logo
আপডেট : ১৩ জুন, ২০২২ ১০:৪৯
‘মৃত’ সেই দিঘি এখন নান্দনিক ওয়াকওয়ে
কামরুল ইসলাম মাহি, সিলেট


‘মৃত’ সেই দিঘি এখন নান্দনিক ওয়াকওয়ে

‘ধোপাদিঘি এরিয়া ফর বেটার এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড বিউটিফিকেশন’ প্রকল্পের আওতায় ভারত সরকারের অর্থায়নে প্রায় ২১ কোটি টাকা ব্যয়ে চারপাশে করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে

সিলেট শহরকে বলা হয় দিঘির শহর। এই শহরের অনেক পাড়া মহল্লার নামও রয়েছে দিঘি নামে। এর মধ্যে সাগরদিঘির পাড়, লালদিঘির পাড়, রামেরদিঘির পাড়, চারাদিঘির পাড় অন্যতম।

দিঘির পরিচয়ে এলাকাগুলো আছে কিন্তু নেই দিঘি। এরকমই একটি দিঘি বন্দরবাজার এলাকার ধোপাদিঘি। দখলে ও দূষণে বিলীন হয়ে যাচ্ছিল এটি। প্রায় হারিয়ে যেতে বসা এই দিঘি এখন নান্দনিক রূপের ওয়াকওয়ে।

সিলেট সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে ‘ধোপাদিঘি এরিয়া ফর বেটার এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড বিউটিফিকেশন’ প্রকল্পের আওতায় ভারত সরকারের অর্থায়নে প্রায় ২১ কোটি টাকা ব্যয়ে দিঘি উদ্ধার করে চারপাশে করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে। আলোকসজ্জার পাশাপাশি নির্মাণ করা হয়েছে দুটি ঘাট।

১১ জুন এই নান্দনিক ওয়াকওয়ের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন। উদ্বোধনের পর সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে দিঘিটি। বিকেল থেকে এখানে ঘুরতে আসেন নানা শ্রেণির মানুষ।

ঘুরতে আসা নগরীর ৯ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি শুভ্র জ্যোতি সরকার বলেন, ‘আমাদের এই শহরের চারপাশ দখল হয়ে যাওয়ায় এখানে যে এতবড় একটা দিঘি ছিল তা দেখাই যেত না। ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে এটা হারিয়ে যাচ্ছিল।

এই দিঘি উদ্ধার করে ওয়াকওয়ে বানানোয় এখন নগরবাসী হাঁটার ও ঘোরার সুযোগ হল। এজন্য শেখ হাসিনা সরকারকে ধন্যবাদ জানাই।’

সিটি করপোরেশন জানায়, ২০১৮ সালের ২৩ এপ্রিল সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল শাখা এই প্রকল্পের পরিকল্পনা করে। আগে দিঘির জায়গা ছিল তিন দশমিক ৪১ একর। চারপাশের দখল হওয়া জায়গা উদ্ধারের পর এখন এর সীমানা হয়েছে তিন দশমিক ৭৫ একর।

জায়গা উদ্ধারের পর ২০২০ সালের প্রথম দিকে শুরু হয় ধোপাদিঘির সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ। দিঘির পাড়ে বসার জন্য বেঞ্চ রাখা হয়েছে, পাবলিক টয়লেট বানানো হয়েছে। এখন পুকুরের নোংরা পানি পরিষ্কার করা হচ্ছে। নৈসর্গবিদদের পরামর্শে গাছ লাগানো হবে।

সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান জানান, দুই মন্ত্রী ও হাইকমিশনার শনিবার ধোপাদিঘি ওয়াকওয়ের পাশাপাশি আরো তিনটি প্রকল্প উদ্বোধন করেছেন। ওই দুই প্রকল্প হল ছয় তলাবিশিষ্ট চারাদিঘির পাড় স্কুল ও কাস্টঘর সুইপার কলোনি। তিনটি প্রকল্পই ভারতীয় সরকারের অর্থায়নে হয়েছে।

এ বিষয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী জানান, ধোপাদিঘি রক্ষা করে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতেই মূলত সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্প হাতে নেয়া। দিঘি খনন, ওয়াকওয়ে নির্মাণ, পাড় বাঁধানো ও ঘাট তৈরি করা ছিল এ প্রকল্পের মূল কাজ।

‘দিঘি এলাকা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। এর প্রবেশ পথ থাকবে সিটি করপোরেশনের মসজিদের উত্তর পাশে। রাতে আলোকসজ্জা থাকবে। ফলে নগরবাসী যেকোনো সময় এখানে এসে হাঁটাচলা করতে পারবেন’, যোগ করেন মেয়র আরিফুল।