উয়েফা নেশনস লিগে নিজেদের প্রথম ম্যাচে পয়েন্ট ভাগাভাগি করেছে স্পেন ও পর্তুগাল। বৃহস্পতিবার রাতে স্পেনের স্তাদিও বেনিতো ভিলামারিন স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়। স্পেনের হয়ে আলভারো মোরাতা এবং পর্তুগালের হয়ে রিকার্ডো হোর্তা গোল করেন।
স্পেন ও পর্তুগালের ফুটবল লড়াইয়ে কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলছে না। যদিও অতীত বলছে ভিন্ন কথা কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে তাদের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছে। এ ম্যাচ ড্র’র মাধ্যমে টানা চার ম্যাচ অমীমাংসিতভাবে শেষ হলো। পর্তুগাল অবশ্য কোনো প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে স্পেনকে কখনো হারাতে পারেনি। আর স্পেনের মাটিতে কোনো ধরণের ম্যাচেই তারা জয়ের মুখ দেখেনি। এবারের ম্যাচে ড্রর মাঝ দিয়ে সেই ধারা অব্যাহত থাকলো।
উয়েফা নেশনশ লিগের এ-২ গ্রুপের ম্যাচটি দারুণ দ্যুতি ছড়িয়ে শুরু হয়েছিল। আক্রমণ আর পাল্টা আক্রমণে ম্যাচটি ক্রমেই প্রাণবন্ত হয়ে উঠছিল। এরই মাঝে তৃতীয় মিনিটেই গোলের সুযোগ পেয়েছিল স্বাগতিক স্পেন। পর্তুগালের বিপদ সীমানার বাইরে থেকে মিডফিল্ডার গাভি পাওয়া সুযোগটি কাজে লাগাতে পারেননি। তার শটটি পর্তুগালের রক্ষণভাগের খেলোয়াড়দের গায়ে লেগে বাধাপ্রাপ্ত হয়।
স্পেন শুরুতেই সুযোগটি হারানোর পরপরই আরো একটি সুযোগ পেয়েছিল। দারুণ দক্ষতায় এবার পেপে দলকে রক্ষা করেন। তবে একের এক আক্রমণের ফসল ঠিকই তুলে স্বাগতিকরা। ২৫ মিনিটের সময় গাবি ও পাবলো সারাবিয়ার আক্রমণ থেকে তৈরি হওয়া সুযোগটি কাজে লাগিয়ে দলকে এগিয়ে নেন মোরাতা। ২০২২ সালে জাতীয় দলেল হয়ে এটা তার প্রথম গোল। ২৯ বছর বয়সী মোরাতা এবার বিশ্বকাপেও খেলবেন বলে আশা করছেন।
গোল হজমের পরপরই পর্তুগাল সমতা আনার সুযোগ পেয়েছিল। বিরতির আগে পাওয়া দুটো সুযোগ নষ্ট করেন ফরোয়ার্ড রাফায়েল লিও ও স্ট্রাইকার আন্দ্রে সিলভা। বিরতির ১৫ মিনিট পর লিয়াও গোল করার সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি। সিলভার পাস থেকে পাওয়া বলে তিনি যে শট নিয়েছিলেন তা স্পেনের ডিফেন্ডার ডিয়াগো লোরেন্তে বাধা দিতে ব্যর্থ হন। বল গোলে যাওয়ার আগ মূহুর্তে ঝাঁপিয়ে পড়ে তা ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক উনাই সিমন।
একের পর এক ব্যর্থতার মাঝে পর্তুগালের আরো এক গোল হজম করার অবস্থা হয়েছিল। ৬৪ মিনিটে মোরাতা দলের এবং নিজের দ্বিতীয় গোল করার সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু তার শট পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। পরে মোরাতাকে তুলে নেন কোচ।
এদিকে বদলি হয়ে মাঠে আসা পর্তুগালের হোর্তা ম্যাচ শেষ হওয়া আট মিনিট আগে স্পেনকে স্তদ্ধ করে দেন। সে সঙ্গে নিজ দলের সমর্থকদের আনন্দে ভাসিয়ে দেন। স্পেনের পয়েন্টে ভাগ বসান। ২০১২ সালের ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচও ড্র হয়েছিল। টাইব্রেকারে স্পেন জয়ের মুখ দেখেছিল। পরবর্তী উভয় দল দুইবার প্রীতি ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে। দুটো ম্যাচই অমীমাংসিত ছিল।
স্পেন পরবর্তীতে সুইজারল্যান্ড এবং চেক প্রজাতন্ত্রের বিপক্ষে খেলবে। একই প্রতিপক্ষের মোকাবেলা করবে পুর্তগালও। আগামী ১০ দিনের মধ্যে এই চারটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে।
ম্যাচ শেষে মোরাতা বলেন, ‘আমরা শেষ পর্যন্ত ভালেভাবে ম্যাচটি শেষ করতে পারিনি তবে আমার বিশ্বাস আমরা ভালো একটা ম্যাচ খেলেছি। পর্তুগাল দল খুবই শক্তিশালী। তাদের দলে বেশ কয়েকজন ভালো খেলোয়াড় রয়েছে। আমাদের আরো ভালো খেলতে হবে। সামনে আমাদের আরো ম্যাচ রয়েছে।’
মোরাতা আরো বলেন, ফুটবল অনেকটা এরকম। আমরা বেশ কিছু সুযোগ পেয়েছিলাম কিন্তু সে সব সুযোগ কাজে লাগাতে পারিনি। তারা ঠিকই সুযোগ পেয়ে সমতায় ফিরিয়ে আনে।’