logo
আপডেট : ৫ জুন, ২০২২ ১৮:০৪
‘স্টুপিড’ প্রশ্নে বিরক্ত তামিম
ক্রীড়া ডেস্ক

‘স্টুপিড’ প্রশ্নে বিরক্ত তামিম

একজন প্রশ্ন করেছেন, আরেকজন উত্তর দিয়েছেন। তবে সব মিলিয়ে পরিস্থিতি তামিমের জন্য সুখকর ছিল না। বিষয়টিতে বরং বিব্রত তিনি। যিনি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন, তাকে নিয়ে কিছু না বললেও প্রশ্নকর্তাকে প্রকারন্তরে নির্বোধ সম্বোধন করলেন দেশসেরা এ ওপেনার। গত শনিবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ছিল ক্রিকেটারদের ঐচ্ছিক অনুশীলন। সেসময় বাংলাদেশের ব্যাটিং কোচ জেমি সিডন্সের কাছে প্রশ্ন রাখা হয়, ‘সিনিয়র ব্যাটসম্যানরা নিচের অর্ডার ব্যাটিং করতে পারেন কিনা।’ উত্তরে অস্ট্রেলিয়ান কোচ জানান, ৪ নম্বরে ‘ফ্যান্টাস্টিক’ ব্যাটসম্যান হতে পারেন তামিম ইকবাল। এমনকি তামিম নিজেও এটা পছন্দ করবেন। কিন্তু পরদিনই এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক জানালেন, এটা ছিল স্টুপিড প্রশ্ন।

গতকাল রোববার দুই বছরের জন্য রবির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে চুক্তি স্বাক্ষর করেন তামিম। অনুষ্ঠানে তামিমকে ৪ নম্বরে ব্যাটিং করার প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হয়। প্রশ্নটি শুনে সাংবাদিককে পাল্টা প্রশ্ন ছোড়েন অভিজ্ঞ এ ওপেনার। ওপেনিংয়েই ব্যাটিং করাটা তার জন্য ভালো, প্রশ্ন কর্তার এমন মন্তব্য শোনার পর নিজের ব্যাখ্যা দেন তামিম। ব্যাটিং কোচকে নিয়ে কিছু না বললেও আগের দিনের প্রশ্নকর্তাকে ধুয়ে দেন তিনি। একদিন আগেই ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে জেমি সিডন্স নিজের মতামত ব্যক্ত করেছিলেন। দেশসেরা ওপেনার তামিমকে চারে ব্যাটিং করার কথা বলেছিলেন এ ব্যাটিং কোচ। যদিও সেটা ছিল এক্সপেরিমেন্ট। তামিমের বিকল্প ওপেনার না থাকায় এমনটি হওয়া সহজ না বলেও অভিহিত করেছিলেন তিনি। তবে একদিন পর সিডন্সের সেই মতামতকে উড়িয়ে দিলেন তামিম ইকবাল। জানিয়ে দিলেন চারে ব্যাটিং করার কোনো কারণ তিনি খুজে পান না। আর এমন প্রশ্ন নির্বুদ্ধিতার মতো।

তামিম বলেন, ‘আমার মনে হয়, যে ব্যক্তি এ প্রশ্নটা করেছে, তার মাথায় কী আছে...আমার কোনো ধারণা নেই। কিন্তু প্রশ্নটা ছিল তা খুবই স্টুপিড...। আমি নিজের কাছে চারে ব্যাটিং করার কোনো কারণই খুঁজে পাই না। ১৭ বছর ধরে আমি ওপেনিংয়ে ভালোই করছি।’ সাদা বলের ক্রিকেটের ওপেনারদের টেস্টে মিডলঅর্ডারে ব্যাট করা নতুন কিছু নয়। সনাথ জয়সুরিয়া-বিরেন্দ্র শেবাগরা একটা পর্যায়ে মিডলে খেলেছেন। শচীন টেন্ডুলকার লাল বলে চারে ব্যাটিং করেছেন। চারে নড়বড়ে মুমিনুল হকের জায়গায় সিনিয়র ব্যাটার তামিম ইকবালকে টেস্টের সেরা ব্যাটিংঅর্ডার চারে খেলানো যায় কিনা, ব্যাটিং কোচ জেমি সিডন্সকে এমন প্রশ্ন করা হয়েছিল। বিষয়টিকে কোচ ইতিবাচকভাবে নিলেও তামিম ইকবাল বললেন, ‘স্টুপিড’ প্রশ্ন। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের পর প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো বলেছিলেন, ব্যাটিং ধস থামাতে ব্যাটিংঅর্ডারে কিছু ওলট-পালট করার প্রয়োজন হলে করতে হবে। তবে সেখানে তামিমের নাম তিনি উল্লেখ করেননি। তাকে নিচে খেলানোর তেমন কোনো বাস্তবতাও আপাতত নেই।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মিরপুর টেস্টে ক্যারিয়ারের প্রথমবারের মতো ‘পেয়ার’ তিনি পেয়েছেন বটে। তবে আগের টেস্টেই করেছিলেন সেঞ্চুরি। কোভিড বিরতি শেষে খেলা শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত ৭ টেস্ট খেলে তার রান ৪৮ গড় ৫৭৬। সিডন্সের কাছে প্রশ্ন হওয়ার পর তার উত্তরটা ছিল অবশ্য বৃহত্তর দৃষ্টিকোণ থেকে কৌতূহল জাগানিয়া। ‘বেশিরভাগ দেশেই সিনিয়র ক্রিকেটাররা লম্বা সময় ওপেন করলে সুযোগটা পায় (একটু নিচে নামার)। একটু নিচে নামতে পারলে তামিমেরও ভালো লাগবে বলে ধারণা আমার। তবে আগে তো আরেকজন ওপেনার খুঁজে বের করতে হবে! ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফর্ম করেনি বা ‘এ’ দলে কিংবা টাইগার্সে পারফর্ম করছে না, এমন কাউকে আমরা স্রেফ ওপরে ঠেলে দিতে পারি না। এটাই চ্যালেঞ্জ আমাদের জন্য। তামিমকে চারে নামাতে হলে আরেকজন ভালো ওপেনার লাগবে। আমার মতে, চার নম্বরে সে ‘ফ্যান্টাস্টিক’ হতে পারে।’ তবে তামিম যে আপাতত তেমন কিছুর চেষ্টাও করবেন না, সেটি তার উত্তরেই পরিষ্কার।

দীর্ঘ ১৫ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ৪২৯ ইনিংসে মাত্র একবার ইনিংস উদ্বোধন করেননি তামিম। ২০১৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে প্রথমবারের মতো ইনিংস উদ্বোধন না করে অন্য পজিশনে ব্যাটিং করেন তামিম। পচেফস্ট্রুম টেস্টে প্রোটিয়াদের ব্যাটিং ইনিংসের শেষ দিকে ফিল্ডিংয়ে ছিলেন না তিনি। এ কারণে ইনিংস উদ্বোধন করতে পারেননি বাংলাদেশ ওপেনার। ওই ম্যাচে ৫ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩৯ রানের ইনিংস খেলেন তামিম। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সাকিব আল হাসানের টেস্ট নেতৃত্ব নিয়েও কথা বলেন তামিম ইকবাল। তিনি জানান, সাকিবের নেতৃত্বে আগে দুবার খেলেছেন তিনি। সাকিব ভালো অধিনায়ক। তবে টেস্টে ভালো করতে হলে তাকে সময় দিতে হবে। কারণ টেস্টে বাংলাদেশ ভালো দল নয়। এ ফরম্যাটে ফলাফল বাংলাদেশের পক্ষে আসে না। টেস্ট দলকে নেতৃত্ব দেওয়া সহজ নয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।