স্প্যানিশ লিগে গোলের পর গোল করেছেন। চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও ছিলেন উজ্জ্বল। জিতেছেন উভয় শিরোপা। উয়েফা নেশনস লিগেও গোল করেছেন করিম বেনজেমা। কিন্তু দলকে জয় এনে দিতে পারেননি। বরং বদলি খেলোয়াড় আন্দ্রে কর্নেলিউস জোড়া গোল করে ডেনমার্ককে জয় নিয়ে এনে দিয়েছেন। ফ্রান্সের স্তাদে ডি ফ্রান্স স্টেডিয়ামে শুক্রবার অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টে এ-১ গ্রুপের খেলায় পিছিয়ে পড়েও ডেনমার্ক ২-১ গোলে জয় পেয়েছে।
এক সপ্তাহ ব্যবধানে ভিন্ন দুই চিত্র দেখলেন করিম বেনজেমা। গত শনিবার এ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে লিভারপুলকে হারিয়ে বেনজেমা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের উৎসব করেন। আর এ দিন হারের তিক্ত স্বাদ হজম করতে হলো। অথচ বেনজেমা আরো একটা উজ্জ্বল রাত পার করতে যাচ্ছেন ম্যাচে ফ্রান্স তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছিল। গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই গোল করে দলকে এগিয়ে নিয়েছিলেন স্প্যানিশ লিগের সর্বোচ্চ এই গোলদাতা। আরো একবার বল জালে ফেলেছিলেন তিনি। কিন্তু অফসাইডের কারণে গোলটি বাতিল হয়। অন্যদিকে বদলি খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নেমে কর্নেলিউস বেনজমার সব আলো কেড়ে নেন। জোড়া গোল করেন তিনি।
বেনজমার সতীর্থ কিলিয়ান এমবাপেও এ ম্যাচে অনেকটা নিষ্ক্রিয় ছিলেন। তাছাড়া ইনজুরির কারণে তাকে কোচ মাঠ থেকে তুলেও নিয়েছিল। তবে ৫১ মিনিটে অসাধারণ দক্ষতায় গোল করে দলকে এগিয়ে নিয়েছিলেন বেনজেমা। ক্রিস্টোফার এনকুনকার সঙ্গে দেওয়া নেওয়ায় তৈরি সুযোগকে কাজে লাগিয়ে গোল করেন তিনি। চমৎকার ড্রিবলিংয়ে ডেনমার্কের একাধিক ডিফেন্ডারকে কুপোকাত করেই বল সহজে জালে জড়িয়ে দেন। এ গোলের পর ফ্রান্স আরো উজ্জ্বীবিত হয়ে উঠে। ডেনমার্ককে প্রচণ্ড চাপের মধ্যে রাখে। ব্যবধান বাড়ানোর দারুণ এক সুযোগ পেয়েছিলেন বেনজেমা। কিন্তু ডেনমার্কের ছোট বক্সের মধ্যে পাওয়া সুযোগটি তিনি কাজে লাগাতে পারেননি। মূলত শারীরিক ভারসাম্য রক্ষা করতে ব্যর্থ হওয়ায় বলটি সঠিক ঠিকানায় পাঠাতে পারেননি।
ফ্রান্সের চাপে পৃষ্ঠ হতে থাকা ডেনমার্ক ৬৮ মিনিটে সমতায় ফেরে। পিয়েরে হোবার্গের পাস থেকে পাওয়া বলে পা ছুঁয়ে বলকে সঠিক ঠিকানায় পাঠিয়ে দেন বদলি খেলোয়াড় কর্নেলিউস। মূলত এ গোলই ফ্রান্সের আক্রমণের ওপর বিরতি টেনে দেয়। ধীরে ধীরে তারা আবার খেলায় আধিপত্য বিস্তার করে। তারই সুবাদে ৮১ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল ফ্রান্স। এনগোলো কান্তে পেয়েছিলেন সুযোগটি। কিন্তু তার শটটি ডেনমার্কের গোলরক্ষকের দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখা ছাড়া উপায় ছিল না। কেননা কান্তের শটটি তার আয়ত্ত্বেও অনেক বাইরে ছিল। তবে বল পোস্টে লাগায় সে যাত্রায় ডেনমার্ক রক্ষা পায়। আর ৮৬ মিনিটে কর্নেলিউসেল গোল ফ্রান্সকে হতবাক করে দেয়। দূরূহ এক কোন থেকে গোলটি করেন তিনি। ২৯ বছর বয়সী কর্নেলিউস অফ সাইড ফাঁদকে ফাঁকি দিয়ে জোয়াকিম মায়েলের লম্বা পাস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে অসাধারণ দক্ষতায় গোলটি করেন।
ম্যাচ শেষে কর্নেলিউস বলেন, আমার প্রত্যাশার চেয়ে অনেক ভালো খেলেছি। ৮০ হাজার দর্শকের সামনে আমরা বিশ্বের সেরা দলকে হারিয়েছি। আমাদের দলটাও শক্তিশালী। প্রত্যেক পজিশনে আমাদের ভালো খেলোয়াড় রয়েছে। আমাদের সাইড বেঞ্চটাও শক্তিশালী। সেখানে যারা থাকে তারাও সমান তালে লড়তে পারে। আমাদের দেশটা ছোটো কিন্তু আমরা সেরা খেলা উপহার দিতে পারি।’
আগামী সোমবার ফ্রান্স তাদের পরবর্তী ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার মুখোমুখি হবে। অন্যদিকে ডেনমার্ক খেলবে অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে। ডেনমার্কের জন্য এ ম্যাচটা কঠিন হতে পারে। কেননা অস্ট্রিয়া ৩-০ গোলে ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়ে সে ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছে।