উয়েফা নেশনস লিগের এ-থ্রিতে তিন পরাশক্তি জার্মানি, ইতালি ও ইংল্যান্ডের পাশাপাশি রয়েছে হাঙ্গেরি। কিন্তু অপেক্ষাকৃত দুর্বল দলটির দাপটে তিন পরাশক্তির অবস্থা নাজুক। মঙ্গলবার রাতে তো ইংল্যান্ডকে নিয়ে ছেলেখেলা করেছে হাঙ্গেরি। ৪-০ গোলে ইংল্যান্ডকে পর্যূদস্ত করেছে। আর অন্য ম্যাচে ইতালিকে নিয়ে জার্মানি গোল উৎসবে মেতেছিল। ২০১৪ সালের ব্রাজিল-জার্মানি সেমিফাইনাল ম্যাচের স্মৃতি ফিরিয়ে এনেছিল তারা। ৫-২ গোলে জয় পেয়েছে।
চার ম্যাচ থেকে দুই জয় ও এক ড্র নিয়ে গ্রুপ বর্তমানে ৭ পয়েন্ট নিয়ে হাঙ্গেরি পয়েন্ট টেবিলে নেতৃত্ব দিচ্ছে। প্রথম জয়ে চার ম্যাচ থেকে ৬ পয়েন্ট নিয়ে তাদের অনুসরণ করে চলেছে জার্মানি। আর ৫ পয়েন্ট নিয়ে ইতালি রয়েছে তৃতীয় স্থানে। সবার নিচে ইংল্যান্ড। তাদের পয়েন্ট দুই।
জার্মানি আগের তিন ম্যাচের তিনটিতেই ড্র করেছিল। ইতালিতে অনুষ্ঠিত প্রথম লেগের ম্যাচ ১-১ গোলে অমীমাংসিত থাকলেও এ ম্যাচে ইতালি জার্মানির আক্রমণাত্মক খেলার শিকার হয়েছে। নতুন কোচ হ্যানসি ফ্লিকের অধীনে এটাই জার্মানির সেরা পারফরম্যান্স। টিমো ওয়ার্নার জোড়া গোল করেছেন। জোসুয়া কিমিচ, থমাস মুলার ও ইকে গুনডোগান একটি করে গোল করেছেন। ইতালির হয়ে ব্যবধান কমান টিনএজার উইলফ্রেড ও আলেসান্দ্রো বাস্তোনি।
নেশনস লিগে এটা জার্মানির প্রথম জয়। আর ফ্লিকের অধীনেও প্রথম। এর ফলে ফ্লিকের অধীনে টানা ১৩ ম্যাচ অপরাজিত থাকার কীর্তি গড়লো। শুধু তাই নয়, কোনো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে এটা প্রথম জয়। নেশনস লিগে হাঙ্গেরির সঙ্গে জার্মানি ১-১ গোলে ড্র করেছিল। ইংল্যান্ড ও ইতালির বিরুদ্ধে ম্যাচে একই গোলে পয়েন্ট ভাগাভাগি করেছিল দেশটি।
গত মার্চে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচের ফলও একই ছিল। তবে মঙ্গলবার রাতে ইতালির বিপক্ষে সব সীমাবদ্ধতা ছেড়ে খোলস ছেড়ে বের হয়ে আসে জার্মানি। দলটির অধিনায়ক ম্যানুয়েল নয়্যার ম্যাচের আগে তেমন ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন। আগের ম্যাচগুলোয় গোল খরায় ভুগতে হওয়ায় ম্যাচের শুরু থেকেই গোলের জন্য ঝাঁপানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সতীর্থদের নিয়ে নয়্যার সে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছেন। তার ফলও পেয়েছেন শুরুতেই। ম্যাচের বয়স ১০ মিনিট হতে না হতেই গোলের দেখা পায় জার্মানি। জোসুয়া কিমিচ গোল করে দলকে এগিয়ে নেন। শুরুতেই গোল পেয়ে জার্মানি আরো উজ্জ্বীবিত হয়ে ওঠে। একের পর এক আক্রমণ রচনা করতে থাকে তারা। বিরতির আগে তারা আবারো গোলের দেখা পায়। পেনাল্টি থেকে গোল করেন ইকে গুনডোগান। এর আগে অবশ্য আরো দুটো গোলের সুযোগ তৈরি করেছিল জার্মানি। কিন্তু সুযোগ দুটো কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন জোনাস হফম্যান ও ওয়ের্নার।
বিরতির পর ইতালি কোচ রবার্তো মানচিনি দুটো পরিবর্তন আনেন। এতে করে ইতালি বেশ আধিপত্য শুরু করে। তবে গোলের নেশায় উম্মত্ত হয়ে থাকা জার্মানি খেলার ধারার বিপরীতে গোল পেয়ে যায়। শুধু তাই নয়, গোলের পর গোল করতে থাকে। মাত্র ১৮ মিনিটের মধ্যে তার তিনবার ইতালির জালে বল ফেলে। ফলে ৫-০ গোলে এগিয়ে যায় তারা। ফিরে আসে ২০১৪ সালে ব্রাজিলের বিপক্ষে সাত গোল করার স্মৃতি। শেষ পর্যন্ত জার্মানি আর গোল করতে পারেনি। তবে দুই গোল করে ইতালি ব্যবধান কমায়।