নিকোলাস পুরানের চমৎকার বোলিং। ৪৮ রানে ৪ উইকেট। আকিল হোসেনের বিধ্বংসী ব্যাটিং। ছয় ওভার বাউন্ডারিতে ৩৭ বলে ৬০ রান। তারপরও পাকিস্তানের বিপক্ষে হোয়াইট ওয়াশ এড়াতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। রোববার মুলতানে অনুষ্ঠিত দিবারাত্রি অনুষ্ঠিত ম্যাচে ডিএল মেথডে পাকিস্তান ৫৩ রানে জয় পেয়েছে। পাকিস্তানের করা ৯ উইকেটে ২৬৯ রানের জবাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২১৬ রানে অল আউট হয়। এর ফলে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ পাকিস্তান ৩-০ ব্যবধানে জয় পেলো।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়ের সব সম্ভাবনা কেড়ে নেন শাদাব খান। ব্যাট হাতে যেমন বল হাতেও তেমন দ্যুতি ছড়িয়েছেন তিনি। তার ফলে নিকোলাস পুরান ও আকিল হোসেনের লড়াই ম্লাস হয়েছে। তাদের মুখে হাসি ফোটাতে পারেননি।
শাদাব খান কী করেছেন। ব্যাট হাতে পাকিস্তান যখন বিপদে তখন উদ্ধারকারীর ভূমিকায় নেমেছেন। ব্যাটকে চওড়া বানিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের শাসন করেছেন। স্কোরবোর্ডে রানকে সদৃদ্ধ করেছেন, আর সতীর্থদের মুখের হাসি চওড়া করেছেন। ১১৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে যখন দল ধুঁকছে তখন শাদাব ক্রিজে আসেন। প্রথম ম্যাচের ম্যাচসেরা খুশদিল শাহকে নিয়ে অসাধারণ এক জুটি গড়ে তোলেন। ৮৪ রানের জুটি গড়েন তারা। খুশদিল তাকে শুধু সঙ্গ দিয়ে গেছেন। আর শাদাব ঝড় তুলেছেন।৭৮ বলে করেছেন ৮৬ রান। চার বাউন্ডারি ও তিন ওভার বাউন্ডারিতে সাজানো ছিল তার ইনিংসটি। অন্যদিতে খুশদিল করেছেন ৪৩ বলে ৩৪ রান।
টস জয়ের পর ব্যাটিংয়ে নামা পাকিস্তানের শুরুটা অবশ্য স্বস্তির ছিল। ৮৫ রানের জুটি গড়েছিলেন দুই ওপেনার ফখর জামান ও ইমাম উল হক। ৬৮ বলে ইমাম করেছিলেন ৬২ রান। আর ফখর জামানের সংগ্রহ ছিল ৪৮ বলে ৩৫। পুরানের বলে ফখর আউট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পাকিস্তানের ওপর দিয়ে একটা ঝড় বয়ে যায়। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা অধিনায়ক বাবর আজম এদিন সমর্থকদের হতাশ করেছেন। দলের অর্জনে কোনো অবদান রাখতে পারেননি। অন্যদিকে সমর্থকদের ব্যাটিং সৌন্দর্য দেখা থেকে বঞ্চিত করেছেন। মাত্র ৩ বলে এক রান কওে ওয়ালসের বলে এলবিডব্লিউ হন তিনি। এরপর মোহাম্মদ রিজওয়ান (১১) ও মোহাম্মদ হারিস (০) আউট হয়ে পাকিস্তান সত্যিকারভাবেই বিপদে পড়ে যায়। সে অবস্থা থেকে দলের হাল ধরেন শাদাব খান। তার ঝড়ো ব্যাটিংয়ে পাকিস্তান লড়াকু ইনিংস জমা করতে সমর্থ হয়।
৪৮ ওভারে ২৭০ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের শুরুটা ভালো ছিল না। চতুর্থ ওভারে ব্যক্তিগত মাত্র ৫ রানে কাইল মায়ার্স আউট হয়ে যান। তারপরও পাকিস্তানের লক্ষ্যকে সামনে রেখে তারা এগিয়ে চলেছিল। ৯৩ রানে পঞ্চম উইকেট হারালেও পাকিস্তান থেকে খুব একটা পিছিয়ে ছিল না। তারওপর আকিল হোসেন এসে একটা আশার আলোও জ্বালিয়েছিলেন। একের পর এক বলকে সীমানার বাইরে পাঠিয়ে দলের সংগ্রহকে তড়তড় করে এগিয়ে নিচ্ছিলেন। কেমো পল তাকে দারুণ সহচর্য দিয়ে চলেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আকিল হোসেন লড়াইটা চালিয়ে যেতে পারলেন না। শাদাব খান তাকে থামিয়ে দিলেন। একে একে শাবাদ চার উইকেট শিকার করেন। স্বাভাবিকভাবেই ম্যাচসেরা হয়েছেন তিনি। হাসান আলী ও মোহাম্মদ নাওয়াজ দুটো করে উইকেট নিয়েছেন।