুম কেটেছে ছেলেদের। যে দুটি প্রতিযোগিতায় আমরা জিততে পারিনি, সেগুলো পারিনি ন্যূনতম ব্যবধানে। ছেলেরা ক্রমে বুঝতে পারবে কতটা স্পেশাল ছিল এ মৌসুম এবং তারা কী করেছে মৌসুমজুড়ে।’ ‘অবশ্যই এটা ভিন্ন ধরনের এক সাফল্য, যে সাফল্য খুব প্রত্যাশিত নয়। তবে আমার প্রবলভাবেই মনে হচ্ছে, আমরা ফিরে আসব। এ ছেলেরা দারুণ লড়াকু। অসাধারণ একটি দল আমাদের, আবারো এভাবেই আমরা একত্র হব এবং সামনে এগিয়ে যাব।’ সেই এগিয়ে চলার চূড়ান্ত ঠিকানাও বলে দিলেন ক্লপ। আগামী মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল হবে ইস্তানবুলে। লিভারপুল কোচের দৃষ্টি সেখানেই, ‘অবশ্যই অন্যদের চেয়ে একটু বেশিই চেষ্টা করতে হবে আমাদের, তবে সমস্যা নেই। পরেরটি (ফাইনাল) কোথায় যেন? ইস্তানবুল। হোটেল বুক করে রাখুন!’