logo
আপডেট : ৩১ মে, ২০২২ ০৯:৫৫
আর্জেন্টিনা-ইতালির শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই
ক্রীড়া ডেস্ক

আর্জেন্টিনা-ইতালির শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই

ফুটবলভক্তরা বুধবার রাতে অসাধারণ এক ম্যাচের সাক্ষী হতে যাচ্ছে। ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন ইতালি ও দক্ষিণ আমেরিকান চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা মুখোমুখি হচ্ছে ম্যাচটিতে। বিশ্ব ফুটবলের দুই সুপারপাওয়ারের লড়াই। আর এ লড়াইয়ের নাম লা ফিনালিসিমা। বাংলাদেশ সময় রাত ১২.৪৫ মিনিটে ইংল্যান্ডের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে।

ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন ও দক্ষিণ আমেরিকান চ্যাম্পিয়নের মধ্যে এটি প্রথম লড়াই হলেও আসলে এটি তৃতীয় আসর। এর আগে ১৯৮৫ ও ১৯৯৩ সালে দুইবার এমন লড়াই হয়েছিল। প্রথম আসরে উরুগুয়েকে হারিয়ে ফ্রান্স ও পরবর্তী আসরে ডেনমার্ককে হারিয়ে আর্জেন্টিনা শিরোপা জিতেছিল। পরবর্তীতে টুর্নামেন্টটি আর মাঠে গড়ায়নি। দীর্ঘ ২৯ বছর পর উয়েফা ও কনমেবলের উদ্যোগে আবার মাঠে গড়াচ্ছে আসরটি। এক ম্যাচের টুর্নামেন্ট। অন্য সব ম্যাচ থেকে এই ম্যাচটা একটু ভিন্ন আমেজে অনুষ্ঠিত হবে। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের পর কোনো অতিরিক্ত খেলা হবে না। ফল নির্ধারণে সরাসরি টাইব্রেকার অনুষ্ঠিত হবে।

বিশ্বসেরা হওয়ার লড়াইটা ইতালির জন্য একটু ভিন্ন। ইউরো চ্যাম্পিয়ন হিসেবে তারা এখানে খেলতে এসেছে, অথচ ইউরোপ অঞ্চল থেকে তারা বিশ্বকাপে জায়গা করে নিতে পারেনি। সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের জন্য স্বাভাবিকভাবেই এ ম্যাচটা একটু ব্যতিক্রম। জয়ের মাধ্যমে দেশবাসীর মুখে একটু হলে হাসি ফোটানোর চেষ্টা থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তাছাড়া এ ম্যাচটা অধিনায়ক গিওর্গি চিয়েলিনির জন্য বিশেষ এক ম্যাচ। কেননা এ ম্যাচের মাধ্যমে তিনি আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ইতি টানবেন। কোচ রবার্তো মানচিনি সে দিকটা যেমন খেয়াল রেখেছেন। তেমনি ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে দল সাজিয়েছেন।

ইউরো জয়ী তারকা চিয়েলিনিকে সম্মান জানানোর জন্য তাকে নিয়েই দল গঠন করেছেন। তবে তাকে হয়তো প্রথম একাদশে রাখবেন না। ভবিষ্যতের তারকার দিকেই তার নজর বেশি। তাইতো আলেসান্দ্রো বাস্তোনি, সান্দ্রো টোনালি, নিকোলো জানিওলো ও গিয়ানলুক স্ক্যামাকাকে প্রথম একাদশে দেখা যেতে পারে।

বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে খেলার তরতাড়া অভিজ্ঞতা নিয়ে দুই দলই মাঠে নামছে। তবে দুই দলের স্মৃতি অবশ্য ভিন্ন। আর্জেন্টিনা সাফল্যের সঙ্গে বিশ্বকাপের বাছাই পর্বের বাধা পার হয়েছে। অন্যদিকে ইতালি ব্যর্থ। তবে সর্বশেষ ম্যাচের অভিজ্ঞতা আবার ভিন্ন। ইতালি তাদের সব শেষ ম্যাচে তুরস্ককে ৩-২ গোলে হারানোর স্মৃতি নিয়ে এ ম্যাচে মাঠে নামবে। অন্যদিকে আর্জেন্টিনা তাদের সব শেষে ম্যাচে ইকুয়েডরের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে। আর্জেন্টিনার ম্যাচটি ছিল বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের, অন্যদিকে ইতালির ছিল প্রীতি ম্যাচ।

গত তিন বছর ধরে অপরাজিত আর্জেন্টিনা। এর মাঝে ২৮ বছরের খরা কাটিয়ে তারা কোপা আমেরিকা জয় করেছে। তবে গত তিন বছরে সবগুলো ম্যাচ দক্ষিণ আমেরিকার দলের বিপক্ষে খেলেছে। ২০১৯ সালের পর এই প্রথম লিওনেল মেসিরা কোনো ইউরোপিয়ান দলের মুখোমুখি হচ্ছে। সে সময়ে তারা জার্মানির বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে খেলেছিল। ম্যাচটি ২-২ গোলে ড্র হয়েছিল। এ বিষয়ে আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্ক্যালোনি বলেন, ‘কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বীর বিপক্ষে খেলা সবসময়ের জন্য ভালো। আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়রা তাদের পরিবার, তাদের বন্ধু বান্ধব এবং খ্যাতির জন্য খেলে থাকে। এ ম্যাচে জিততে তারা সর্বস্ব উজাড় করে দেবে।’

অন্যদিকে ইতালি কোচ তার বক্তব্যে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের কথা টেনে এনেছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে পৌঁছানো উচিত ছিল। কিন্তু আমরা পারিনি। আমাদের একটা তরুণ দল রয়েছে। সমর্থকরা রয়েছে আমাদের সঙ্গে। এক বছর আগে আমরা ইউরো জয় করেছি। নেশনস লিগে আমরা কঠিন গ্রুপে রয়েছি।’

এ পর্যন্ত মুখোমুখি লড়াইয়ে ইতালি এগিয়ে। ১৬ ম্যাচে ইতালি ছয়বার জয় পেয়েছে। আর্জেন্টিনার জয়ের সংখ্যা পাঁচ। তবে সর্বশেষ চার ম্যাচের একটাতে ইতালি জয় পায়নি। দুই ম্যাচে জয় ছিল আর্জেন্টিনার। এর মাঝে সর্বশেষ ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয় ২০১৮ সালে। সে ম্যাচে আর্জেন্টিনা ২-০ গোলে জিতেছিল।

সম্ভাব্য দল:
আর্জেন্টিনা : ইমিলিয়ানো মার্টিনেজ, মার্কোস অ্যাকুনা, জার্মান পাজেলা, নিকোলাস ওতামেন্দি, নাহুয়েল মোলিনা, গুইডো রদ্রিগুয়েজ, রদ্রিগো ডি পল, জিওভান্নি লো সেলসো, অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া, লিওনেল মেসি ও লাউতারো মার্টিনেজ।

ইতালি: গিয়ানলুইগি ডোনারুমা, ইমারসন, গিওর্গি চিয়েলিনি, লিনার্দো বানুচি, জিওভান্নি ডি লরেঞ্জো, জর্জিনহো, মার্কো ভেরাত্তি, নিকোলো বারেলা, নিকোলো জানিওলো, লরেঞ্জো ইনসিগনে ও গিয়ানলুকা স্ক্যামাকা।