সুস্থ, সুখী ও সরল জীবনের জন্য প্রয়োজন শারীরিক সুস্থতা। শারীরিক সুস্থতা অর্জনের জন্য নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপন ও সঠিক খাদ্য ব্যবস্থাপনা অপরিহার্য। সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হলে প্রতিটি মানুষই সফল ও সুখী হতে পারে। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রাত্যহিক জীবনে সঠিক নিয়ম অনুসরণ করলে জীবন সহজ, সুন্দর, গতিশীল, সফল ও আকর্ষণীয় হয়।
যারা নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপন করেন না তারা বিভিন্ন কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। এরা অনেকেই ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপের মতো জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হয়। তবে এ ক্ষেত্রেও নিয়মতান্ত্রিক জীবন ও খাদ্য ব্যবস্থাপনা রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাময়ের জন্য অনেকাংশে সহায়তা করে থাকে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মানুষের স্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নেওয়া উচিত, যা আপনাকে মানসিক উন্নতির পাশাপাশি বিষণ্নতাকে দূরে রেখে সম্পূর্ণ সুস্থ রাখতে পারে। সুস্থ শরীরের জন্য নয়, এনার্জি লেভেল বাড়াতেও এগুলো প্রতিদিন খাওয়া উচিত।
প্রতিদিন স্বাস্থ্যকর খাবার আপনাকে মানসিক উন্নতির পাশাপাশি বিষণ্নতাকে দূরে রেখে সম্পূর্ণ সুস্থ রাখতে পারে। আপনি যদি সারাদিনই ব্যস্ত থাকেন, তাহলে প্রতিদিন কী কী খাবার খাওয়া উচিত জেনে নিন।
দিনে ৫ বার খাবার খান: পুষ্টিবিদদের মতে, প্রতিদিন ফল এবং সবজি খাওয়া উচিত। কারণ এগুলো পুষ্টিতে ভরপুর। এর মধ্যে ভিটামিন, মিনারেল এবং ফাইবারও খুব ভালো পরিমাণে পাওয়া যায়। দিনে কমপক্ষে ৫ বার খাবার খান। কাঁচা ফল বা সবজি বা ১ কাপ শাক-সবজির সমান। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ২ থেকে ৩টি ফল খাওয়ার পরামর্শ দেন। যা শুধু হজমের জন্যই নয় ত্বকের জন্যও খুবই উপকারী।
গম বা যবে তৈরি রুটি খান: চাল, যব এবং গমের মতো শস্যগুলোকে আমাদের প্রতিদিনের খাবারে খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত। ভালো জিনিস হলো যে এসব খাদ্য গ্লুটেনমুক্ত এবং ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে পূর্ণ।
মসুর ডাল অবশ্যই খান: পুষ্টিবিদদের মতে, ডাল, লেবুর দুই থেকে তিন অংশ খেলে শরীরে প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেলের ঘাটতি মেটাতে সাহায্য করে। প্রোটিন আমাদের শরীরের সামগ্রিক শক্তি বৃদ্ধিতে এবং মেরামত করতে প্রধান ভূমিকা পালন করে।
স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস খান: যারা সারাদিন ব্যস্ত থাকেন তাদের স্বাস্থ্যকর খাবার যেমন কুমড়া এবং সূর্যমুখী বীজ, বাদাম, ফল, কম চিনি, প্রোটিন বার, গ্রানোলা, অঙ্কুরিত মুগ, ভাজা ছোলা খাওয়া উচিত। এগুলো প্রোটিন সমৃদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি আপনার স্বাস্থ্যের জন্যও খুব উপকারী। বিশেষজ্ঞদের মতে, সঠিক স্ন্যাকিংয়ের বিকল্পটি কেবল অনেক স্বাস্থ্য সমস্যাই প্রতিরোধ করে না, তবে ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্যও ভালো কাজ করে।
বেশি করে পানি পান করুন: সারাদিন হাইড্রেটেড থাকলে শক্তির মাত্রা বজায় রাখে। বেশি পানি খেলে আপনার শরীরকে টক্সিন মুক্ত করে এবং জয়েন্টগুলোকে লুব্রিকেট করতে সাহায্য করবে। শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সারাদিন প্রচুর পানি পান করাও প্রয়োজন।
ব্যস্ত মানুষ শুধু স্বাস্থ্যকর খাবার থেকে পুষ্টি পেতে পারে না। আপনি যদি প্রতিদিনের প্রয়োজন মেটাতে স্বাস্থ্যকর ডায়েট অনুসরণ করতে না পারেন, তাহলে আপনি আপনার ডায়েটে উচ্চ প্রোটিন এবং মাল্টিভিটামিন সম্পূরক অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।
বীজ এবং বাদাম খান: বীজ এবং বাদাম তাৎক্ষণিক শক্তি প্রদান করে। প্রতিদিন ৪-৫টি ভিজিয়ে রাখা বাদাম এবং দুটো আখরোট খেতে পারেন। বাদাম খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করার পাশাপাশি স্মৃতিশক্তি বাড়াতেও সহায়ক। একইভাবে বীজে রয়েছে প্রোটিন, ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর পাশাপাশি হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে কার্যকর।