অভিষেকেই আইপিএলে চ্যাম্পিয়ন গুজরাট টাইটান্স। নতুন কোনো দল এমনটি করতে পারে- নিলামের সময় কেউ ভাবেনি। অধিনায়ক হিসেবে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন অলরাউন্ডার হার্দিক পান্ডিয়া। অধিনায়ক হিসেবে প্রথম শিরোপার জয়ের স্বাদও পেলেন তিনি। রাজস্থানকে হারিয়ে শিরোপা জয়ের উৎসবে ভাসছে গোটা গুজরাট শিবির। আইপিএলের শিরোপা জিতে খুশি দলের অধিনায়ক পান্ডিয়া। এবার চোখ তার বিশ্বকাপের দিকে। টিম ইন্ডিয়ার হয়ে বৈশশ্বক শিরোপা মঞ্চে হাসতে চান তিনি।
আইপিএলের নিলামের পর গুজরাটকে ফেভারিটের কাতারে রাখেননি তেমন কেউ। সেই দলটিই শুরু থেকে দাপট দেখিয়ে শেষ পর্যন্ত ফাইনালে রাজস্থান রয়্যালসকে খুব একটা পাত্তা না দিয়ে শিরোপা জিতে নিল রোববার। দলের জয়ে পান্ডিয়া নেতৃত্ব দেন সামনে থেকেই। ব্যাট হাতে গোটা মৌসুমে তার পারফরম্যান্স ছিল দুর্দান্ত ও দারুণ ধারাবাহিক। চোটের কারণে শুরুতে বোলিং না করলেও শেষদিকে টুকটাক শুরু করেন। ফাইনালে তিনি জ¦লে ওঠেন বল হাতে। গুরুত্বপূর্ণ তিনটি উইকেট শিকারের পর ব্যাটিংয়ে কার্যকর ইনিংস খেলে ম্যান অব দা ফাইনাল তিনিই। এমনিতে ভারতীয় দল ও আইপিএলে আগে বরাবরই তার ভূমিকা ছিল ৬-৭ নম্বরে নেমে বা শেষ সময়ে নেমে ঝড় তোলা। এবার অধিনায়ক হয়ে গুজরাটে তিনি খেলেন স্পেশালিস্ট মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবে। তাতে তার স্ট্রাইক রেট কিছুটা কমে গেলেও মৌসুমজুড়ে ছিলেন ধারাবাহিক ও দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ১৫ ইনিংস খেলে তার রান আসরের চতুর্থ সর্বোচ্চ ৪৮৭। গড় ৪৪.২৭, স্ট্রাইক রেট ১৩১.২৬।
চোট-আঘাতের সঙ্গে লম্বা লড়াই, দীর্ঘসময় ধরে মাঠের বাইরে থাকা ও জাতীয় দল থেকে দূরে থাকার পর নিজেকে ফিরে পাওয়ার চেষ্টায় টনিক হয়ে এলো এ শিরোপা। ফাইনালের পর তিনি সরাসরিই জানিয়ে দিলেন নিজের পরের চাওয়া। তিনি বলেন, ‘যেটাই হোক না, অবশ্যই চাই ভারতের হয়ে বিশ^কাপ জিততে। এটার জন্য নিজের সবটুকু উজাড় করে দেব। মানুষ হিসেবে আমি বরাবরই এমন, যে কিনা দলকে সবকিছুর ওপরে রাখে। আমার জন্য লক্ষ্যটা সবসময় সাধারণ, দলের সর্বোচ্চ পাওয়াটা নিশ্চিত করা।’ ‘যত ম্যাচই খেলি না কেন, ভারতের হয়ে প্রতিটি ম্যাচ খেলাই আমার কাছে স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতো ব্যাপার। দেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে পারা সবসময়ই বড় পাওয়া। এই যে এত ভালোবাসা ও সমর্থন, সব তো ভারতীয় দলের জন্যই পাই। স্বল্প মেয়াদের লক্ষ্য বলুন বা দীর্ঘ মেয়াদে, যেকোনো মূল্যে চাই বিশ্বকাপ জিততে।’
ভারতের হয়ে তিনটি আইসিসি শিরোপা জয়ের কাছাকাছি গেলেও শেষ পর্যন্ত পারেননি পান্ডিয়ারা। ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেয় ভারত, ২০১৭ আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে হেরে যায় পাকিস্তানের কাছে। পান্ডিয়ার আগের চারটি আইপিএল শিরোপা ছিল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে। এবার খেললেন নিজ রাজ্য গুজরাটের হয়ে। নেতৃত্বগুণ ও গোছানো ক্রিকেট দিয়ে তিনি চমকে দিয়েছেন অনেককে। ফাইনাল জিতলেন নিজ রাজ্যেরই মাঠ আহমেদাবাদে, বিশে^র সবচেয়ে বেশি দর্শক ধারণক্ষমতার স্টেডিয়ামে লাখো দর্শকের সামনে। এবার শিরোপাকে তাই সামান্য এগিয়ে রাখছেন তিনি। ‘অবশ্যই এটি একটু বেশি স্পেশাল, কারণ অধিনায়ক হিসেবে জিতেছি। তবে আগের চারটিও স্পেশাল ছিল। আইপিএলের শিরোপা সবসময়ই স্পেশাল। ৫টি ফাইনাল খেলতে পেরে এবং প্রতিবারই ট্রফি উঁচিয়ে ধরতে পেরে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি।’ ‘এবার যেহেতু নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে জিতলাম, এটি অবশ্যই একটি উত্তরাধিকার ও ধারা গড়ে তুলবে। প্রথমবার দল গড়ে প্রথম মৌসুমেই চ্যাম্পিয়ন। তবে আগের চারটিও সমান স্পেশাল ছিল।’