logo
আপডেট : ৩০ মে, ২০২২ ১০:১২
আইপিএল
অভিষেকেই পান্ডিয়ার গুজরাট চ্যাম্পিয়ন
ক্রীড়া ডেস্ক

অভিষেকেই পান্ডিয়ার গুজরাট চ্যাম্পিয়ন

অধিনায়ক হৃতিক পান্ডে অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্সে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) শিরোপা জিতেছে গুজরাট টাইটানস। রোববার আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে এক লাখ দর্শকের উপস্থিতিতে ৭ উইকেটে তারা হারায় রাজস্থান রয়্যালসকে। প্রথমে ব্যাট করা রাজস্থান ৯ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে মাত্র ১৩০ রান জমা করে। জবাবে গুজরাট ৩ উইকেট ও ১১ বল হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায়।

ফাইনালের আগে ছিল জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। ইনিংসের মাঝপথে ছিল আলোর রোশনাইয়ে ভরপুর। কিন্তু ম্যাচটা সেভাবে দ্যুতি ছড়াতে পারেনি। ২০০৮ সালের পর এটা ছিল রাজস্থান রয়্যালসের প্রথম ফাইনাল। অন্যদিকে গুজরাট এবারের আইপিএলে প্রথমবারের মতো অংশ নিয়েছে। আর তাতেই চমক তৈরি করেছে। প্রথমবার অংশ নিয়ে প্রথবার ফাইনাল। আর তাতেই চ্যাম্পিয়ন। এর ফলে ২০১৬ সালের পর নতুন চ্যাম্পিয়ন দেখলো আইপিএল। সে সময়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। আর ২০০৮ সালে রাজস্থানের পর প্রথমবার আইপিএল খেলতে এসেই শিরোপা জিতলো গুজরাট।

হৃদিক পান্ডিয়ার অসাধারণ পারফরম্য বল হাতে ৪ ওভারে ১৭ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন। আর ব্যাট হাতে করেন ৩০ বলে ৩৪ রান। পান্ডিয়ার এমন পারফরম্যান্সে জস বাটলারের অনন্য রূপকথা লেখা হলো না। রাজস্থানে ফাইনালে তুলে অনন্য সব কীর্তি গড়েছিলেন। অনেকটা একাই তার চওড়া ব্যাটে একের পর এক রাজস্থানের বাধা পার করেছিলেন। কিন্তু ফাইনাল ম্যাচে এসে পান্ডের সামনে হার মানলেন। ব্যাটিংয়ে পান্ডিয়ার বোলিংয়ের শিকার হয়েছেন তিনি। এ ম্যাচেও আগের মতোই ক্রমে বিধ্বংসী হয়ে উঠছিলেন বাটলার। একের পর এক বল বাউন্ডারির সীমানা পার করে দলের সংগ্রহকে শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করানোর লড়াই করছিলেন এ ওপেনার। তার সঙ্গে ছিলেন জয়সাল। দুই ওপেনার মিলে একদিকে যেমন দলের সংগ্রহকে সমৃদ্ধ করছিলেন তেমনি গুজরাটের বোলারদের ঘাম ঝড়িয়ে ছাড়ছিলেন।

বেশিক্ষণ অবশ্য তাদের এ লড়াই স্থায়ী হতে পারেনি। একদিকে বাটলার তার শীতল ঝড় অব্যাহত রাখলেও অন্য প্রান্তে অবস্থা বেশ টালমাটাল ছিল। ১৬ বলে ২২ রান করে জয়সাল আউট হয়ে যান। জস দয়ালের শিকার হন তিনি। বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি অধিনায়ক সাঞ্জু স্যামসনের উইকেটও। মূলত জয়সালের উইকেট পতনের মাঝ দিয়ে রাজস্থানের পতনের সূচনা হয়। অন্যদিকে জয়সরালের উইকেট শিকারের মাঝ দিয়ে গুজরাটের বোলাররা উইকেট শিকারের দরজাটা চিনে যায়। একের পর একই উইকেট শিকার করতে থাকে। নির্ধারিত বিরতিতে ঘটতে থাকে উইকেটের পতন। তার মাঝ চতুর্থ ব্যাটার হিসেবে আউট হন বাটলার। ৩৫ বলে ৩৯ রান করে পান্ডের বলে সাহার হাতে ধরা পড়েন। পান্ডে এর আগে অধিনায়ক স্যামসনের এবং শিমরন হেটমায়েরের উইকেট নেন। মূলত উদ্বোধনী জুটির পর রাজস্থানের আর কোনো ব্যাটার দাঁড়াতেই পারেননি। ফলে গুজরাটের সামনে বড় লক্ষ্যমাত্রাও দিতে পারেনি। তারই সুবাদে ব্যাটিংয়ে নামার আগেই জয়ের অর্ধেক কাজটা করে ফেলে গুজরাট।

মাত্র ১৩১ রান করতে পারলেই শিরোপা ধরা দেবে। এমন লক্ষ্যমাত্রায় খেলতে নেমে গুজরাটের শুরুটা যে স্বস্তিদায়ক ছিল তা কিন্তু নয়। বরং অস্বস্তিই ছিল বেশি। কেননা শুরুটা তাদের বেশি নাজুকই ছিল। মাত্র ২৩ রানের মধ্যে জোড়া উইকেট হারিয়েছিল তারা। শুরুর এই ধাক্কা ভালোভাবেই সামাল দিয়েছিলেন অধিনায়ক হৃদিক পাণ্ডে। তার সঙ্গে ছিলেন ওপেনার শুভমান গিল। ৬৩ রানের জুটি গড়েন তারা। মূলত এ জুটিই গুজরাটকে দলের ঠিকানা দেখিয়ে দেয়। ৩৪ রানে পান্ডে আউট হওয়ার পর ডেভিড মিলার এসে যে ঝড় তোলেন তাতে করে রাজস্থানের বোলারদের লাইন লেন্থ নড়বড়ে হয়ে যায়। আর সে ফাঁকে গুজরাট পৌঁছে যায় জয়ের ঠিকানায়। মিলার ১৯ বলে ৩২ রান করেন। তিন বাউন্ডারির পাশাপািশ একটি ওভার বাউন্ডারিতে সাজানো ছিল তার ইনিংসটি। বল ও ব্যাট হাতে দারুণ পারফরম্যান্সের ফলে পান্ডে ম্যাচ সেরা হয়েছেন। আর ফাইনালে ব্যর্থ হলেও জস বাটলার হয়েছেন সিরিজ সেরা।